ঢাকা ০৭:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

দেশে ২ লাখের বেশি মানুষ এখন করোনাভাইরাস সংক্রমিত

  • আপডেট সময় : ০১:৫৫:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২
  • ৯৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপটে বাংলাদেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ২ লাখের বেশি। মহামারীর দুই বছরে এই সংখ্যাটি এখনই সবচেয়ে উঁচুতে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকাল সোমবারের বুলেটিনে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দেখা যায় ১৭ লাখ ৯৮ হাজার ৮৩৩ জন। এর মধ্যে এই পর্যন্ত ২৮ হাজার ৩৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ১৫ লাখ ৬৮ হাজার ২১৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে। এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা দুই লাখ দুই হাজার ২২৬ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। আর উপসর্গবিহীন আক্রান্তরা এই হিসাবেই আসেনি।
মহামারীর বছর গড়িয়ে ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে যখন করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে বিপর্যস্ত অবস্থা তৈরি হয়েছিল, তখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ লাখ পেরোলেও ২ লাখ ছাড়ায়নি। ডেল্টার ধাক্কা সামলে মহামারী পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল গত বছরের শেষ ভাগে। এক মাস আগে অর্থাৎ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৩৬৬ জন। ৩১ ডিসেম্বরের তুলনায় সোমবার সংক্রমিত মানুষ বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৬০ জন। এই রোগীদের মধ্যে সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন তিন হাজার ৪৩ জন। ডিসেম্বরে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ঘোরাফেরা করছিল ২০০ থেকে ৩০০ এর ঘরে। শনাক্তের হার নেমে এসেছিল ২ শতাংশের নিচে।
কিন্তু বিশ্বে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তার শুরুর পর জানুয়ারির শুরু থেকে সংক্রমণের গ্রাফে রোগীর সংখ্যা আবার বাড়তে থাকে। জানুয়ারির প্রথম দিনও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল চারশর নিচে, এখন তা ১৫ হাজারও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হারও থাকছে ৩০ শতাংশে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ হাজার ৫০১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে; এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের। আর সেরে উঠেছেন ২ হাজার ৫৬৮ জন। অর্থাৎ যেখানে দিনে ১৩ হাজারের বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, সেখানে দিনে সুস্থ হয়ে উঠছে আড়াই হাজার জন। সোমবার নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭৭ শতাংশে। মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ। গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে আট হাজার ৩৬১ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৬১ শতাংশের বেশি। যে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১১ জন নারী। তাদের মধ্যে ১৬ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের দুইজন, রাজশাহী বিভাগের একজন, খুলনা বিভাগের পাঁচজন, সিলেট বিভাগে একজন, রংপুর বিভাগে তিনজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন তিনজন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ২০ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, পাঁচজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, দুইজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর, দুইজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর এবং একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এ বছর ২৫ জানুয়ারি তা ১৭ লাখ পেরিয়ে যায়। তার আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ আগস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা। বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৬ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দেশে ২ লাখের বেশি মানুষ এখন করোনাভাইরাস সংক্রমিত

আপডেট সময় : ০১:৫৫:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপটে বাংলাদেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ২ লাখের বেশি। মহামারীর দুই বছরে এই সংখ্যাটি এখনই সবচেয়ে উঁচুতে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকাল সোমবারের বুলেটিনে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দেখা যায় ১৭ লাখ ৯৮ হাজার ৮৩৩ জন। এর মধ্যে এই পর্যন্ত ২৮ হাজার ৩৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ১৫ লাখ ৬৮ হাজার ২১৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে। এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা দুই লাখ দুই হাজার ২২৬ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। আর উপসর্গবিহীন আক্রান্তরা এই হিসাবেই আসেনি।
মহামারীর বছর গড়িয়ে ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে যখন করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে বিপর্যস্ত অবস্থা তৈরি হয়েছিল, তখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ লাখ পেরোলেও ২ লাখ ছাড়ায়নি। ডেল্টার ধাক্কা সামলে মহামারী পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল গত বছরের শেষ ভাগে। এক মাস আগে অর্থাৎ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৩৬৬ জন। ৩১ ডিসেম্বরের তুলনায় সোমবার সংক্রমিত মানুষ বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৬০ জন। এই রোগীদের মধ্যে সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন তিন হাজার ৪৩ জন। ডিসেম্বরে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ঘোরাফেরা করছিল ২০০ থেকে ৩০০ এর ঘরে। শনাক্তের হার নেমে এসেছিল ২ শতাংশের নিচে।
কিন্তু বিশ্বে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তার শুরুর পর জানুয়ারির শুরু থেকে সংক্রমণের গ্রাফে রোগীর সংখ্যা আবার বাড়তে থাকে। জানুয়ারির প্রথম দিনও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল চারশর নিচে, এখন তা ১৫ হাজারও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হারও থাকছে ৩০ শতাংশে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ হাজার ৫০১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে; এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের। আর সেরে উঠেছেন ২ হাজার ৫৬৮ জন। অর্থাৎ যেখানে দিনে ১৩ হাজারের বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, সেখানে দিনে সুস্থ হয়ে উঠছে আড়াই হাজার জন। সোমবার নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭৭ শতাংশে। মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ। গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে আট হাজার ৩৬১ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৬১ শতাংশের বেশি। যে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১১ জন নারী। তাদের মধ্যে ১৬ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের দুইজন, রাজশাহী বিভাগের একজন, খুলনা বিভাগের পাঁচজন, সিলেট বিভাগে একজন, রংপুর বিভাগে তিনজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন তিনজন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ২০ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, পাঁচজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, দুইজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর, দুইজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর এবং একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এ বছর ২৫ জানুয়ারি তা ১৭ লাখ পেরিয়ে যায়। তার আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ আগস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা। বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৬ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ।