ঢাকা ১১:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

সেই হাসপাতালের পরিচালক সারওয়ার দুই দিনের রিমান্ডে

  • আপডেট সময় : ০১:৪০:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২২
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিল পরিশোধ সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে রাজধানীর শ্যামলীতে ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে’ চিকিৎসাধীন ছয় মাসের যমজ শিশুর একজনের নির্মম মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় ওই হাসপাতালের পরিচালক গোলাম সারওয়ারের দুই দিনের দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল শনিবার তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শুভ্রা চক্রবর্তী তার দুই দিনের দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। যমজ শিশুর মধ্যে আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় ওই হাসপাতালের মালিক ও পরিচালককে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার পর র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৩-এর যৌথ অভিযানে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে হাসপাতালের পরিচালক গোলাম সারওয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার গোলাম সারওয়ার র‌্যাবকে জানান, আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে রোগী ভর্তির লক্ষ্যে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে দালাল নিয়োগ করা আছে। দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বেসরকারি ওই হাসপাতালটিতে গত ২ জানুয়ারি যমজ ভ্রাতাকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর থেকে বিল পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া হয়। অন্যথায় চিকিৎসা করা হবে না বলে জানানো হয়। ভিকটিম ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করে। তবে অতিরিক্ত আরও টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অর্থ না দেওয়ায় চিকিৎসা বন্ধ রাখা হয় বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করে। একপর‌্যায়ে অর্থ না পাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ভুক্তভোগীর মায়ের যমজ সন্তানকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টে ভোগা ছয় মাস বয়সী যমজ দুই শিশু—আহমেদ ও আব্দুল্লাহকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন মা আয়েশা বেগম। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় শিশু দুটিকে নিবিড় পরিচর‌্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়ার কথা বলেন সোহরাওয়ার্দীর চিকিৎসকরা। তবে সেখানে আইসিইউ বেড না থাকায় দালালের মাধ্যমে কম খরচে গত ২ জানুয়ারি যমজ দুই সন্তানকে রাজধানীর শ্যামলীর ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে’ নেন আয়েশা বেগম। সেখানে তিনদিন আইসিইউতে রেখে চিকিৎসার পর তাকে এক লাখ ২৬ হাজার টাকা বিলের কথা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ওই টাকা যোগাড়ের সাধ্য নেই জানানোর পর আয়েশার সঙ্গে রাগারাগি করেন হাসপাতালের পরিচালকসহ দায়িত্বে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। আয়েশার দাবি, বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার-দেনা করে ৫০ হাজার ৫০০ টাকা যোগাড় করেন তিনি। এছাড়া সৌদি প্রবাসী স্বামীকে ফোন করে বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিক তিনি ১০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠান। সব মিলিয়ে ৬০ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধ করেন তিনি। তবে তাতে সন্তুষ্ট হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, শিশুর মা এক টাকাও বিল দেননি। অন্যদিকে, পুলিশ বলছে বাচ্চা দুটির মা মাত্র চার হাজার টাকা বিল দিয়েছেন। আয়েশা বেগমের ভাষ্যমতে, বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) হাসপাতালের আইসিইউ থেকে যমজ দুই শিশুকে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে মারা যায় শিশু আহমেদ। আরেক শিশু আব্দুল্লাহও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সংগঠনের প্রতি উমামার কমিটমেন্ট ছিল কি না, প্রশ্ন রিফাতের

সেই হাসপাতালের পরিচালক সারওয়ার দুই দিনের রিমান্ডে

আপডেট সময় : ০১:৪০:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিল পরিশোধ সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে রাজধানীর শ্যামলীতে ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে’ চিকিৎসাধীন ছয় মাসের যমজ শিশুর একজনের নির্মম মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় ওই হাসপাতালের পরিচালক গোলাম সারওয়ারের দুই দিনের দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গতকাল শনিবার তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শুভ্রা চক্রবর্তী তার দুই দিনের দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। যমজ শিশুর মধ্যে আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় ওই হাসপাতালের মালিক ও পরিচালককে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার পর র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৩-এর যৌথ অভিযানে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে হাসপাতালের পরিচালক গোলাম সারওয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার গোলাম সারওয়ার র‌্যাবকে জানান, আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে রোগী ভর্তির লক্ষ্যে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে দালাল নিয়োগ করা আছে। দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বেসরকারি ওই হাসপাতালটিতে গত ২ জানুয়ারি যমজ ভ্রাতাকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর থেকে বিল পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া হয়। অন্যথায় চিকিৎসা করা হবে না বলে জানানো হয়। ভিকটিম ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করে। তবে অতিরিক্ত আরও টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অর্থ না দেওয়ায় চিকিৎসা বন্ধ রাখা হয় বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করে। একপর‌্যায়ে অর্থ না পাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ভুক্তভোগীর মায়ের যমজ সন্তানকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টে ভোগা ছয় মাস বয়সী যমজ দুই শিশু—আহমেদ ও আব্দুল্লাহকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন মা আয়েশা বেগম। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় শিশু দুটিকে নিবিড় পরিচর‌্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়ার কথা বলেন সোহরাওয়ার্দীর চিকিৎসকরা। তবে সেখানে আইসিইউ বেড না থাকায় দালালের মাধ্যমে কম খরচে গত ২ জানুয়ারি যমজ দুই সন্তানকে রাজধানীর শ্যামলীর ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে’ নেন আয়েশা বেগম। সেখানে তিনদিন আইসিইউতে রেখে চিকিৎসার পর তাকে এক লাখ ২৬ হাজার টাকা বিলের কথা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ওই টাকা যোগাড়ের সাধ্য নেই জানানোর পর আয়েশার সঙ্গে রাগারাগি করেন হাসপাতালের পরিচালকসহ দায়িত্বে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। আয়েশার দাবি, বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার-দেনা করে ৫০ হাজার ৫০০ টাকা যোগাড় করেন তিনি। এছাড়া সৌদি প্রবাসী স্বামীকে ফোন করে বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিক তিনি ১০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠান। সব মিলিয়ে ৬০ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধ করেন তিনি। তবে তাতে সন্তুষ্ট হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, শিশুর মা এক টাকাও বিল দেননি। অন্যদিকে, পুলিশ বলছে বাচ্চা দুটির মা মাত্র চার হাজার টাকা বিল দিয়েছেন। আয়েশা বেগমের ভাষ্যমতে, বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) হাসপাতালের আইসিইউ থেকে যমজ দুই শিশুকে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে মারা যায় শিশু আহমেদ। আরেক শিশু আব্দুল্লাহও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।