ঢাকা ০৪:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

শাঁওলি মিত্র চলে গেলেন সবার চোখের আড়ালে

  • আপডেট সময় : ১০:৫৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২২
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

বিনোদন ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের মঞ্চ আর সিনেমার প্রখ্যাত অভিনেত্রী শাঁওলি মিত্র চিরবিদায় নিলেন সবার চোখের আড়ালে থেকে, ঠিক তার বাবা শম্ভু মিত্রের মত। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার দুপুরে মারা যান শাঁওলি মিত্র। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। হিন্দুস্থান টাইমস জানিয়েছে, শরীর ক্রমশ অসুস্থ হতে থাকায় ২০২০ সালেই নিজের শেষ ইচ্ছার কথা লিখে রেখেছিলেন শাঁওলি মিত্র। সেখানে তিনি তার শেষ কাজের ভার দিয়ে যান অভিনেতা সায়ক চক্রবর্তী ও নাট্যকর্মী ও রাজনীতিবিদ অর্পিতা ঘোষের ওপর। শাঁওলির শেষ ইচ্ছা ছিল, মৃত্যুর পর যেন তার মৃতদেহ কাউকে দেখানো না নয়। মৃতদেহের ওপর যেন ফুল না দেয় কেউ। শেষ ইচ্ছা মেনে রোববার দুপুরে অর্পিতা ঘোষের উপস্থিতিতে সিরিটি মহাশ্মশানে শেষকৃত্য হয় শাঁওলি মিত্রের। দাহ শেষ হলে তারপর তার মৃত্যুর খবর জানানো হয় সবাইকে।
ভারতীয় নাট্য জগতের কিংবদন্তি শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রের মেয়ে শাঁওলি মিত্রর জন্ম ১৯৪৮ সালে সদ্য স্বাধীন ভারতে। বাবা-মায়ের পথ ধরে মঞ্চে পা রাখেন সেই ছোটবেলায়, পরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাটকেই স্নাতোকত্তোর করেন। প্রথমের দিকে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পরে নিজেই ‘পঞ্চম বৈদিক’ নামে একটি দল গড়েন শাঁওলি। ‘নাথবতী অনাথবৎ’, ‘একটি রাজনৈতিক হত্যা’, ‘পাগলা ঘোড়া’, ‘কথা অমৃতসমান’-এর মত বহু জনপ্রিয় নাটক তিনি উপহার দিয়েছেন। তরুণ বয়সেই শাঁওলি মিত্রকে দেখা গিয়েছিল ঋত্বিক ঘটকের ‘যুক্তি, তক্কো আর গল্প’ সিমেমায়। কিন্তু থিয়েটার অন্তঃপ্রাণ এই অভিনেত্রী পরে আর সিনেমায় সেভাবে কাজ করেননি। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় কৃষকদের সমর্থন করেছিলেন শাওলি মিত্র, বিরোধিতা করেছিলেন বাম সরকারের। তবে সরাসরি কখনও রাজনীতিতে যোগ দেননি। অভিনয়ের পাশাপাশি লেখক হিসেবেও নিজের আরেকটি পরিচয় গড়ে তুলেছিলেন শাঁওলি মিত্র। কাজ করেছেন অভিধান সংস্কারে। দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলা অকাদেমির প্রধান হিসেবে। ১৯৯১ সালে ‘নাথবতী অনাথবৎ’ বইটির জন্য তিনি আনন্দ পুরস্কার পান। ২০০৩ সালে পান সংগীত- নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার। ২০০৯ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী খেতাবে ভূষিত করে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ২০১৩ সালে তাকে বঙ্গ বিভূষণ খেতাব দেয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সংগঠনের প্রতি উমামার কমিটমেন্ট ছিল কি না, প্রশ্ন রিফাতের

শাঁওলি মিত্র চলে গেলেন সবার চোখের আড়ালে

আপডেট সময় : ১০:৫৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২২

বিনোদন ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের মঞ্চ আর সিনেমার প্রখ্যাত অভিনেত্রী শাঁওলি মিত্র চিরবিদায় নিলেন সবার চোখের আড়ালে থেকে, ঠিক তার বাবা শম্ভু মিত্রের মত। ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার দুপুরে মারা যান শাঁওলি মিত্র। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। হিন্দুস্থান টাইমস জানিয়েছে, শরীর ক্রমশ অসুস্থ হতে থাকায় ২০২০ সালেই নিজের শেষ ইচ্ছার কথা লিখে রেখেছিলেন শাঁওলি মিত্র। সেখানে তিনি তার শেষ কাজের ভার দিয়ে যান অভিনেতা সায়ক চক্রবর্তী ও নাট্যকর্মী ও রাজনীতিবিদ অর্পিতা ঘোষের ওপর। শাঁওলির শেষ ইচ্ছা ছিল, মৃত্যুর পর যেন তার মৃতদেহ কাউকে দেখানো না নয়। মৃতদেহের ওপর যেন ফুল না দেয় কেউ। শেষ ইচ্ছা মেনে রোববার দুপুরে অর্পিতা ঘোষের উপস্থিতিতে সিরিটি মহাশ্মশানে শেষকৃত্য হয় শাঁওলি মিত্রের। দাহ শেষ হলে তারপর তার মৃত্যুর খবর জানানো হয় সবাইকে।
ভারতীয় নাট্য জগতের কিংবদন্তি শম্ভু মিত্র ও তৃপ্তি মিত্রের মেয়ে শাঁওলি মিত্রর জন্ম ১৯৪৮ সালে সদ্য স্বাধীন ভারতে। বাবা-মায়ের পথ ধরে মঞ্চে পা রাখেন সেই ছোটবেলায়, পরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাটকেই স্নাতোকত্তোর করেন। প্রথমের দিকে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পরে নিজেই ‘পঞ্চম বৈদিক’ নামে একটি দল গড়েন শাঁওলি। ‘নাথবতী অনাথবৎ’, ‘একটি রাজনৈতিক হত্যা’, ‘পাগলা ঘোড়া’, ‘কথা অমৃতসমান’-এর মত বহু জনপ্রিয় নাটক তিনি উপহার দিয়েছেন। তরুণ বয়সেই শাঁওলি মিত্রকে দেখা গিয়েছিল ঋত্বিক ঘটকের ‘যুক্তি, তক্কো আর গল্প’ সিমেমায়। কিন্তু থিয়েটার অন্তঃপ্রাণ এই অভিনেত্রী পরে আর সিনেমায় সেভাবে কাজ করেননি। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় কৃষকদের সমর্থন করেছিলেন শাওলি মিত্র, বিরোধিতা করেছিলেন বাম সরকারের। তবে সরাসরি কখনও রাজনীতিতে যোগ দেননি। অভিনয়ের পাশাপাশি লেখক হিসেবেও নিজের আরেকটি পরিচয় গড়ে তুলেছিলেন শাঁওলি মিত্র। কাজ করেছেন অভিধান সংস্কারে। দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলা অকাদেমির প্রধান হিসেবে। ১৯৯১ সালে ‘নাথবতী অনাথবৎ’ বইটির জন্য তিনি আনন্দ পুরস্কার পান। ২০০৩ সালে পান সংগীত- নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার। ২০০৯ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী খেতাবে ভূষিত করে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ২০১৩ সালে তাকে বঙ্গ বিভূষণ খেতাব দেয়।