নিজস্ব প্রতিবেদক : জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আরও নির্ভরযোগ্য বৈজ্ঞানিক গবেষণা গ্রহণের জন্য শিক্ষাবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রয়োজনীয়তার বিষয় সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। যখনই পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে তহবিলের জন্য গবেষক এবং বিখ্যাত গবেষণা সংস্থার কাছ থেকে প্রস্তাব পাই, তখন এটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ বিবেচনা করা হয়।
গতকাল শনিবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার’ শীর্ষক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার। সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আইনুন নিশাত।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সরকার ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা’ নামে একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এছাড়া নিজস্ব সম্পদ থেকে একটি জাতীয় জলবায়ু অর্থব্যবস্থা ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় ৮০০টি প্রকল্পে সহায়তা করতে ৪৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে। দেশের জলবায়ু সহনশীলতা গড়ে তোলার জন্য ট্রাস্ট তহবিল ব্যবহার করে ১০ বছরের পরিকল্পনায় বন্যা প্রতিরক্ষা এবং ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে, যা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে। একইসঙ্গে লবণাক্ততা, খরা এবং বন্যা সহনশীল ফসলের জাত প্রবর্তনের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, গত কয়েক বছরে আমরা দেশের অফ গ্রিড এলাকায় ছয় মিলিয়নেরও বেশি সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করেছি। এর মাধ্যমে ১৮ মিলিয়ন মানুষকে সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করেছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে সারাদেশে এক কোটিরও বেশি গাছের চারা রোপণ করেছি। এছাড়া ২১ দশমিক ৮৫ শতাংশ বা ৮৯ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন হ্রাসের আরও যুগোপযোগী লক্ষ্যমাত্রাসহ গত বছর জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান আপডেট করেছি।
শাহাব উদ্দিন বলেন, সরকার এখন জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা তৈরি করছে, যা জাতীয় পর্যায়ে অভিযোজন মোকাবিলার প্রধান অবলম্বন হবে। আমরা ইতোমধ্যে মুজিব জলবায়ু পরিবর্তন সমৃদ্ধি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছি। এ পরিকল্পনায় স্থানীয়ভাবে পরিচালিত অভিযোজন, বাস্তুতন্ত্র ভিত্তিক পদ্ধতি, সবুজায়ন বৃদ্ধি এবং প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধানগুলিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।