ঢাকা ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

১০ টাকায় চাল খাওয়ার বদলে মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে: ফখরুল

  • আপডেট সময় : ০১:১৪:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৭৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার আগে আওয়ামী লীগ ঘরে ঘরে চাকরি ও দশ ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর কথা বললেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সেসব পাওয়ার বদলে এখন মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে। মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সবাই এখন সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে অনেক সুন্দর সুন্দর মুখোরোচক কথা বলা হয়েছিল যে, ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানো হবে, কৃষকদের মধ্যে বিনা পয়সায় সার বিতরণ করা হবে, ঘরে ঘরে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। এসব শুনে কিছু মানুষ পরিবর্তনের আশায় নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন। পরে মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন।
প্রতারণা করায় এখন বেশিরভাগ কৃষক কৃষিকাজ ছেড়ে দিয়ে রিকশা ও ভ্যান চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন ফখরুল। বলেন, কৃষি এখন লাভজনক নয় এটা বাস্তবকথা। করোনাকালীন কৃষকদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রণোদনা কৃষক পায়নি, পেয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন। অথচ সরকার বলে বেড়ায় তাদের আমলে কৃষিখাতেও ব্যাপক উন্নয়ন ও উৎপাদন হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্তরা সবাই সরকারের লোক এমন দাবি করে ফখরুল বলেন, সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিয়েছে, এর মধ্যে কিছু নেই। এখন তারা আবার নির্বাচন কমিশন গঠনের নামে একটি সার্চ কমিটি গঠন করেছে। সেই সার্চ কমিটির প্রত্যেকে তাদের লোক, এরাই আবার নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে নাম পাঠাবেন।
ফখরুল বলেন, আসলে এরা হুদার (সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা) মতোই লোক, অনেকে বলেন এবার বেহুদার মতো হবে। স্পষ্ট করে বলছি, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসের দায়ে এদের একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, বিচার হতে হবে। এসময় সরকারের পদত্যাগও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, এই সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে। তাই নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য করা হবে। তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) স্বভাবসুলভ কথা বলেছেন, যা আমাদের কাছে অর্থহীন বলে মনে হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে যা কিছু ভালো হয়েছে তা আওয়ামী লীগের শাসনামলে হয়েছে এবং দেশের অর্জনকে ধ্বংস করেছে বিএনপি। অথচ ’৭২ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, লাখো মানুষ না খেতে পেয়ে মারা গেছে। এখন কৃষকরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। তাই স্মরণ করে দিতে চাই, আপনারা অতীতটা দেখুন এবং বর্তমানে কী হচ্ছে সেটা দেখুন। জনগণ বিচার করবে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কারা উন্নয়ন করেছে।
তিনি বলেন, পরিষ্কার করে বলতে চাই, আজ সব নাগরিকের অধিকার রক্ষায় বৈষম্যহীন যে সমাজ সেটাকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি। ডিজিটাল আইন তৈরি করেছে, কেউ কথা বলতে পারছে না। বিচারবিভাগ, আমলাতন্ত্র ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে দলীয়করণ করা হয়েছে। সরকার ও রাষ্ট্রকে এক করে ফেলেছে তারা- যোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, যারা জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাস করি- তাদের সবাইকে সরকারের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হতে হবে। কারণ এই সরকার যদি বেশিদিন থাকে তাহলে শুধু আমাদের নয়, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

১০ টাকায় চাল খাওয়ার বদলে মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে: ফখরুল

আপডেট সময় : ০১:১৪:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার আগে আওয়ামী লীগ ঘরে ঘরে চাকরি ও দশ ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর কথা বললেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সেসব পাওয়ার বদলে এখন মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে। মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সবাই এখন সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে অনেক সুন্দর সুন্দর মুখোরোচক কথা বলা হয়েছিল যে, ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানো হবে, কৃষকদের মধ্যে বিনা পয়সায় সার বিতরণ করা হবে, ঘরে ঘরে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। এসব শুনে কিছু মানুষ পরিবর্তনের আশায় নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন। পরে মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন।
প্রতারণা করায় এখন বেশিরভাগ কৃষক কৃষিকাজ ছেড়ে দিয়ে রিকশা ও ভ্যান চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন ফখরুল। বলেন, কৃষি এখন লাভজনক নয় এটা বাস্তবকথা। করোনাকালীন কৃষকদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রণোদনা কৃষক পায়নি, পেয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন। অথচ সরকার বলে বেড়ায় তাদের আমলে কৃষিখাতেও ব্যাপক উন্নয়ন ও উৎপাদন হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্তরা সবাই সরকারের লোক এমন দাবি করে ফখরুল বলেন, সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিয়েছে, এর মধ্যে কিছু নেই। এখন তারা আবার নির্বাচন কমিশন গঠনের নামে একটি সার্চ কমিটি গঠন করেছে। সেই সার্চ কমিটির প্রত্যেকে তাদের লোক, এরাই আবার নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে নাম পাঠাবেন।
ফখরুল বলেন, আসলে এরা হুদার (সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা) মতোই লোক, অনেকে বলেন এবার বেহুদার মতো হবে। স্পষ্ট করে বলছি, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসের দায়ে এদের একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, বিচার হতে হবে। এসময় সরকারের পদত্যাগও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, এই সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে। তাই নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য করা হবে। তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) স্বভাবসুলভ কথা বলেছেন, যা আমাদের কাছে অর্থহীন বলে মনে হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশে যা কিছু ভালো হয়েছে তা আওয়ামী লীগের শাসনামলে হয়েছে এবং দেশের অর্জনকে ধ্বংস করেছে বিএনপি। অথচ ’৭২ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, লাখো মানুষ না খেতে পেয়ে মারা গেছে। এখন কৃষকরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। তাই স্মরণ করে দিতে চাই, আপনারা অতীতটা দেখুন এবং বর্তমানে কী হচ্ছে সেটা দেখুন। জনগণ বিচার করবে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কারা উন্নয়ন করেছে।
তিনি বলেন, পরিষ্কার করে বলতে চাই, আজ সব নাগরিকের অধিকার রক্ষায় বৈষম্যহীন যে সমাজ সেটাকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি। ডিজিটাল আইন তৈরি করেছে, কেউ কথা বলতে পারছে না। বিচারবিভাগ, আমলাতন্ত্র ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে দলীয়করণ করা হয়েছে। সরকার ও রাষ্ট্রকে এক করে ফেলেছে তারা- যোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, যারা জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাস করি- তাদের সবাইকে সরকারের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হতে হবে। কারণ এই সরকার যদি বেশিদিন থাকে তাহলে শুধু আমাদের নয়, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে।