ঢাকা ০২:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

একটানা কসে কাজ করার সঠিক নিয়ম

  • আপডেট সময় : ১২:১৫:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জানুয়ারী ২০২২
  • ৭৮ বার পড়া হয়েছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক :অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষ চেয়ার টেবিলে বসে কম্পিউটারে কাজ করেন। দিনে ১০-১২ ঘণ্টার বেশি সময় বসেই কাটাতে হয়। এতটা সময় যখন বসে-বসে এভাবে কাজ করতে-করতে পিঠ, কোমর, কাঁধ, পায়ের পাতা এবং মোটামুটি গোটা শরীরেই গাঁটে-গাঁটে ব্যথা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। চেয়ার-টেবিলে বসে কাজ করা মানুষদের মধ্যেই ওজন বৃদ্ধি, হৃদরোগ, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, অল্প কাজ করেই ক্লান্ত বোধ করা, কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা-ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায়। জিমে যাওয়ার বা যোগব্যায়াম করার সময় বা ইচ্ছে কোনওটাই যদি না থাকে, তা হলেও কিন্তু আপনি শরীর অর্থাৎ গাঁটের ব্যথা এড়াতে পারেন। এ নিয়েই এবারের লাইফস্টাইল পাতার প্রধানর ফিচার।

সব সময়ে বসে থাকলে যে শারীরিক সমস্যা দেখা যায় : কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি এবং হার্টের সমস্যা, পা ঝুলিয়ে বসে থেকে পায়ের পাতা ফোলা, মেরুদ- বেঁকে যাওয়া বা সামনের দিকে ঝুঁকে যাওয়া, স্লিপ ডিস্ক, মেদ জমা, মাংসপেশির শিথিলতা, বিশেষ করে ‘কোর এরিয়ায়’ অর্থাৎ হিপ এবং কোমরের সংযোগস্থলে।
খুব বেশি রিল্যাক্সড এবং খুব বেশি টাইট হয়ে বসা-কোনওটাই ভালো নয়। কম্পিউটারে বা কাগজ কলমে কাজ করার সময়ে খুব বেশি পেছনে হেলান দিয়ে বা সামনের দিকে ঝুঁকে বসবেন না। দুই ভাবেই আপনার পিঠে ও মেরুদন্ডে চাপ পড়ে। এতে পিঠ ও বাহু আড়ষ্ট হয়ে যায়, ফলে অস্বস্তি ও ঝিমানো ভাব চলে আসে। সেই সাথে ব্যাক পেইন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সবচেয়ে ভালো হয় যদি পিঠ সোজা করে বসে কাজ করতে পারেন। প্রয়োজনে মাঝারি সাইজের একটি কুশনে পিঠ ঠেকিয়ে বসে কাজ করুন। এতে এমনিতেই আপনার পিঠ সোজা হয়ে থাকবে, কিন্তু কোমরে চাপ পড়বে না। পিঠ এবং কাঁধ আড়ষ্টও হবে না। ব্যাক পেইনের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতিটি খুব কার্যকর। মূলত ব্যাক পেইন বা মেরুদন্ডের ব্যাথার মূল কারণই হল, বেশি ঝুঁকে কাজ করা।
আপনি যদি কম্পিউটারে কাজ করেন, তবে খেয়াল রাখুন যেন কম্পিউটারের কিবোর্ড ও মাউস কনুইয়ের সমান্তরালে থাকে। কাঁধ যেন স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু বা নিচু অবস্থায় রাখতে না হয়। এতে করে কিছুক্ষণ কাজ করার পরই কাঁধ আড়ষ্ট হবে না। কাঁধ আড়স্ট হয়ে গেলে কাঁধে ও ঘাড়ে ব্যাথা, ম্যাজম্যাজ করা, হাত অবশ হওয়া – এসব হতে পারে। এতে কাজে অসুবিধার সাথে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়। চাঙ্গা থেকে অনেক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করতে চাইলে অবশ্যই এটা করুন। এই কথা কাগজ কলমে কাজ করার বেলায়ও সত্যি। ঘাড় গুঁজে বা মেরুদন্ড বাঁকা করে কাজ করলেও একই ধরনের অসুবিধা হয়। কাজেই কাগজ কলমের কাজের সময়েও সোজা হয়ে বসুন।
সারাদিন বসে-বসে কাজ করলে কী-কী শারীরিক সমস্যা হতে পারে তা তো জানলেন। কিন্তু এর সমাধান কী হবে! দিনের মধ্যে যদি আপনি ১০-১২ ঘণ্টা বসে থাকেন, তার মধ্যে দুই একবার নিশ্চয়ই পাঁচ মিনিট করে সময় বের করতে পারেন? তা হলেই আপনার এই সব শারীরিক সমস্যার সমাধান খানিকটা হলেও হয়ে যাবে!
প্রথমেই আপনার বসার ধরন ঠিক করা উচিত। সব কর্পোরেট অফিসেই আজকাল মোটামুটি পুশ-ব্যাক চেয়ার থাকে আর এটিই হল যত নষ্টের গোড়া! এই ধরনের চেয়ারে বসতে আরাম লাগলেও মেরুদ- এবং কোমরের জন্য এই চেয়ারগুলো মোটেও ভাল নয়। কাজেই আপনাকেই মাঝে-মাঝে সোজা হয়ে বসতে হবে, কাজ করতে-করতে।
অফিসেই একটু স্ট্রেচিং করতে পারেন। না, ব্যায়াম করতে বলছি না, তবে হাত-পা একটু টানটান করাই যায়। দু-এক ঘণ্টা পর পর একটু উঠে দাঁড়িয়ে কোমর বেঁকান, হাত-পা স্ট্রেচ করুন, দরকার হলে একবার ফ্লোরেই হেঁটে নিন। পাঁচ মিনিটও সময় লাগবে না।
বেশিক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসে থাকলে পায়ে ব্যথা হবেই। কারণ, রক্তচলাচল স্বাভাবিক না হওয়ার কারণে শিরায় রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে এবং মাংসপেশি শিথিল হতে থাকে। মাঝে-মাঝে পা সামনের দিকে ছড়িয়ে স্ট্রেচ করে নিন। দরকার হলে একটা ছোট টুল রাখতে পারেন পায়ের কাছে। পায়ে ব্যথা হলে পায়ের পাতা ওই টুলে রাখুন।-

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

একটানা কসে কাজ করার সঠিক নিয়ম

আপডেট সময় : ১২:১৫:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জানুয়ারী ২০২২

লাইফস্টাইল ডেস্ক :অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষ চেয়ার টেবিলে বসে কম্পিউটারে কাজ করেন। দিনে ১০-১২ ঘণ্টার বেশি সময় বসেই কাটাতে হয়। এতটা সময় যখন বসে-বসে এভাবে কাজ করতে-করতে পিঠ, কোমর, কাঁধ, পায়ের পাতা এবং মোটামুটি গোটা শরীরেই গাঁটে-গাঁটে ব্যথা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। চেয়ার-টেবিলে বসে কাজ করা মানুষদের মধ্যেই ওজন বৃদ্ধি, হৃদরোগ, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, অল্প কাজ করেই ক্লান্ত বোধ করা, কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা-ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায়। জিমে যাওয়ার বা যোগব্যায়াম করার সময় বা ইচ্ছে কোনওটাই যদি না থাকে, তা হলেও কিন্তু আপনি শরীর অর্থাৎ গাঁটের ব্যথা এড়াতে পারেন। এ নিয়েই এবারের লাইফস্টাইল পাতার প্রধানর ফিচার।

সব সময়ে বসে থাকলে যে শারীরিক সমস্যা দেখা যায় : কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি এবং হার্টের সমস্যা, পা ঝুলিয়ে বসে থেকে পায়ের পাতা ফোলা, মেরুদ- বেঁকে যাওয়া বা সামনের দিকে ঝুঁকে যাওয়া, স্লিপ ডিস্ক, মেদ জমা, মাংসপেশির শিথিলতা, বিশেষ করে ‘কোর এরিয়ায়’ অর্থাৎ হিপ এবং কোমরের সংযোগস্থলে।
খুব বেশি রিল্যাক্সড এবং খুব বেশি টাইট হয়ে বসা-কোনওটাই ভালো নয়। কম্পিউটারে বা কাগজ কলমে কাজ করার সময়ে খুব বেশি পেছনে হেলান দিয়ে বা সামনের দিকে ঝুঁকে বসবেন না। দুই ভাবেই আপনার পিঠে ও মেরুদন্ডে চাপ পড়ে। এতে পিঠ ও বাহু আড়ষ্ট হয়ে যায়, ফলে অস্বস্তি ও ঝিমানো ভাব চলে আসে। সেই সাথে ব্যাক পেইন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সবচেয়ে ভালো হয় যদি পিঠ সোজা করে বসে কাজ করতে পারেন। প্রয়োজনে মাঝারি সাইজের একটি কুশনে পিঠ ঠেকিয়ে বসে কাজ করুন। এতে এমনিতেই আপনার পিঠ সোজা হয়ে থাকবে, কিন্তু কোমরে চাপ পড়বে না। পিঠ এবং কাঁধ আড়ষ্টও হবে না। ব্যাক পেইনের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতিটি খুব কার্যকর। মূলত ব্যাক পেইন বা মেরুদন্ডের ব্যাথার মূল কারণই হল, বেশি ঝুঁকে কাজ করা।
আপনি যদি কম্পিউটারে কাজ করেন, তবে খেয়াল রাখুন যেন কম্পিউটারের কিবোর্ড ও মাউস কনুইয়ের সমান্তরালে থাকে। কাঁধ যেন স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু বা নিচু অবস্থায় রাখতে না হয়। এতে করে কিছুক্ষণ কাজ করার পরই কাঁধ আড়ষ্ট হবে না। কাঁধ আড়স্ট হয়ে গেলে কাঁধে ও ঘাড়ে ব্যাথা, ম্যাজম্যাজ করা, হাত অবশ হওয়া – এসব হতে পারে। এতে কাজে অসুবিধার সাথে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়। চাঙ্গা থেকে অনেক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করতে চাইলে অবশ্যই এটা করুন। এই কথা কাগজ কলমে কাজ করার বেলায়ও সত্যি। ঘাড় গুঁজে বা মেরুদন্ড বাঁকা করে কাজ করলেও একই ধরনের অসুবিধা হয়। কাজেই কাগজ কলমের কাজের সময়েও সোজা হয়ে বসুন।
সারাদিন বসে-বসে কাজ করলে কী-কী শারীরিক সমস্যা হতে পারে তা তো জানলেন। কিন্তু এর সমাধান কী হবে! দিনের মধ্যে যদি আপনি ১০-১২ ঘণ্টা বসে থাকেন, তার মধ্যে দুই একবার নিশ্চয়ই পাঁচ মিনিট করে সময় বের করতে পারেন? তা হলেই আপনার এই সব শারীরিক সমস্যার সমাধান খানিকটা হলেও হয়ে যাবে!
প্রথমেই আপনার বসার ধরন ঠিক করা উচিত। সব কর্পোরেট অফিসেই আজকাল মোটামুটি পুশ-ব্যাক চেয়ার থাকে আর এটিই হল যত নষ্টের গোড়া! এই ধরনের চেয়ারে বসতে আরাম লাগলেও মেরুদ- এবং কোমরের জন্য এই চেয়ারগুলো মোটেও ভাল নয়। কাজেই আপনাকেই মাঝে-মাঝে সোজা হয়ে বসতে হবে, কাজ করতে-করতে।
অফিসেই একটু স্ট্রেচিং করতে পারেন। না, ব্যায়াম করতে বলছি না, তবে হাত-পা একটু টানটান করাই যায়। দু-এক ঘণ্টা পর পর একটু উঠে দাঁড়িয়ে কোমর বেঁকান, হাত-পা স্ট্রেচ করুন, দরকার হলে একবার ফ্লোরেই হেঁটে নিন। পাঁচ মিনিটও সময় লাগবে না।
বেশিক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসে থাকলে পায়ে ব্যথা হবেই। কারণ, রক্তচলাচল স্বাভাবিক না হওয়ার কারণে শিরায় রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে এবং মাংসপেশি শিথিল হতে থাকে। মাঝে-মাঝে পা সামনের দিকে ছড়িয়ে স্ট্রেচ করে নিন। দরকার হলে একটা ছোট টুল রাখতে পারেন পায়ের কাছে। পায়ে ব্যথা হলে পায়ের পাতা ওই টুলে রাখুন।-