আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে হত্যা, নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন রোহিঙ্গারা
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি সামরিক জান্তা হটানোর চলমান লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানিয়েছে মিয়ানমারের ছায়া সরকার (ঐক্য সরকার)। একই সঙ্গে ক্ষমতায় গেলে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ও তাদের নাগরিক করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের পক্ষে নিজেদের অবস্থানের কথাও জানিয়েছে ছায়া সরকার।
গত বৃহস্পতিবার ছায়া সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। ওই বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতির কথা রয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে রক্তপাতহীন সেনা অভ্যুত্থান হয়। গত বছরের নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) অভাবনীয় বিজয় প্রত্যাখ্যান করে জান্তারা ক্ষমতা দখল করে নেয়। আটক করা হয় সু চিসহ এনএলডির কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে। এরপর থেকে জান্তাবিরোধী তুমুল বিক্ষোভে দেশটিতে ৮৪০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। নিজ দেশের মানুষের ওপর দমনপীড়ন চালানোয় জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের ওপর দেশি-বিদেশি চাপ বেড়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে জান্তাদের হটাতে এনএলডির ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতারা গঠন করেছেন জাতীয় ঐক্যের সরকার।
বিবৃতিতে ছায়া সরকার বলেছে, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের জান্তাবিরোধী চলমান লড়াইয়ে অংশ নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’ বিবৃতিতে রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এর আগে সু চির এনএলডি সরকার এ শব্দের ব্যবহার এড়িয়ে যেত। রোহিঙ্গাদের ‘রাখাইনে বসবাসকারী মুসলিম’ বলে সম্বোধন করা হতো।
১৯৮২ সালে প্রণীত নাগরিকত্ব আইনের আওতায় এত দিন বৈষম্যের শিকার হয়ে এসেছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা। ক্ষমতায় এলে বিতর্কিত এ আইন বাতিল করে মিয়ানমারে জন্ম নেওয়া কিংবা দেশটির নাগরিক হওয়ার যোগ্য সবাইকে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ছায়া সরকার। বিবৃতিতে ছায়া সরকার আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, বাংলাদেশের ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।