ঢাকা ০৮:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

জুন মাস নিয়ে শঙ্কা, জনসমাগম এড়ানোর ওপর জোর দিয়ে বিধিনিষেধ আরও বাড়ল

  • আপডেট সময় : ০১:২৫:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১
  • ১২৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার আবার বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে জনসমাগম এড়ানোর ওপর জোর দিয়ে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও দশ দিন বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায়’ পূর্বের সকল বিধিনিষেধের মেয়াদ ৬ জুন মধ্যরাত থেকে ১৬ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। এই বিধিনিষেধের মধ্যে সব ধরনের পর্যটনস্থল, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাগম হয় এরকম কোনো সামাজিক (বিবাহোত্তর সংবর্ধনা, ওয়ালিমা, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি), রাজনৈতিক বা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি ও সরবরাহ (টেইকঅ্যাওয়ে/অনলাইন) করতে পারবে। পাশাপাশি অর্ধেক আসনে বসে খাওয়ার সুযোগ থাকবে। সাম্প্রতিক সময়ে সংক্রমণের হার বিবেচনায় যেসব জেলা ‘উচ্চ ঝুঁকিতে’ আছে, সেখানে জেলা প্রশাসকরা সংশ্লিষ্ট কারিগরি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে নিজ নিজ এলাকায় সংক্রমণ প্রতিরোধে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন। আন্তঃজেলা বাসসহ সব ধরনের গণপরিবহণ অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। তবে যাত্রীসহ সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
জুন মাস নিয়ে শঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদফতরের : করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় চলতি জুন মাস গত মাসের মতো স্বস্তিকর যাবে না বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গতকাল রোববার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভার্চুয়াল বুলেটিনে এ শঙ্কার কথা বলেন অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন। খুলনা, রাজশাহী, যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে জানিয়ে অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, ‘যে কারণে একটি মেডিক্যাল টিম সেন্ট্রাল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থান করছে। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইতোমধ্যে বলা হয়েছে, জরুরি রোগী ছাড়া যেন কাউকে ভর্তি নেওয়া না হয়। প্রয়োজনে পুরো হাসপাতাল করোনা সেবায় ব্যবহার করা হবে। প্রান্তিক অন্য এলাকাগুলোতে তা-ই বলা হয়েছে।’
গত এক সপ্তাহে দেশে সংক্রমণের পজিটিভ রেট বেড়ে গেছে, মৃত্যু বাড়ছে ধীরে ধীরে। গতকাল ৫ জুন ৪৩ জন মারা গেছেন এবং তাদের বেশিরভাগই রাজশাহী এবং তার আশেপাশের প্রান্তিক এলাকার- বলেন অধ্যাপক রোবেদ আমিন।
‘গত এক সপ্তাহে আমাদের পজিটিভ রেট বেড়ে গেছে। যদিও দেশে সংক্রমণের হার প্রায় ছয় থেকে সাত শতাংশে নেমে এসেছিল। কিন্তু সেটা ক্রমাগত বাড়তে শুরু করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ১১ শতাংশের বেশি।’
যদিও ৯২ ভাগ মানুষ সুস্থ হয়ে যাচ্ছে, সেজন্য আমরা আনন্দিত বলে জানালেও কিন্তু মৃত্যুর হারও বেড়েছে বলে জানান তিনি। ‘গত ৩০ মে থেকে সংক্রমণের হার উঠানামা করছে। তাহলে আমরা ওই পর্যায়ে নেই যেখানে বলতে পারি আমাদের ট্রান্সমিশন (সংক্রমণ) স্টেবল (স্থিতিশীল); এখন পর্যন্ত আমাদের ট্রান্সমিশন আনস্টেবল হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত যে চিত্র দেখতে পাই, এপ্রিলের ভয়াবহতা হয়তো আমরা ট্যাকেল করতে পেরেছি। কিন্তু জুন মাস যখন শুরু হয়েছে, মাত্র ছয় দিন। এর মধ্যে আমরা আট হাজার ৭৭৪ জন রোগী পেয়ে গেছি। তাহলে এই মাসটি গত মাসের মতো স্বস্তিকর যাবে বলে মনে হচ্ছে না- বলেন অধ্যাপক রোবেদ আমিন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জুন মাস নিয়ে শঙ্কা, জনসমাগম এড়ানোর ওপর জোর দিয়ে বিধিনিষেধ আরও বাড়ল

আপডেট সময় : ০১:২৫:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার আবার বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে জনসমাগম এড়ানোর ওপর জোর দিয়ে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও দশ দিন বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায়’ পূর্বের সকল বিধিনিষেধের মেয়াদ ৬ জুন মধ্যরাত থেকে ১৬ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। এই বিধিনিষেধের মধ্যে সব ধরনের পর্যটনস্থল, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাগম হয় এরকম কোনো সামাজিক (বিবাহোত্তর সংবর্ধনা, ওয়ালিমা, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি), রাজনৈতিক বা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি ও সরবরাহ (টেইকঅ্যাওয়ে/অনলাইন) করতে পারবে। পাশাপাশি অর্ধেক আসনে বসে খাওয়ার সুযোগ থাকবে। সাম্প্রতিক সময়ে সংক্রমণের হার বিবেচনায় যেসব জেলা ‘উচ্চ ঝুঁকিতে’ আছে, সেখানে জেলা প্রশাসকরা সংশ্লিষ্ট কারিগরি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে নিজ নিজ এলাকায় সংক্রমণ প্রতিরোধে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন। আন্তঃজেলা বাসসহ সব ধরনের গণপরিবহণ অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। তবে যাত্রীসহ সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
জুন মাস নিয়ে শঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদফতরের : করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় চলতি জুন মাস গত মাসের মতো স্বস্তিকর যাবে না বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
গতকাল রোববার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভার্চুয়াল বুলেটিনে এ শঙ্কার কথা বলেন অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন। খুলনা, রাজশাহী, যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে জানিয়ে অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, ‘যে কারণে একটি মেডিক্যাল টিম সেন্ট্রাল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থান করছে। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইতোমধ্যে বলা হয়েছে, জরুরি রোগী ছাড়া যেন কাউকে ভর্তি নেওয়া না হয়। প্রয়োজনে পুরো হাসপাতাল করোনা সেবায় ব্যবহার করা হবে। প্রান্তিক অন্য এলাকাগুলোতে তা-ই বলা হয়েছে।’
গত এক সপ্তাহে দেশে সংক্রমণের পজিটিভ রেট বেড়ে গেছে, মৃত্যু বাড়ছে ধীরে ধীরে। গতকাল ৫ জুন ৪৩ জন মারা গেছেন এবং তাদের বেশিরভাগই রাজশাহী এবং তার আশেপাশের প্রান্তিক এলাকার- বলেন অধ্যাপক রোবেদ আমিন।
‘গত এক সপ্তাহে আমাদের পজিটিভ রেট বেড়ে গেছে। যদিও দেশে সংক্রমণের হার প্রায় ছয় থেকে সাত শতাংশে নেমে এসেছিল। কিন্তু সেটা ক্রমাগত বাড়তে শুরু করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ১১ শতাংশের বেশি।’
যদিও ৯২ ভাগ মানুষ সুস্থ হয়ে যাচ্ছে, সেজন্য আমরা আনন্দিত বলে জানালেও কিন্তু মৃত্যুর হারও বেড়েছে বলে জানান তিনি। ‘গত ৩০ মে থেকে সংক্রমণের হার উঠানামা করছে। তাহলে আমরা ওই পর্যায়ে নেই যেখানে বলতে পারি আমাদের ট্রান্সমিশন (সংক্রমণ) স্টেবল (স্থিতিশীল); এখন পর্যন্ত আমাদের ট্রান্সমিশন আনস্টেবল হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত যে চিত্র দেখতে পাই, এপ্রিলের ভয়াবহতা হয়তো আমরা ট্যাকেল করতে পেরেছি। কিন্তু জুন মাস যখন শুরু হয়েছে, মাত্র ছয় দিন। এর মধ্যে আমরা আট হাজার ৭৭৪ জন রোগী পেয়ে গেছি। তাহলে এই মাসটি গত মাসের মতো স্বস্তিকর যাবে বলে মনে হচ্ছে না- বলেন অধ্যাপক রোবেদ আমিন।