প্রযুক্তি ডেস্ক : ডিডিওএস আক্রমণের শিকার হয়েছে ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। রাশিয়ার সঙ্গে চলতি সামরিক উত্তেজনার মধ্যেই সরকারি ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারছিলেন না দেশটির নাগরিকরা, অনলাইন সেবার উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল দেশটির দুটি ব্যাংক।
মঙ্গলবারের সাইবার হামলার খবর এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে ইউক্রেইন সরকার। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় নিজস্ব টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, সম্ভবত ডিডিওএস আক্রমণের শিকার হয়েছে তাদের ওয়েবসাইট এবং ইন্টারনেটভিত্তিক সেবাটি অনলাইনে ফিরিয়ে আনার কাজ চলছে।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জের প্রতিবেদন বলছে, ওই টুইটের চার ঘণ্টা পরেও বন্ধ ছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত ওয়েবসাইটটি। অন্যদিকে, ‘শক্তিশালী ডিডিওএস আক্রমণের’ শিকার হয়েছিল ইউক্রেইনের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক, ‘প্রিভাটব্যাংক’সহ দুটি ব্যাংক। ডিডিওএস আক্রমণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ব্যাংকগুলোর অনলাইন সেবা।
সম্প্রতি রাজনৈতিক বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ইউক্রেইন সীমান্ত থেকে সামরিক শক্তি প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। ডিডিওএস আক্রমণের ঘটনাটি ঘটলো এমন পরিস্থিতিতেই। রাশিয়ার সামরিক শক্তি প্রত্যাহারের ঘোষণায় “আশাবাদী” হলেও সতর্ক থাকার কথা বলেছে নেটো। কিন্তু পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করে তুলছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন বিপরীতমুখী কর্মকা-।
একই সময়ে ডিডিওএস আক্রমণে ব্যাংকিং সেবা থমকে গিয়েছিল দুটি ব্যাংকের। এটিএম মেশিন অফলাইনে থাকায় নগদ অর্থ তুলতে পারছিলেন না সেবাগ্রাহকরা।
ইউক্রেইন সরকারের ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনস’এর বিবৃতি বলছে, প্রিভাটব্যাংকের উপর ডিডিওএস আক্রমণের ঘটনায় বন্ধ ছিল ব্যাংকটির গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন সেবা। অনলাইনে ব্যাংকিং লেনদেন সারার ক্ষমতা হারিয়েছিল ‘অশ্চাদব্যাংক’ নামের আরেকটি ব্যাংক। ব্যাংক দুটি অনলাইন সেবা পুনঃস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানানো হয়েছে কয়েক ঘন্টা পরে দেওয়া আরেকটি বিবৃতিতে।
সাইবার হামলার পেছনের মূল হোতা কে বা কারা হতে পারে সে প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি ইউক্রেইন সরকার বা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। চলতি সামরিক উত্তেজনার মধ্যে সংশ্লিষ্টদের সন্দেহের দৃষ্টি রাশিয়ার দিকেই।
তবে, ডিডিওএস আক্রমণের ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিলেও এটি সম্ভবত রাশিয়ার আক্রমণ চেষ্টার অংশ ছিল না বলে মনে করছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
“আমরা নিশ্চিত যে এটি ডিডিওএস আক্রমণ ছিল, কিন্তু এর কোনো বড় প্রভাবের ইঙ্গিত দেখছি না আমরা। হয়তো গেল কয়েক দিনের ইতিবাচক খবরের মুখে ইউক্রেইনকে চাপে রাখতে এই কাজগুলো করা হচ্ছে।”– টুইটারে এই মন্তব্য করেছেন নেটওয়ার্কিং হার্ডওয়্যার নির্মাতা সিসকো’র পরিচালকদের একজন ম্যাথিউ ওলনে।
তবে, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, সম্ভবত এর মধ্যেই ইউক্রেইনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোতে অনুপ্রবেশ করেছে রাশিয়ার হ্যাকাররা। রাশিয়া ইউক্রেইনের উপর সামরিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিলে আরো ভয়াবহ হতো সাইবার হামলাগুলো।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে ওয়াংশিংটন পোস্ট বলছে, চাইলে ইউক্রেইনের বিদ্যুৎ, পরিবহন, অর্থনীতি এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে অচল করে দিতে পারবে রাশিয়া; যা সার্বিক সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে অথবা দেশটির নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে অভ্যন্তরীণ অবস্থা অস্থিতিশীল করার জন্য করা হতে পারে।
ডিডিওএস হামলা ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ