ঢাকা ০৫:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

জাল সনদ ভুয়া ওয়েবসাইটে সঠিক দেখিয়ে জাহাজে চাকরি

  • আপডেট সময় : ০২:০০:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১২৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : শুধু সনদ জাল করা নয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ভুয়া ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখানে আপলোডের মাধ্যমে শতাধিক ব্যক্তিকে সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরি দেওয়ার সঙ্গে জড়িত একটি জালিয়াত চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সিরাজুল আজাদ (৩৫), মঞ্জুরুল আজাদ (৩২), তারিকুল আজাদ (৩০), মো. রাশেদুল ইসলাম (৩০) ও মোহাম্মদ সোহেল রানা (২৯)। গত রোববার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার রাজধানীর উত্তরখান এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাইবার পুলিশ সেন্টারের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক কামরুল আহসান অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ‘প্রতারণার’ কাজে ব্যবহৃত দুটি ল্যাপটপ, দুটি এইচডিডি হার্ডডিস্ক, দুটি এসএসডি হার্ডডিস্ক, একটি পেনড্রাইভ ও ছয়টি মোবাইল ফোনসহ বেশকিছু ডিজিটাল আলামত জব্দ করা হয়। সিআইডি কর্মকর্তা কামরুল জানান, সমুদ্রগামী জাহাজে কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের মধ্য দিয়ে বেতন বাড়ানো ও পেশাজীবনে পরের ধাপে যেতে ‘কম্পিটেন্স’ ও ‘প্রফিসিয়েন্সি’ সনদের প্রয়োজন হয়। গ্রেপ্তাররা পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকায় বিভিন্ন ভুয়া সনদ তৈরি করে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের যোগ্যতা সনদ পরীক্ষা নেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনাসহ তা ইস্যুর একমাত্র প্রতিষ্ঠান নৌপরিবহন অধিদপ্তর। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি সার্টিফিকেট অব প্রফিসিয়েন্সি (সিওপি) ও সার্টিফিকেট অব কম্পিটেন্স (সিএসি) দিয়ে থাকে, যা অধিদপ্তরের নিজস্ব ওয়েবসাইটে সবসময় আপলোড থাকে।
“তবে সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) নৌপরিবহন অধিদপ্তর থেকে অভিযোগ পায়, এক প্রতারক চক্র অধিদপ্তরের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে যোগ্যতা সনদ যাচাইয়ের কথা বলে প্রতারণা করে আসছে। ফলে বহির্বিশ্বে নৌবাণিজ্য খাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।”
অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক কামরুল বলেন, “গ্রেপ্তার সোহেল রানা একজন দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার ও এই চক্রের হোতা এবং ওয়েবসাইটটির ডিজাইনার। এর আগেও এই প্রতারক বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে মিল রেখে ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণা করেছিলেন বলে স্বীকার করেছে।”
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা একটি ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের অনুকরণে আরেকটি ওয়েবসাইট তৈরি করার কথা স্বীকার করেন। সেটির মাধ্যমে নকল সনদ সঠিক বলে যাচাই দেখিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক নাবিককে বিভিন্ন জাহাজ ও শিপিং কোম্পানিতে চাকরি দিয়েছে। কামরুল আহসান বলেন, গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরির কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটারে সংশ্লিষ্ট ডেটাবেইজ সার্ভারে ইন্সটল অবস্থায় পাওয়া যায়, যেখানে কপ নম্বর সম্বলিত ১২০টিরও বেশি সনদের তথ্য বিভিন্ন সময়ে আপলোড করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে গত রোববার মতিঝিল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জাল সনদ ভুয়া ওয়েবসাইটে সঠিক দেখিয়ে জাহাজে চাকরি

আপডেট সময় : ০২:০০:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : শুধু সনদ জাল করা নয়, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ভুয়া ওয়েবসাইট বানিয়ে সেখানে আপলোডের মাধ্যমে শতাধিক ব্যক্তিকে সমুদ্রগামী জাহাজে চাকরি দেওয়ার সঙ্গে জড়িত একটি জালিয়াত চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সিরাজুল আজাদ (৩৫), মঞ্জুরুল আজাদ (৩২), তারিকুল আজাদ (৩০), মো. রাশেদুল ইসলাম (৩০) ও মোহাম্মদ সোহেল রানা (২৯)। গত রোববার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার রাজধানীর উত্তরখান এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাইবার পুলিশ সেন্টারের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক কামরুল আহসান অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ‘প্রতারণার’ কাজে ব্যবহৃত দুটি ল্যাপটপ, দুটি এইচডিডি হার্ডডিস্ক, দুটি এসএসডি হার্ডডিস্ক, একটি পেনড্রাইভ ও ছয়টি মোবাইল ফোনসহ বেশকিছু ডিজিটাল আলামত জব্দ করা হয়। সিআইডি কর্মকর্তা কামরুল জানান, সমুদ্রগামী জাহাজে কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের মধ্য দিয়ে বেতন বাড়ানো ও পেশাজীবনে পরের ধাপে যেতে ‘কম্পিটেন্স’ ও ‘প্রফিসিয়েন্সি’ সনদের প্রয়োজন হয়। গ্রেপ্তাররা পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকায় বিভিন্ন ভুয়া সনদ তৈরি করে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের যোগ্যতা সনদ পরীক্ষা নেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনাসহ তা ইস্যুর একমাত্র প্রতিষ্ঠান নৌপরিবহন অধিদপ্তর। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি সার্টিফিকেট অব প্রফিসিয়েন্সি (সিওপি) ও সার্টিফিকেট অব কম্পিটেন্স (সিএসি) দিয়ে থাকে, যা অধিদপ্তরের নিজস্ব ওয়েবসাইটে সবসময় আপলোড থাকে।
“তবে সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) নৌপরিবহন অধিদপ্তর থেকে অভিযোগ পায়, এক প্রতারক চক্র অধিদপ্তরের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে যোগ্যতা সনদ যাচাইয়ের কথা বলে প্রতারণা করে আসছে। ফলে বহির্বিশ্বে নৌবাণিজ্য খাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।”
অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক কামরুল বলেন, “গ্রেপ্তার সোহেল রানা একজন দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার ও এই চক্রের হোতা এবং ওয়েবসাইটটির ডিজাইনার। এর আগেও এই প্রতারক বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে মিল রেখে ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণা করেছিলেন বলে স্বীকার করেছে।”
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা একটি ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের অনুকরণে আরেকটি ওয়েবসাইট তৈরি করার কথা স্বীকার করেন। সেটির মাধ্যমে নকল সনদ সঠিক বলে যাচাই দেখিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক নাবিককে বিভিন্ন জাহাজ ও শিপিং কোম্পানিতে চাকরি দিয়েছে। কামরুল আহসান বলেন, গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরির কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটারে সংশ্লিষ্ট ডেটাবেইজ সার্ভারে ইন্সটল অবস্থায় পাওয়া যায়, যেখানে কপ নম্বর সম্বলিত ১২০টিরও বেশি সনদের তথ্য বিভিন্ন সময়ে আপলোড করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে গত রোববার মতিঝিল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।