ঢাকা ০৯:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

সিনহা হত্যা মামলায় খালাসদের সাজার লক্ষ্যে আপিলের পক্ষে সাবেক সেনা কর্মকর্তারা

  • আপডেট সময় : ১২:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায়ে দ- থেকে অব্যাহতি পাওয়া আসামিদের সাজার আওতায় আনতে আপিলের পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা।
গতকাল শনিবার সিনহার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ‘রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন- রাওয়া’র প্রতিনিধিরা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার রায়ের পাঁচ দিন পর ঢাকার উত্তরার তার বাসায় যান রাওয়ার কর্মকর্তারা। রাওয়ার সেক্রেটারি জেনারেল কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা চেষ্টা করব যাদের সাজা কম হয়েছে তাদের সাজা বৃদ্ধি করার এবং যারা বাদ পড়েছে, তারা যেন সাজার আওতায় আসে, সে চেষ্টা করার।”
তিনি বলেন, বিচার ব্যবস্থার উপর আমি কোনো মন্তব্য করব না। বিচারের ওপর আমরা সম্পূর্ণ আস্থাশীল। এটা একটা পদ্ধতির মাধ্যমে এসেছে।
“ৃভবিষ্যতে আমরা আপিল করব, যারা সাজার বাইরে আছে তাদের সাজার আওতায় আনার জন্য।” গত ৩১ জানুয়ারি সিনহা হত্যা মামলা রায়ে প্রধান দুই আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়।
এ ছাড়া তিন পুলিশ সদস্য এবং পুলিশের তিন সোর্সকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদ-। বাকি চার পুলিশ সদস্য এবং তিন এপিবিএন সদস্য বেকসুর খালাস পেয়েছেন। এই রায়ে প্রত্যাশা ‘অনেক খানি পূরণ’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। তিনি বলেন, “এখন আমরা কাজ করব, প্রধান যে দুই আসামির মৃত্যুদ- হয়েছে এটা যেন কার্যকর হয় সেজন্য।”
উত্তরার বাসার নিচতলায় সিনহার গাড়িটা যেখানে রাখা, তার সামনে দাঁড়িয়েই শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শারমিন। তিনি বলেন, “আমরা ফোকাসটা হারাতে চাই না। এদিক-ওদিক ফোকাস করলে হয়ত রায় কার্যকরে কোনো বাধা তৈরি হবে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সিনহা শুধু আমার ভাই নয়, ও হল ‘নেশনস ব্রাদার’। ওকে হত্যার পর নানাভাবে তার চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয়েছে। তাকে ইয়াবা কারবারি সাজিয়ে, মাদক-টাদক দিয়ে নানাভাবে…।
“আসলে উনারা যখন কাজটা (হত্যাকা-) করে ফেলেছেন, এরপরে বুঝতে পেরেছেন যে একটা বড় ভুল হয়েছে। এরপরে তারা চিন্তা করেছেন কী করতে পারেন তারা, তখন তাদের মনে হয়েছে হাতিয়ার একটাই- সেটা হতে পারে যদি সিনহার চরিত্র হনন করা যায়।”
ওসি প্রদীপের অত্যাচারে টেকনাফের মানুষ বন্দিদশায় ছিলেন মন্তব্য করে সিনহার বোন বলেন, “এই মানুষগুলোকে বাঁচাতে গিয়েই কিন্তু তিনি (সিনহা) নিজের জীবনটা বিসর্জন দিলেন। দেশের জন্যই গেল তার প্রাণ।
“এই রায়ের পর আজ এতোগুলো ভিকটিম পরিবারের যে আত্মতুষ্টি, সেটা দেখে আমাদের অনেক ভালো লাগছে, ভাইয়ের জন্য গর্ববোধ হচ্ছে।”
শারমিন যখন কথা বলছিলেন, তার মুখে থাকা মাস্কে লেখা ছিল ‘#কাম ডাউন, কাম ডাউন’। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফে একটি চেকপোস্টে সিনহাকে হত্যার আগ মুহূর্তে উত্তেজিত পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকতের উদ্দেশে বারবার এই শব্দগুলোই বলেছিলেন সিনহা। তবে সেদিন তাতে শান্ত হয়নি আসামিদের আগ্নেয়াস্ত্র। ৩৬ বছর বয়সী সিনহা সেনবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার পর কয়েকজন তরুণকে সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র বানানোর জন্য কক্সবাজারে গিয়েছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইউনূস-রুবিও ফোনালাপ, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা বাড়াতে জোর

সিনহা হত্যা মামলায় খালাসদের সাজার লক্ষ্যে আপিলের পক্ষে সাবেক সেনা কর্মকর্তারা

আপডেট সময় : ১২:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায়ে দ- থেকে অব্যাহতি পাওয়া আসামিদের সাজার আওতায় আনতে আপিলের পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা।
গতকাল শনিবার সিনহার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ‘রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন- রাওয়া’র প্রতিনিধিরা সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার রায়ের পাঁচ দিন পর ঢাকার উত্তরার তার বাসায় যান রাওয়ার কর্মকর্তারা। রাওয়ার সেক্রেটারি জেনারেল কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা চেষ্টা করব যাদের সাজা কম হয়েছে তাদের সাজা বৃদ্ধি করার এবং যারা বাদ পড়েছে, তারা যেন সাজার আওতায় আসে, সে চেষ্টা করার।”
তিনি বলেন, বিচার ব্যবস্থার উপর আমি কোনো মন্তব্য করব না। বিচারের ওপর আমরা সম্পূর্ণ আস্থাশীল। এটা একটা পদ্ধতির মাধ্যমে এসেছে।
“ৃভবিষ্যতে আমরা আপিল করব, যারা সাজার বাইরে আছে তাদের সাজার আওতায় আনার জন্য।” গত ৩১ জানুয়ারি সিনহা হত্যা মামলা রায়ে প্রধান দুই আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়।
এ ছাড়া তিন পুলিশ সদস্য এবং পুলিশের তিন সোর্সকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদ-। বাকি চার পুলিশ সদস্য এবং তিন এপিবিএন সদস্য বেকসুর খালাস পেয়েছেন। এই রায়ে প্রত্যাশা ‘অনেক খানি পূরণ’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। তিনি বলেন, “এখন আমরা কাজ করব, প্রধান যে দুই আসামির মৃত্যুদ- হয়েছে এটা যেন কার্যকর হয় সেজন্য।”
উত্তরার বাসার নিচতলায় সিনহার গাড়িটা যেখানে রাখা, তার সামনে দাঁড়িয়েই শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শারমিন। তিনি বলেন, “আমরা ফোকাসটা হারাতে চাই না। এদিক-ওদিক ফোকাস করলে হয়ত রায় কার্যকরে কোনো বাধা তৈরি হবে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সিনহা শুধু আমার ভাই নয়, ও হল ‘নেশনস ব্রাদার’। ওকে হত্যার পর নানাভাবে তার চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয়েছে। তাকে ইয়াবা কারবারি সাজিয়ে, মাদক-টাদক দিয়ে নানাভাবে…।
“আসলে উনারা যখন কাজটা (হত্যাকা-) করে ফেলেছেন, এরপরে বুঝতে পেরেছেন যে একটা বড় ভুল হয়েছে। এরপরে তারা চিন্তা করেছেন কী করতে পারেন তারা, তখন তাদের মনে হয়েছে হাতিয়ার একটাই- সেটা হতে পারে যদি সিনহার চরিত্র হনন করা যায়।”
ওসি প্রদীপের অত্যাচারে টেকনাফের মানুষ বন্দিদশায় ছিলেন মন্তব্য করে সিনহার বোন বলেন, “এই মানুষগুলোকে বাঁচাতে গিয়েই কিন্তু তিনি (সিনহা) নিজের জীবনটা বিসর্জন দিলেন। দেশের জন্যই গেল তার প্রাণ।
“এই রায়ের পর আজ এতোগুলো ভিকটিম পরিবারের যে আত্মতুষ্টি, সেটা দেখে আমাদের অনেক ভালো লাগছে, ভাইয়ের জন্য গর্ববোধ হচ্ছে।”
শারমিন যখন কথা বলছিলেন, তার মুখে থাকা মাস্কে লেখা ছিল ‘#কাম ডাউন, কাম ডাউন’। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফে একটি চেকপোস্টে সিনহাকে হত্যার আগ মুহূর্তে উত্তেজিত পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকতের উদ্দেশে বারবার এই শব্দগুলোই বলেছিলেন সিনহা। তবে সেদিন তাতে শান্ত হয়নি আসামিদের আগ্নেয়াস্ত্র। ৩৬ বছর বয়সী সিনহা সেনবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার পর কয়েকজন তরুণকে সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র বানানোর জন্য কক্সবাজারে গিয়েছিলেন।