ঢাকা ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

প্যানেলভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের দাবি নিয়োগবঞ্চিতদের

  • আপডেট সময় : ০৯:০৩:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নিয়োগবঞ্চিতরা
নিবন্ধন পরীক্ষা বন্ধ রেখে প্যানেলভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন নিয়োগবঞ্চিতরা। এ সংক্রান্ত তিন দফা দাবিও জানান তারা।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা জেলা প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০০৫ সালে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এটিআরসিএ) প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষক নির্বাচন করা। ২০০৬ সালের ৩০ জুলাই গেজেট পাস করে মন্ত্রণালয়। তখন সনদের মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর। ফলে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সনদ পেলেও নিয়োগের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছিল। তারা বলেন, ২০১৩ সালের ২০ মে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সনদের মেয়াদ আজীবন করা হয়। শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া তখনও ছিল ম্যানেজিং কমিটির হাতে। নামমাত্র পরীক্ষা নিয়ে নিজেদের মনোনীত প্রার্থীকে এগিয়ে রাখা হতো। নিবন্ধন সনদ কোনো বিষয় ছিল না। মূল যোগ্যতা ছিল যোগাযোগ ও টাকা। এছাড়াও কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান বরাবর নিয়োগ পরীক্ষার নামে প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন ফি বাবদ বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ে পাশ হয় নতুন গেজেট। সেখানে সব প্রক্রিয়া শেষে এককভাবে প্রার্থী নির্বাচন করে শূন্য পদে নিয়োগের সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেয় এনটিআরসিএ। অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি বন্ধের উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সুপারিশের ক্ষমতা দেয় এনটিআরসিএর হাতে।
নিবন্ধন পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েও নিয়োগবঞ্চিতরা আরও বলেন, নতুন গেজেট দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ও নিয়োগে বঞ্চিত হয়ে ১-১২তমদের কিছু অংশ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে রিট করেন। এতে আটকে যায় ১৩তমদের নিয়োগ সুপারিশের কার্যক্রম। ১৩তমদের একদল আন্দোলন করে, আদালতের দ্বারস্থ হন এবং রিট করেন। ২০১৬ সালের গণবিজ্ঞপ্তিকে প্রথম চক্র ধরে নিয়োগের সুপারিশ কার্যক্রম চালু হয়। এদিকে ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এনটিআরসি এর বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৬৬টি রিটের নিষ্পত্তি করে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের জন্য সাত দফা নির্দেশনা দেন। তবে রায়ের ৭নং ধারায় বলা ছিল- বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করতে শিগগির পদক্ষেপ নেবে সরকার। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে এনটিআরসিএর দেওয়া ২০১৮ সালের গণবিজ্ঞপ্তিতে ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের আবেদনের সুযোগ রাখা হয় না। ফলে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হন ১-১২তমদের ৩৫ বছরের বেশি বয়সী নিবন্ধনধারীরা। এরপর আবার আদালতের রায়ে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী নিবন্ধনধারীদের তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার সুযোগ রাখা হয়। এভাবে এনটিআরসএর অব্যবস্থাপনা ও অদূরদর্শিতার কারণে নিবন্ধনধারীরা বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবি করেন তারা। এ অবস্থায় শিক্ষক সংকট দূর করতে প্যানেল ভিত্তিক নিয়োগের কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে বক্তারা বলেন, মুজিব বর্ষের উপহার স্বরূপ একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি হতে পারে এর সমাধান। সেখানে প্যানেলভিত্তিক নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করে নিয়োগবঞ্চিতদের নিয়োগের দাবি জানান তারা। এক্ষেত্রে নিবন্ধন পরীক্ষা বন্ধ রেখে প্যানেলভিত্তিক নিয়োগ এখন সময়ের যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবি বলে জানান তারা। এসময় তিন দফা দাবি তুলে ধরেন বক্তারা। দাবিগুলো হলো-
১. এক আবেদনে সব নিবন্ধনধারী চাকরি প্রত্যাশীদের কোটাবিহীন প্যানেলভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে।
২. সব নিবন্ধনধারীদের স্ব স্ব নীতিমালায় নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত নিবন্ধন পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হবে।
৩. নিবন্ধনধারীদের গণবিজ্ঞপ্তির অন্তর্ভুক্ত না করে আলাদা বদলির ব্যবস্থা করতে হবে।
মানববন্ধনে প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি আমীর আসহাব, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম আকন, আইন বিষয়ক সম্পাদক জি এম ইয়াসিন, ঢাকা বিভাগের আহ্বায়ক তানিয়া সুমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইউনূস-রুবিও ফোনালাপ, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা বাড়াতে জোর

প্যানেলভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের দাবি নিয়োগবঞ্চিতদের

আপডেট সময় : ০৯:০৩:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নিয়োগবঞ্চিতরা
নিবন্ধন পরীক্ষা বন্ধ রেখে প্যানেলভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন নিয়োগবঞ্চিতরা। এ সংক্রান্ত তিন দফা দাবিও জানান তারা।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা জেলা প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০০৫ সালে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এটিআরসিএ) প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষক নির্বাচন করা। ২০০৬ সালের ৩০ জুলাই গেজেট পাস করে মন্ত্রণালয়। তখন সনদের মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর। ফলে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সনদ পেলেও নিয়োগের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছিল। তারা বলেন, ২০১৩ সালের ২০ মে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সনদের মেয়াদ আজীবন করা হয়। শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া তখনও ছিল ম্যানেজিং কমিটির হাতে। নামমাত্র পরীক্ষা নিয়ে নিজেদের মনোনীত প্রার্থীকে এগিয়ে রাখা হতো। নিবন্ধন সনদ কোনো বিষয় ছিল না। মূল যোগ্যতা ছিল যোগাযোগ ও টাকা। এছাড়াও কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান বরাবর নিয়োগ পরীক্ষার নামে প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন ফি বাবদ বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ে পাশ হয় নতুন গেজেট। সেখানে সব প্রক্রিয়া শেষে এককভাবে প্রার্থী নির্বাচন করে শূন্য পদে নিয়োগের সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেয় এনটিআরসিএ। অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি বন্ধের উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সুপারিশের ক্ষমতা দেয় এনটিআরসিএর হাতে।
নিবন্ধন পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েও নিয়োগবঞ্চিতরা আরও বলেন, নতুন গেজেট দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ও নিয়োগে বঞ্চিত হয়ে ১-১২তমদের কিছু অংশ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে রিট করেন। এতে আটকে যায় ১৩তমদের নিয়োগ সুপারিশের কার্যক্রম। ১৩তমদের একদল আন্দোলন করে, আদালতের দ্বারস্থ হন এবং রিট করেন। ২০১৬ সালের গণবিজ্ঞপ্তিকে প্রথম চক্র ধরে নিয়োগের সুপারিশ কার্যক্রম চালু হয়। এদিকে ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এনটিআরসি এর বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৬৬টি রিটের নিষ্পত্তি করে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের জন্য সাত দফা নির্দেশনা দেন। তবে রায়ের ৭নং ধারায় বলা ছিল- বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করতে শিগগির পদক্ষেপ নেবে সরকার। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে এনটিআরসিএর দেওয়া ২০১৮ সালের গণবিজ্ঞপ্তিতে ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের আবেদনের সুযোগ রাখা হয় না। ফলে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হন ১-১২তমদের ৩৫ বছরের বেশি বয়সী নিবন্ধনধারীরা। এরপর আবার আদালতের রায়ে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী নিবন্ধনধারীদের তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার সুযোগ রাখা হয়। এভাবে এনটিআরসএর অব্যবস্থাপনা ও অদূরদর্শিতার কারণে নিবন্ধনধারীরা বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবি করেন তারা। এ অবস্থায় শিক্ষক সংকট দূর করতে প্যানেল ভিত্তিক নিয়োগের কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে বক্তারা বলেন, মুজিব বর্ষের উপহার স্বরূপ একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি হতে পারে এর সমাধান। সেখানে প্যানেলভিত্তিক নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করে নিয়োগবঞ্চিতদের নিয়োগের দাবি জানান তারা। এক্ষেত্রে নিবন্ধন পরীক্ষা বন্ধ রেখে প্যানেলভিত্তিক নিয়োগ এখন সময়ের যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবি বলে জানান তারা। এসময় তিন দফা দাবি তুলে ধরেন বক্তারা। দাবিগুলো হলো-
১. এক আবেদনে সব নিবন্ধনধারী চাকরি প্রত্যাশীদের কোটাবিহীন প্যানেলভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে।
২. সব নিবন্ধনধারীদের স্ব স্ব নীতিমালায় নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত নিবন্ধন পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হবে।
৩. নিবন্ধনধারীদের গণবিজ্ঞপ্তির অন্তর্ভুক্ত না করে আলাদা বদলির ব্যবস্থা করতে হবে।
মানববন্ধনে প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি আমীর আসহাব, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম আকন, আইন বিষয়ক সম্পাদক জি এম ইয়াসিন, ঢাকা বিভাগের আহ্বায়ক তানিয়া সুমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।