ঢাকা ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

অর্ধেক জনবলের বিধি মানা হচ্ছে না খোদ সচিবালয়েই

  • আপডেট সময় : ০২:৪১:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২
  • ১০০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় যাবতীয় অফিস অর্ধেক জনবলে চলার বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও সরকারের শীর্ষ প্রশাসনিক দফতরেই সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। উল্টো সচিবালয়জুড়ে লোকে লোকারণ্য। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি সরগরম সচিবালয়। শুধু অফিস নয়, এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে দফতর ছেড়ে অফিসের বাইরে গিয়েও ব্যস্ত থাকেন নানা তদবিরে।
দেশে যে এখন আবার করোনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তার লেশমাত্র বোঝা যাবে না সচিবালয়ে গেলে। ভেতরে তো বটেই, সচিবালয়ের অভ্যর্থনা কেন্দ্র ও ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে রীতিমতো জটলা পাকিয়ে চলে তদবির বাণিজ্য। ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য, অর্থ, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী অফিসের রোস্টার করা হয়েছে। সেখানে ৫০ বছরের বেশি বয়সী, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও অসুস্থ কর্মকর্তাদের অফিসে আসতে মানা করা হয়েছে। ডিউটির তালিকাতেও অর্ধেক জনবল রয়েছে। তবে অনেকেই সেই রোস্টারের তোয়াক্কা করছেন না।
ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে কথা হলো হাবিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি এসেছেন রাজধানীর বাড্ডা থেকে। জানিয়েছেন, এলাকার উন্নয়ন কর্মকা- বিষয়ক একটি ফাইলের খোঁজ নিতে সচিবালয়ে এসেছেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাজটির খোঁজ নিতে কথা বলছিলেন পাট মন্ত্রণালয়ের এক কর্মচারীর সঙ্গে। ওই কর্মচারী জানালেন, রোস্টার অনুযায়ী সোমবার ও বুধবার তার অফিসে আসার কথা। কিন্তু ‘বন্ধুর’ কাজ করে দিতে তিনি এসে পড়েছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মচারী জানালেন, ‘অফিসের রোস্টার অনুযায়ী আজ আমার অফিস নেই। কিছু কাজ আটকে আছে, সেগুলো করতে এসেছি। সপ্তাহে দুদিন কাজ করে আগানো যাবে না।’
সচিবালয়ের ৫নং ভবনের সামনে কথা হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সঙ্গে। তিনি জানান, ‘অফিস আজ না থাকলেও সচিবালয়ের ভেতর তিনি এসেছেন ন্যায্যমূল্যে চাল-আটা কিনতে।’
সচিবালয়ের ভেতরে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিদিনের মতোই আসছেন। তাদের কার্ড আছে। তাই প্রবেশাধিকারও আছে। কিন্তু রোস্টার অনুযায়ী কার আজ আছে, কার নেই সেটা নিরাপত্তাকর্মীদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বললেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অর্ধেক জনবল দিয়েই অফিস চলবে। রোস্টার অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্ধারিত দিনেই কর্মস্থলে আসবেন। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের অনুষ্ঠান ও সমাবেশ বন্ধ রাখাসহ ১১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। ২৩ জানুয়ারির অপর এক আদেশে ২৪ জানুয়ারি থেকে অর্ধেক জনবল দিয়ে সরকারি-বেসরকারি ও আধা সরকারি অফিস পরিচালনার বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নতুন আপদ ‘মব সন্ত্রাস’, আতঙ্কে সারা দেশ

অর্ধেক জনবলের বিধি মানা হচ্ছে না খোদ সচিবালয়েই

আপডেট সময় : ০২:৪১:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় যাবতীয় অফিস অর্ধেক জনবলে চলার বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও সরকারের শীর্ষ প্রশাসনিক দফতরেই সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। উল্টো সচিবালয়জুড়ে লোকে লোকারণ্য। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি সরগরম সচিবালয়। শুধু অফিস নয়, এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে দফতর ছেড়ে অফিসের বাইরে গিয়েও ব্যস্ত থাকেন নানা তদবিরে।
দেশে যে এখন আবার করোনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তার লেশমাত্র বোঝা যাবে না সচিবালয়ে গেলে। ভেতরে তো বটেই, সচিবালয়ের অভ্যর্থনা কেন্দ্র ও ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে রীতিমতো জটলা পাকিয়ে চলে তদবির বাণিজ্য। ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য, অর্থ, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী অফিসের রোস্টার করা হয়েছে। সেখানে ৫০ বছরের বেশি বয়সী, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও অসুস্থ কর্মকর্তাদের অফিসে আসতে মানা করা হয়েছে। ডিউটির তালিকাতেও অর্ধেক জনবল রয়েছে। তবে অনেকেই সেই রোস্টারের তোয়াক্কা করছেন না।
ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে কথা হলো হাবিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি এসেছেন রাজধানীর বাড্ডা থেকে। জানিয়েছেন, এলাকার উন্নয়ন কর্মকা- বিষয়ক একটি ফাইলের খোঁজ নিতে সচিবালয়ে এসেছেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাজটির খোঁজ নিতে কথা বলছিলেন পাট মন্ত্রণালয়ের এক কর্মচারীর সঙ্গে। ওই কর্মচারী জানালেন, রোস্টার অনুযায়ী সোমবার ও বুধবার তার অফিসে আসার কথা। কিন্তু ‘বন্ধুর’ কাজ করে দিতে তিনি এসে পড়েছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মচারী জানালেন, ‘অফিসের রোস্টার অনুযায়ী আজ আমার অফিস নেই। কিছু কাজ আটকে আছে, সেগুলো করতে এসেছি। সপ্তাহে দুদিন কাজ করে আগানো যাবে না।’
সচিবালয়ের ৫নং ভবনের সামনে কথা হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সঙ্গে। তিনি জানান, ‘অফিস আজ না থাকলেও সচিবালয়ের ভেতর তিনি এসেছেন ন্যায্যমূল্যে চাল-আটা কিনতে।’
সচিবালয়ের ভেতরে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিদিনের মতোই আসছেন। তাদের কার্ড আছে। তাই প্রবেশাধিকারও আছে। কিন্তু রোস্টার অনুযায়ী কার আজ আছে, কার নেই সেটা নিরাপত্তাকর্মীদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বললেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অর্ধেক জনবল দিয়েই অফিস চলবে। রোস্টার অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্ধারিত দিনেই কর্মস্থলে আসবেন। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের অনুষ্ঠান ও সমাবেশ বন্ধ রাখাসহ ১১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। ২৩ জানুয়ারির অপর এক আদেশে ২৪ জানুয়ারি থেকে অর্ধেক জনবল দিয়ে সরকারি-বেসরকারি ও আধা সরকারি অফিস পরিচালনার বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।