ঢাকা ০৪:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

দলীয় পদ হারিয়ে তৈমূর বললেন ‘আলহামদুলিল্লাহ’

  • আপডেট সময় : ০২:১০:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জানুয়ারী ২০২২
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দল অংশ না নিলেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার। কেন্দ্রের অনানুষ্ঠানিক নির্দেশনা পেয়ে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীর সঙ্গে চালাচ্ছেন সমানতালে প্রচার। সবকিছু নির্বিঘেœ করলেও রবিবার হঠাৎ কেন্দ্র থেকে জারি করা এক চিঠিতে তাকে দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে দলের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন তৈমূর আলম। অব্যাহতি পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন- ‘আলহামদুলিল্লাহ’।
অব্যাহতির চিঠি হাতে না পেলেও ইতিমধ্যে লোকমুখে শুনেছেন জানিয়ে সোমবার বিকালে তৈমূর আলম খন্দকার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। দল এমন সিদ্ধান্ত নিলে তো আমি আরও ফ্রি হয়ে গেলাম। এখন আমি আল্লাহর তত্ত্বাবধানে (আন্ডারে), জনগণের কল্যাণে।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে ২০১১ সালেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তৈমূর আলম। তখন দলীয় সিদ্ধান্তে অনেকটা নাটকীয়ভাবে ভোটের আগের রাতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল তাকে।
তৈমূর আলম নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্বেও ছিলেন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর দল পরিচালনা অব্যাহত রাখতে জেলায় তার জায়গায় ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে মনিরুল ইসলাম রবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন তাকে কেন্দ্রীয় পদ থেকেও অব্যাহতি দিলো দল।
অব্যাহতি দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলতেই তৈমূর আলম বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমি জনতার প্রার্থী। আমার দল আমাকে জনগণের কাছে চলে যাওয়ার একটা সুযোগ করে দিয়েছে। এর আগেও তো ২০১১ সালে দল আমাকে বসিয়ে দিয়েছিল। কোন স্বার্থে বসানো হয়েছিল আমি একবারও জিজ্ঞাসা করিনি। দল বলেছে, আমি বসে গেছি। এবার তো আমার জন্য ফ্রি হয়ে গেল।’
ভোটের মাঠে থাকতে ভোটারদের চাপ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ শুধু বলে- আপনি কিন্তু বসবেন না, আপনি কিন্তু বসবেন না। এখন আমি বলবো আমি আর কার কথায় বসবো। যাদের কথায় বসতাম তারাই তো আমাকে অব্যাহতি দিয়ে দিয়েছে। এখন আমি আরও ফ্রি হয়ে গেলাম।’
তৈমূর বলেন, ‘আমাদের দলের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আমি অলরেডি স্বাগত জানিয়ে দিয়েছি এই সিদ্ধান্তের জন্য। তবে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি। আমাকে একটাবার জিজ্ঞাসাও করেনি। দল একটা সিদ্ধান্ত নিলো, দলের জন্য এত মাইর খাইলাম, জেল খাটলাম। দল থেকে কোনো চিঠিও দেওয়া হয় নাই এবং দলের দায়িত্বশীল কেউ আমাকে একবার ফোন দিয়েও এটা জানায়নি।’
দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে সমালোচনাও উঠে আসে তার কণ্ঠে। তৈমূর আলম বলেন, ‘এখন প্রকৃতপক্ষে দলের মহাসচিব কে এটা তো আমরা বলতে পারি না। মহাসচিব, না যুগ্ম মহাসচিব কে দল চালাচ্ছেন এটা তো বোঝা যাচ্ছে না। তবে আমি মনে করি দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমি দলকে স্বাগত জানাই।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনেরর এই প্রার্থী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমাকে ভুলে হোক, সাবধানতাবশত হোক আর অসাবধানতাবশত হোক, মজলুম জননেতা বলে। এখন আমার মজলুম জননেতা হওয়ার রাস্তা সুগম হলো। আর কেউ যদি মনে করে দল ২০১১ সালের মতো নৌকার প্রার্থী মেয়রকে পাস করানোর জন্য আমাকে বসিয়ে দিয়েছে, এবারও যদি সেটা করে থাকে সেটা হলে অন্য বিষয়। এ নিয়ে আমি কোনো চিন্তা করি না।’
শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার তো বাধা দেওয়ার কেউ থাকলো না। আমি এখন আল্লাহর আন্ডারে, জনগণের কল্যাণে। ভয়ে কাঁপে কাপুরুষ লড়ে যায় বীর, এটা মনে রাখবেন। জীবনভর যুদ্ধ করে গেছি। কোথাও কোনো দালালিও করি নাই, কোথাও কোনো কম্প্রোমাইজ করি নাই। জেলে গিয়েছি, মার খেয়েছি।’
দলের জন্য নিজের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন এই দলের জন্য গরুর মতো পিটিয়েছে আমাকে পুলিশ, কিন্তু ব্যানারটা ছাড়িনি। পদ হারিয়েছি ওটা কিছু না। মজলুম জননেতার উপরে বাংলাদেশে আর কোনো পদ নেই। আমার জন্য তো ভালো হয়েছে। এখন আমি যাদের সঙ্গে দিন ও রাত কাটাতাম রিকশাওয়ালা, ঠেলাগাড়িওয়ালা যাদের সংগঠন করতাম, তাদের সময় দিতে পারবো।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দলীয় পদ হারিয়ে তৈমূর বললেন ‘আলহামদুলিল্লাহ’

আপডেট সময় : ০২:১০:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দল অংশ না নিলেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার। কেন্দ্রের অনানুষ্ঠানিক নির্দেশনা পেয়ে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীর সঙ্গে চালাচ্ছেন সমানতালে প্রচার। সবকিছু নির্বিঘেœ করলেও রবিবার হঠাৎ কেন্দ্র থেকে জারি করা এক চিঠিতে তাকে দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে দলের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন তৈমূর আলম। অব্যাহতি পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন- ‘আলহামদুলিল্লাহ’।
অব্যাহতির চিঠি হাতে না পেলেও ইতিমধ্যে লোকমুখে শুনেছেন জানিয়ে সোমবার বিকালে তৈমূর আলম খন্দকার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। দল এমন সিদ্ধান্ত নিলে তো আমি আরও ফ্রি হয়ে গেলাম। এখন আমি আল্লাহর তত্ত্বাবধানে (আন্ডারে), জনগণের কল্যাণে।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে ২০১১ সালেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তৈমূর আলম। তখন দলীয় সিদ্ধান্তে অনেকটা নাটকীয়ভাবে ভোটের আগের রাতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল তাকে।
তৈমূর আলম নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্বেও ছিলেন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর দল পরিচালনা অব্যাহত রাখতে জেলায় তার জায়গায় ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে মনিরুল ইসলাম রবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন তাকে কেন্দ্রীয় পদ থেকেও অব্যাহতি দিলো দল।
অব্যাহতি দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলতেই তৈমূর আলম বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমি জনতার প্রার্থী। আমার দল আমাকে জনগণের কাছে চলে যাওয়ার একটা সুযোগ করে দিয়েছে। এর আগেও তো ২০১১ সালে দল আমাকে বসিয়ে দিয়েছিল। কোন স্বার্থে বসানো হয়েছিল আমি একবারও জিজ্ঞাসা করিনি। দল বলেছে, আমি বসে গেছি। এবার তো আমার জন্য ফ্রি হয়ে গেল।’
ভোটের মাঠে থাকতে ভোটারদের চাপ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ শুধু বলে- আপনি কিন্তু বসবেন না, আপনি কিন্তু বসবেন না। এখন আমি বলবো আমি আর কার কথায় বসবো। যাদের কথায় বসতাম তারাই তো আমাকে অব্যাহতি দিয়ে দিয়েছে। এখন আমি আরও ফ্রি হয়ে গেলাম।’
তৈমূর বলেন, ‘আমাদের দলের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আমি অলরেডি স্বাগত জানিয়ে দিয়েছি এই সিদ্ধান্তের জন্য। তবে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি। আমাকে একটাবার জিজ্ঞাসাও করেনি। দল একটা সিদ্ধান্ত নিলো, দলের জন্য এত মাইর খাইলাম, জেল খাটলাম। দল থেকে কোনো চিঠিও দেওয়া হয় নাই এবং দলের দায়িত্বশীল কেউ আমাকে একবার ফোন দিয়েও এটা জানায়নি।’
দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে সমালোচনাও উঠে আসে তার কণ্ঠে। তৈমূর আলম বলেন, ‘এখন প্রকৃতপক্ষে দলের মহাসচিব কে এটা তো আমরা বলতে পারি না। মহাসচিব, না যুগ্ম মহাসচিব কে দল চালাচ্ছেন এটা তো বোঝা যাচ্ছে না। তবে আমি মনে করি দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমি দলকে স্বাগত জানাই।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনেরর এই প্রার্থী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমাকে ভুলে হোক, সাবধানতাবশত হোক আর অসাবধানতাবশত হোক, মজলুম জননেতা বলে। এখন আমার মজলুম জননেতা হওয়ার রাস্তা সুগম হলো। আর কেউ যদি মনে করে দল ২০১১ সালের মতো নৌকার প্রার্থী মেয়রকে পাস করানোর জন্য আমাকে বসিয়ে দিয়েছে, এবারও যদি সেটা করে থাকে সেটা হলে অন্য বিষয়। এ নিয়ে আমি কোনো চিন্তা করি না।’
শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার তো বাধা দেওয়ার কেউ থাকলো না। আমি এখন আল্লাহর আন্ডারে, জনগণের কল্যাণে। ভয়ে কাঁপে কাপুরুষ লড়ে যায় বীর, এটা মনে রাখবেন। জীবনভর যুদ্ধ করে গেছি। কোথাও কোনো দালালিও করি নাই, কোথাও কোনো কম্প্রোমাইজ করি নাই। জেলে গিয়েছি, মার খেয়েছি।’
দলের জন্য নিজের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন এই দলের জন্য গরুর মতো পিটিয়েছে আমাকে পুলিশ, কিন্তু ব্যানারটা ছাড়িনি। পদ হারিয়েছি ওটা কিছু না। মজলুম জননেতার উপরে বাংলাদেশে আর কোনো পদ নেই। আমার জন্য তো ভালো হয়েছে। এখন আমি যাদের সঙ্গে দিন ও রাত কাটাতাম রিকশাওয়ালা, ঠেলাগাড়িওয়ালা যাদের সংগঠন করতাম, তাদের সময় দিতে পারবো।’