ঢাকা ১১:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

এসএমই খাতে ঋণ পাওয়া সহজ করতে হবে

  • আপডেট সময় : ০২:১৫:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১
  • ৭৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর সিএমএসএমই খাতের ৯৫ শতাংশ কারখানায় উৎপাদন বা বিক্রি কমেছিল। পরবর্তীতে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও আগের পর্যায়ে আসেনি। পরিস্থিতির উন্নয়নে মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের উদ্যোক্তাদের সহজে প্রণোদনার ঋণ পাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার জন্য বিদ্যমান নীতিমালা সহজ করতে হবে। গতকাল রোববার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অর্থায়নে পরিচালিত প্রিজম প্রকল্পের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এমন অভিমত উঠে আসে। ওয়েবিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আলোকে আমদানিকারক দেশ থেকে রপ্তানিকারক দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। শিল্পোন্নত দেশ গড়তে এসএমই খাত ভূমিকা রাখছে। করোনায় এ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এরই মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান ঘুরে দাঁড়িয়েছে। করোনা মহামারীর মধ্যেও বিসিক শিল্পনগরীতে উৎপাদন বেড়েছে। এ খাতকে আরও এগিয়ে নিতে প্রণোদনার আওতায় ঋণ দেওয়াসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইইউর প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের অনেক উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়াটা ইতিবাচক। “সিএমএসএমই খাতের ওপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব ও পুনরুদ্ধার: বিসিক শিল্প নগরী থেকে প্রাপ্ত তথ্য“ শীর্ষক ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ও প্রিজম প্রকল্পের সিনিয়র পরামর্শক ড. মনজুর হোসেন। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রিজম কর্মসূচির টিম লিডার আলী সাবেত। সমাপনি বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী। এসএমই খাতের প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা এতে অংশ নেন। প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়া সহজ করতে হবে। আর এ জন্য ট্রেড লাইসেন্স বা অন্যান্য ঝামেলায় না গিয়ে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও এনআইডির বিপরীতে ঋণ দিতে হবে। একই সঙ্গে অনলাইনে কীভাবে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে। এ খাতের জন্য ২ হাজার কোটি টাকার একটি ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম করলেও এখনও তা কার্যকর না হওয়াটা দু:খজনক। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেঞ্জি তেরিং বলেন, করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ইইউর আর্থিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে। বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) চেয়ারম্যান ও ডিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, স্বল্প মেয়াদি চলতি মূলধণ ঋণ না দিয়ে মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ দিতে হবে। কেননা খেলাপি হলে আর কোনো সুবিধা পাবেন না এরকম ভীতি থেকে এসএমই খাতের অনেক উদ্যোক্তা ঋণ নিতে আগ্রহ দেখান না। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, প্রণোদনার ঋণ মাঝারি ও বড়রা পাচ্ছেন। ছোটরা সেভাবে পাচ্ছেন না। এ সমস্যার সমাধানে সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য একটা ডেটাবেজ খুবই জরুরী। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, বড় শিল্পের সঙ্গে ক্ষুদ্র খাতের সমন্বয় করা গেলে রপ্তানি অনেক বাড়বে। নতুন করে অনেক কর্মসংস্থান হবে। নতুন পণ্য, নতুন দেশ, নতুন সম্ভাবনা এটিকে মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। রপ্তানি বহুমুখী করণের ওপর জোর দিতে হবে। করোনাকে সম্ভাবনা হিসেবে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বিসিকের চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান এনডিসি বলেন, ব্যাংকগুলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের এখনও ঋণ দিতে সেভাবে আগ্রহ দেখায় না। বিসিক তাদের ঋণ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে নতুন করে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার তহবিল চাইবে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সেবা নিতে এখনও ঘুরতে-ঘুরতে শেষ হয়ে যেতে হয়। এ অবস্থার উন্নয়নে আগামী ১৩ তারিখে ওয়ানস্টপ সেবা চালু করা হচ্ছে। এছাড়া ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য একটি অনলাইন মার্কেট প্লেস উন্নয়নের কাজ চলছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম ইয়াহিয়া বলেন, বিসিকের অনেক শিল্পনগরীতে প্রয়োজনীয় বিদ্যুত, গ্যাস বা পানির লাইন না পাওয়ায় প্লট অব্যবহারিত রয়েছে। এসব অবস্থার উন্নতি হলে আর এ খাতের সমস্যা থাকবে না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এসএমই খাতে ঋণ পাওয়া সহজ করতে হবে

আপডেট সময় : ০২:১৫:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর সিএমএসএমই খাতের ৯৫ শতাংশ কারখানায় উৎপাদন বা বিক্রি কমেছিল। পরবর্তীতে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও আগের পর্যায়ে আসেনি। পরিস্থিতির উন্নয়নে মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের উদ্যোক্তাদের সহজে প্রণোদনার ঋণ পাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার জন্য বিদ্যমান নীতিমালা সহজ করতে হবে। গতকাল রোববার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অর্থায়নে পরিচালিত প্রিজম প্রকল্পের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এমন অভিমত উঠে আসে। ওয়েবিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আলোকে আমদানিকারক দেশ থেকে রপ্তানিকারক দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। শিল্পোন্নত দেশ গড়তে এসএমই খাত ভূমিকা রাখছে। করোনায় এ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এরই মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান ঘুরে দাঁড়িয়েছে। করোনা মহামারীর মধ্যেও বিসিক শিল্পনগরীতে উৎপাদন বেড়েছে। এ খাতকে আরও এগিয়ে নিতে প্রণোদনার আওতায় ঋণ দেওয়াসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইইউর প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের অনেক উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়াটা ইতিবাচক। “সিএমএসএমই খাতের ওপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব ও পুনরুদ্ধার: বিসিক শিল্প নগরী থেকে প্রাপ্ত তথ্য“ শীর্ষক ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ও প্রিজম প্রকল্পের সিনিয়র পরামর্শক ড. মনজুর হোসেন। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রিজম কর্মসূচির টিম লিডার আলী সাবেত। সমাপনি বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী। এসএমই খাতের প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা এতে অংশ নেন। প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়া সহজ করতে হবে। আর এ জন্য ট্রেড লাইসেন্স বা অন্যান্য ঝামেলায় না গিয়ে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও এনআইডির বিপরীতে ঋণ দিতে হবে। একই সঙ্গে অনলাইনে কীভাবে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে। এ খাতের জন্য ২ হাজার কোটি টাকার একটি ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম করলেও এখনও তা কার্যকর না হওয়াটা দু:খজনক। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেঞ্জি তেরিং বলেন, করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ইইউর আর্থিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে। বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) চেয়ারম্যান ও ডিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, স্বল্প মেয়াদি চলতি মূলধণ ঋণ না দিয়ে মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ দিতে হবে। কেননা খেলাপি হলে আর কোনো সুবিধা পাবেন না এরকম ভীতি থেকে এসএমই খাতের অনেক উদ্যোক্তা ঋণ নিতে আগ্রহ দেখান না। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, প্রণোদনার ঋণ মাঝারি ও বড়রা পাচ্ছেন। ছোটরা সেভাবে পাচ্ছেন না। এ সমস্যার সমাধানে সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য একটা ডেটাবেজ খুবই জরুরী। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, বড় শিল্পের সঙ্গে ক্ষুদ্র খাতের সমন্বয় করা গেলে রপ্তানি অনেক বাড়বে। নতুন করে অনেক কর্মসংস্থান হবে। নতুন পণ্য, নতুন দেশ, নতুন সম্ভাবনা এটিকে মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। রপ্তানি বহুমুখী করণের ওপর জোর দিতে হবে। করোনাকে সম্ভাবনা হিসেবে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বিসিকের চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান এনডিসি বলেন, ব্যাংকগুলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের এখনও ঋণ দিতে সেভাবে আগ্রহ দেখায় না। বিসিক তাদের ঋণ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে নতুন করে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার তহবিল চাইবে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের সেবা নিতে এখনও ঘুরতে-ঘুরতে শেষ হয়ে যেতে হয়। এ অবস্থার উন্নয়নে আগামী ১৩ তারিখে ওয়ানস্টপ সেবা চালু করা হচ্ছে। এছাড়া ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য একটি অনলাইন মার্কেট প্লেস উন্নয়নের কাজ চলছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম ইয়াহিয়া বলেন, বিসিকের অনেক শিল্পনগরীতে প্রয়োজনীয় বিদ্যুত, গ্যাস বা পানির লাইন না পাওয়ায় প্লট অব্যবহারিত রয়েছে। এসব অবস্থার উন্নতি হলে আর এ খাতের সমস্যা থাকবে না।