কক্সবাজার সংবাদদাতা : প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের বালিয়াড়িতে দিনদুপুরে ডিম দিতে আসা কাছিম দেখে অবাক হয়েছেন পর্যটকসহ অনেকে। সম্প্রতি দুপুরের রোদে কাছিমটি উঠেই ঝটপট বালিতে গর্ত খুঁড়ে ডিম দিতে বসে। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে ডিম দিয়ে ফের নিরাপদে সাগরে ফিরে যায়। সেন্টমার্টিন পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়োজিত মো. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে রাতের বেলায়ও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে কাছিম ডিম দিতে দ্বীপে উঠতে পারছিল না। অথচ রোদের তাপের মধ্যে ডিম দিতে আসার বিষয়টি সেন্টমার্টিনজুড়ে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। তিনি আরও বলেন, কাছিম সংরক্ষণ করার জন্য আমরা সব সময় খবর রাখি ডিম সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করাই আমার কাজ। দ্বীপের কোনার পাড়া সৈকতে আকস্মিক দুপুরবেলায় কাছিমটি উঠে আসতে দেখে হতবাক হই। পানি থেকে ওঠার পরই দেখি ঝটপট বালিতে গর্ত করে বসে গেছে ডিম পাড়তে। এমন অবস্থায় পরিবেশ কর্মী মো. আয়াজ উদ্দীন খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তখন কাছিমের আশেপাশে থাকা লোকজন ছবি তুলতে ভিড় জমায়। তাই লোকজনকে একটু দূরে সরিয়ে রাখা হয় যেন স্বাধীনভাবে ডিম পাড়তে কাছিমের ব্যাঘাত না ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন পর্যটকসহ সবাই মোবাইলে ছবি ভিডিও ধারণ করেন। ‘প্রায় ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট ডিম দিতে থাকে। এরপর কাছিমটি বাসস্থান সাগরে চলে যায়। মো. আব্দুল আজিজ আরও বলেন, ‘ ১২ বছর ধরে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মী হয়ে কাছিমের ডিম সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত আছি। এর আগে কখনো শুনিনি দিনের বেলায় কাছিম ডিম দিতে উঠে আসার ঘটনা। সেন্টমার্টিন সৈকত এলাকায় কাছিম উঠে আসার পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে মাছ ধরার নৌকা ও রিসোর্টের বাতি জ্বালানো বন্ধ করা হয়েছে। এ জন্য জব্দও করা হয়েছে বেশ কয়েকটি জেনারেটর। রিসোর্টগুলোতে উচ্চৈঃস্বরে গান-বাজনা ও হই-হুল্লোড় বন্ধেও প্রশাসনিক অভিযান চালানো হয়েছে। এসব কারণে হয়তো-বা দিনেও কিছুটা নির্জন পরিবেশ পেয়ে কাছিম উঠে এসেছে। তবে কুকুরের উপদ্রব কাছিমের জন্য ক্ষতিকর বলে জানা যায়। কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভের ইউএসএইডের সহায়তায় পরিচালিত কাছিম সংরক্ষণের প্রতিষ্ঠান নেকমের কর্মী আবদুল লতিফ বলেন, দিনের বেলায় দেওয়া ডিম সূর্যের আলোতে নষ্ট হয়ে যায়। তাই দিনে ডিম দিলেও এগুলো রাতের বেলায় সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে নেওয়া হয়। সেন্টমার্টিনে শনিবার পাড়া ডিমগুলো রাত পৌনে ৮টার দিকে সংগ্রহ করা হয়েছে। যার সংখ্যা ১০৮টি। সেন্টমার্টিন পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, কাছিম কেবল রাতে উঠে আসে। তবে পূর্ণিমা এবং অমাবশ্যার রাতে ওঠে না।