ঢাকা ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

২০২১ সালে যাদের হারিয়েছি

  • আপডেট সময় : ১১:১৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

বিনোদন ডেস্ক : সারা পৃথিবীতেই বিষাদের বছর হিসেবে ইতিহাসে থেকে যাবে ২০২০ সাল। করোনাভাইরাস তা-বের সাক্ষী হয়ে। সেই রেশ ছিল ২০২১ সালেও। মহামারি করোনার শিকার হয়ে মারা গেছেন সারা দুনিয়ার অনেক তারকা। বাংলাদেশেও শোকের পর শোক নেমেছে করোনার কারণে। এছাড়াও নানা রকম অসুখে ভুগে মারা গেছেন নানা অঙ্গনের অনেক তারকা। ২০২১ সালে আমরা চিরতরে হারিয়ে ফেলেছি যেসব তারকা ও গুণী মানুষদের-
অভিনেতা মজিবুর রহমান দিলু : বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা মজিবুর রহমান দিলু মারা যান গত ১৯ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে। তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ভর্তি ছিলেন রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বিটিভিতে প্রচারিত শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের ‘সংশপ্তক’ নাটকে ‘বড় মালু’ চরিত্রে অভিনয় করে আলোচিত হয়েছিলেন মুজিবুর রহমান দিলু।
এ টি এম শামসুজ্জামান
আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান (এটিএম শামসুজ্জামান) চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি মারা যান। পরিপাকতন্ত্রের জটিলতা নিয়ে কয়েক মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠার পর সূত্রাপুরের নিজ বাসভবনে নেওয়া হলে সেখানে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই বরেণ্য অভিনেতা। একজন অভিনেতা, পরিচালক ও লেখক হিসেবে বেশ পরিচিত ছিলেন এটিএম। অভিনয়ের জন্য আজীবন সম্মাননাসহ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ছয়বার। এর মধ্যে দায়ী কে? (১৯৮৭) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে; ম্যাডাম ফুলি (১৯৯৯), চুড়িওয়ালা (২০০১) ও মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা বিভাগে এবং চোরাবালি (২০১২) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বঅভিনেতা বিভাগে পুরস্কার পান। ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আয়োজনে তিনি আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন। শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৫ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন নন্দিত এ অভিনেতা।
সারাহ বেগম কবরী
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী মারা গেছেন চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল। করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। চট্টগ্রামের মেয়ে কবরীর পারিবারিক নাম মিনা পাল। ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় কবরীর। ১৯৬৫ সালে অভিনয় করেন ‘জলছবি’ ও ‘বাহানা’য়, ১৯৬৮ সালে ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘আবির্ভাব’, ‘বাঁশরি’, ‘যে আগুনে পুড়ি’। ১৯৭০ সালে ‘দীপ নেভে নাই’, ‘দর্পচূর্ণ, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘বিনিময়’ ছবিগুলো। স্বাধীনতা-পরবর্তী ১৯৭৩ সালে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবিতে তার অভিনয় দর্শকদের স্মৃতিতে এখনো অমলিন। ১৯৭৫ সালে নায়ক ফারুকের সঙ্গে ‘সুজন সখী’ ছবিতে অভিনয় করে ছাড়িয়ে যান আগের সব জনপ্রিয়তাকে। পরের গল্পটা শুধুই এগিয়ে যাওয়ার। ষাট ও সত্তরের দশকের তুমুল জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা কবরী রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সবশেষ সরকারি অনুদানের ‘এই তুমি সেই তুমি’ চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন ঢাকাই ছবির এ ‘মিষ্টি মেয়ে’।
ফকির আলমগীর
২০২১ সালের ২৩ জুলাই মারা যান বাংলাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। গণসংগীত ও দেশীয় পপ সঙ্গীতে ফকির আলমগীরের ব্যাপক অবদান। তিনি ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির, মা বেগম হাবিবুন্নেসা। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে শিল্পী একজন শব্দসৈনিক হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন।
মিতা হক
২০২১ সালের ১১ এপ্রিল মারা যান রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হক। প্রথমে করোনা আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেও কদিন বাদে হার্ট অ্যাটাক হয় মিতা হকের। এরপর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মিতা হকের জন্ম ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায়। তিনি প্রয়াত অভিনেতা খালেদ খানের স্ত্রী। তার চাচা দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রপথিক ও রবীন্দ্র গবেষক ওয়াহিদুল হক। মেয়ে জয়িতাও রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী। মিতা হক প্রথমে চাচা ওয়াহিদুল হক এবং পরে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খান ও সনজীদা খাতুনের কাছে গানের দীক্ষা নেন। সব মিলিয়ে প্রায় ২০০টি রবীন্দ্রসংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন গুণী এ শিল্পী। ভারত থেকে ১৪টি ও বাংলাদেশ থেকে ১০টি একক অ্যালবাম মুক্তি পায় তার। সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৬ সালে শিল্পকলা এবং ২০২০ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন মিতা হক।
ওয়াসিম
ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক ওয়াসিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭১ বছর বয়সে মারা যান গত ১৮ এপ্রিল। এক সময় রাজকীয় সিনেমা মানেই ছিল ওয়াসিমের সরব উপস্থিতি ছিল। ১৯৭৩ সালে মহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ সিনেমায় নায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় করার পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কখনো অ্যাকশন, কখনো ফোক, আবার কখনো রোমান্টিক- সব ঘরানার সিনেমায় নিজেকে যোগ্য নায়ক হিসেবে প্রমাণ করেছিলেন তিনি।
জানে আলম
জানে আলমের একটি গান খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। গানটি হচ্ছে ‘একটি গন্ধমেরও লাগিয়া’। এ ছাড়া, আরও অসংখ্য গান করে মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন শিল্পী হিসেবে। গত ২ মার্চ তিনি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে বিদায় নেন।
রাবেয়া খাতুন
চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি একুশে পদক বিজয়ী বাংলাদেশি লেখিকা রাবেয়া খাতুন মারা যান। বেশ কিছুদিন বাধ্যর্কজনিত রোগে ভুগে বনানীতে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকার বিক্রমপুরে মামা বাড়িতে রাবেয়ার জন্ম। পৈতৃক ভিটা মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর গ্রামে৷ রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়ে হওয়ায় বিদ্যালয়ের গ-ির পর তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। ব্যক্তিগত জীবনে সম্পাদক ও চিত্রপরিচালক এটিএম ফজলুল হকের সাথে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয় ১৯৫২ সালের ২৩ জুলাই। তাদের চার সন্তানের মধ্যে রয়েছেন ফরিদুর রেজা সাগর, কেকা ফেরদৌসী, ফরহাদুর রেজা প্রবাল ও ফারহানা কাকলী। কর্মজীবনে রাবেয়া খাতুন রচিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক জনপ্রিয় উপন্যাস ‘মেঘের পর মেঘ’ অবলম্বনে বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র মেঘের পরে মেঘ। ২০১১ সালে তার আরেকটি উপন্যাস ‘মধুমতি’ অবলম্বনে পরিচালক শাহজাহান চৌধুরী একই শিরোনামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। লেখালেখির পাশাপাশি রাবেয়া খাতুন শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা করেছেন।
শাহীন আলম
চলতি বছরের ৮ মার্চ মারা যান চলচ্চিত্র অভিনেতা শাহীনূর আলম শাহীন (শাহীন আলম)। দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও ডায়াবেটিস রোগে ভুগে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে অভিনয়ে হাতেখড়ির পর ১৯৮৬ সালের এফডিসির নতুন মুখের সন্ধানে চলচ্চিত্রে ডাক পান। ১৯৯১ সালে তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘মায়ের কান্না’। প্রায় দেড়শ ছবিতে অভিনয় করা শাহীন আলম শেষজীবনে কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন।
ড. ইনামুল হক
নাট্যকার ও অভিনেতা ড. ইনামুল হক ১১ অক্টোবর ঢাকায় মারা যান। ফেনীর সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে ১৯৪৩ সালের ৭ মার্চ জন্ম ইনামুল হকের। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি শেষ করে ১৯৬৫ সালে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) রসায়ন বিভাগে। ১৯৮৭ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন আন্দোলনমুখী নাটকে অংশ নেন ইনামুল হক। ১৯৭০ সালে আইয়ুব খানের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তৎকালীন অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন নাট্যচর্চাকে হাতিয়ার করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সৃজনীর ব্যানারে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে ট্রাকে ট্রাকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে পথনাটক করেন ইনামুল। তার ১৮টি নাটক বিভিন্ন নাট্যপত্র, বিশেষ ম্যাগাজিন এবং বই আকারে প্রকাশ হয়েছে। ইনামুল হকের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে নির্জন সৈকতে, গৃহবাসী, মুক্তিযুদ্ধ নাটকসমগ্র। ড. ইনামুল হকের দাম্পত্যসঙ্গী বরেণ্য নাট্যজন লাকী ইনাম। তাদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক ও প্রৈতি হক।
মাহমুদ সাজ্জাদ
কলেজ জীবন থেকেই মঞ্চনাটকে যুক্ত ছিলেন মাহমুদ সাজ্জাদ। । তারপর টেলিভিশন নাটকেও ব্যস্ততা বাড়িয়ে দেন। টেলিভিশনে তার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘সকাল-সন্ধ্যা’। এরপর তিনি সহস্রাধিক নাটকে অভিনয় করে দর্শক মন জয় করেন। এ বছরে ২৪ অক্টোবর বেলা সাড়ে তিনটায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। উল্লেখ, জহির রায়হান পরিচালিত ‘সংসার’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন মাহমুদ সাজ্জাদ। পরে তিনি খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘ঝড়ের পাখি’, ‘আপন পর’, আজিজ আজহারের ‘চোখের জলে’-সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক পরিচিতি পান।
ইন্দ্র মোহন রাজবংশী
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী ৭ এপ্রিল ২০২১ মার যান। তিনি একজন বাংলাদেশী লোকগানের শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, জারি, সারি, মুর্শিদি ইত্যাদি গাইতেন। পাশাপাশি রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীও ছিলেন। এছাড়াও ‘ঢাকা ৮৬’ খ্যাত চলচ্চিত্রকার শফিকুর রহমান, ‘দেবদাস’ সিনেমার প্রযোজক কামরুল, বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আনোয়ারার স্বামী মহিতুল ইসলাম, অভিনেতা শামীম ভিস্তি, নৃত্য পরিচালক সুমন রহমান, কাইয়ুম চৌধুরীর স্ত্রী শিল্পী তাহেরা চৌধুরী, সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ, নাট্যপরিচালক ও অভিনেতা কায়েস চৌধুরী এ বছর পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

২০২১ সালে যাদের হারিয়েছি

আপডেট সময় : ১১:১৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১

বিনোদন ডেস্ক : সারা পৃথিবীতেই বিষাদের বছর হিসেবে ইতিহাসে থেকে যাবে ২০২০ সাল। করোনাভাইরাস তা-বের সাক্ষী হয়ে। সেই রেশ ছিল ২০২১ সালেও। মহামারি করোনার শিকার হয়ে মারা গেছেন সারা দুনিয়ার অনেক তারকা। বাংলাদেশেও শোকের পর শোক নেমেছে করোনার কারণে। এছাড়াও নানা রকম অসুখে ভুগে মারা গেছেন নানা অঙ্গনের অনেক তারকা। ২০২১ সালে আমরা চিরতরে হারিয়ে ফেলেছি যেসব তারকা ও গুণী মানুষদের-
অভিনেতা মজিবুর রহমান দিলু : বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা মজিবুর রহমান দিলু মারা যান গত ১৯ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে। তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ভর্তি ছিলেন রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বিটিভিতে প্রচারিত শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সারের ‘সংশপ্তক’ নাটকে ‘বড় মালু’ চরিত্রে অভিনয় করে আলোচিত হয়েছিলেন মুজিবুর রহমান দিলু।
এ টি এম শামসুজ্জামান
আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান (এটিএম শামসুজ্জামান) চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি মারা যান। পরিপাকতন্ত্রের জটিলতা নিয়ে কয়েক মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠার পর সূত্রাপুরের নিজ বাসভবনে নেওয়া হলে সেখানে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই বরেণ্য অভিনেতা। একজন অভিনেতা, পরিচালক ও লেখক হিসেবে বেশ পরিচিত ছিলেন এটিএম। অভিনয়ের জন্য আজীবন সম্মাননাসহ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ছয়বার। এর মধ্যে দায়ী কে? (১৯৮৭) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে; ম্যাডাম ফুলি (১৯৯৯), চুড়িওয়ালা (২০০১) ও মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা বিভাগে এবং চোরাবালি (২০১২) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বঅভিনেতা বিভাগে পুরস্কার পান। ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আয়োজনে তিনি আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন। শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৫ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন নন্দিত এ অভিনেতা।
সারাহ বেগম কবরী
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী মারা গেছেন চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল। করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। চট্টগ্রামের মেয়ে কবরীর পারিবারিক নাম মিনা পাল। ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় কবরীর। ১৯৬৫ সালে অভিনয় করেন ‘জলছবি’ ও ‘বাহানা’য়, ১৯৬৮ সালে ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘আবির্ভাব’, ‘বাঁশরি’, ‘যে আগুনে পুড়ি’। ১৯৭০ সালে ‘দীপ নেভে নাই’, ‘দর্পচূর্ণ, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘বিনিময়’ ছবিগুলো। স্বাধীনতা-পরবর্তী ১৯৭৩ সালে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবিতে তার অভিনয় দর্শকদের স্মৃতিতে এখনো অমলিন। ১৯৭৫ সালে নায়ক ফারুকের সঙ্গে ‘সুজন সখী’ ছবিতে অভিনয় করে ছাড়িয়ে যান আগের সব জনপ্রিয়তাকে। পরের গল্পটা শুধুই এগিয়ে যাওয়ার। ষাট ও সত্তরের দশকের তুমুল জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা কবরী রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সবশেষ সরকারি অনুদানের ‘এই তুমি সেই তুমি’ চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন ঢাকাই ছবির এ ‘মিষ্টি মেয়ে’।
ফকির আলমগীর
২০২১ সালের ২৩ জুলাই মারা যান বাংলাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। গণসংগীত ও দেশীয় পপ সঙ্গীতে ফকির আলমগীরের ব্যাপক অবদান। তিনি ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির, মা বেগম হাবিবুন্নেসা। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে শিল্পী একজন শব্দসৈনিক হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন।
মিতা হক
২০২১ সালের ১১ এপ্রিল মারা যান রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হক। প্রথমে করোনা আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেও কদিন বাদে হার্ট অ্যাটাক হয় মিতা হকের। এরপর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মিতা হকের জন্ম ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায়। তিনি প্রয়াত অভিনেতা খালেদ খানের স্ত্রী। তার চাচা দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রপথিক ও রবীন্দ্র গবেষক ওয়াহিদুল হক। মেয়ে জয়িতাও রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী। মিতা হক প্রথমে চাচা ওয়াহিদুল হক এবং পরে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খান ও সনজীদা খাতুনের কাছে গানের দীক্ষা নেন। সব মিলিয়ে প্রায় ২০০টি রবীন্দ্রসংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন গুণী এ শিল্পী। ভারত থেকে ১৪টি ও বাংলাদেশ থেকে ১০টি একক অ্যালবাম মুক্তি পায় তার। সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৬ সালে শিল্পকলা এবং ২০২০ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন মিতা হক।
ওয়াসিম
ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক ওয়াসিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭১ বছর বয়সে মারা যান গত ১৮ এপ্রিল। এক সময় রাজকীয় সিনেমা মানেই ছিল ওয়াসিমের সরব উপস্থিতি ছিল। ১৯৭৩ সালে মহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ সিনেমায় নায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় করার পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কখনো অ্যাকশন, কখনো ফোক, আবার কখনো রোমান্টিক- সব ঘরানার সিনেমায় নিজেকে যোগ্য নায়ক হিসেবে প্রমাণ করেছিলেন তিনি।
জানে আলম
জানে আলমের একটি গান খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। গানটি হচ্ছে ‘একটি গন্ধমেরও লাগিয়া’। এ ছাড়া, আরও অসংখ্য গান করে মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন শিল্পী হিসেবে। গত ২ মার্চ তিনি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে বিদায় নেন।
রাবেয়া খাতুন
চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি একুশে পদক বিজয়ী বাংলাদেশি লেখিকা রাবেয়া খাতুন মারা যান। বেশ কিছুদিন বাধ্যর্কজনিত রোগে ভুগে বনানীতে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকার বিক্রমপুরে মামা বাড়িতে রাবেয়ার জন্ম। পৈতৃক ভিটা মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর গ্রামে৷ রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়ে হওয়ায় বিদ্যালয়ের গ-ির পর তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। ব্যক্তিগত জীবনে সম্পাদক ও চিত্রপরিচালক এটিএম ফজলুল হকের সাথে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয় ১৯৫২ সালের ২৩ জুলাই। তাদের চার সন্তানের মধ্যে রয়েছেন ফরিদুর রেজা সাগর, কেকা ফেরদৌসী, ফরহাদুর রেজা প্রবাল ও ফারহানা কাকলী। কর্মজীবনে রাবেয়া খাতুন রচিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক জনপ্রিয় উপন্যাস ‘মেঘের পর মেঘ’ অবলম্বনে বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র মেঘের পরে মেঘ। ২০১১ সালে তার আরেকটি উপন্যাস ‘মধুমতি’ অবলম্বনে পরিচালক শাহজাহান চৌধুরী একই শিরোনামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। লেখালেখির পাশাপাশি রাবেয়া খাতুন শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতা করেছেন।
শাহীন আলম
চলতি বছরের ৮ মার্চ মারা যান চলচ্চিত্র অভিনেতা শাহীনূর আলম শাহীন (শাহীন আলম)। দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও ডায়াবেটিস রোগে ভুগে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে অভিনয়ে হাতেখড়ির পর ১৯৮৬ সালের এফডিসির নতুন মুখের সন্ধানে চলচ্চিত্রে ডাক পান। ১৯৯১ সালে তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘মায়ের কান্না’। প্রায় দেড়শ ছবিতে অভিনয় করা শাহীন আলম শেষজীবনে কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন।
ড. ইনামুল হক
নাট্যকার ও অভিনেতা ড. ইনামুল হক ১১ অক্টোবর ঢাকায় মারা যান। ফেনীর সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে ১৯৪৩ সালের ৭ মার্চ জন্ম ইনামুল হকের। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি শেষ করে ১৯৬৫ সালে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) রসায়ন বিভাগে। ১৯৮৭ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন আন্দোলনমুখী নাটকে অংশ নেন ইনামুল হক। ১৯৭০ সালে আইয়ুব খানের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তৎকালীন অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন নাট্যচর্চাকে হাতিয়ার করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সৃজনীর ব্যানারে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে ট্রাকে ট্রাকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে পথনাটক করেন ইনামুল। তার ১৮টি নাটক বিভিন্ন নাট্যপত্র, বিশেষ ম্যাগাজিন এবং বই আকারে প্রকাশ হয়েছে। ইনামুল হকের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে নির্জন সৈকতে, গৃহবাসী, মুক্তিযুদ্ধ নাটকসমগ্র। ড. ইনামুল হকের দাম্পত্যসঙ্গী বরেণ্য নাট্যজন লাকী ইনাম। তাদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক ও প্রৈতি হক।
মাহমুদ সাজ্জাদ
কলেজ জীবন থেকেই মঞ্চনাটকে যুক্ত ছিলেন মাহমুদ সাজ্জাদ। । তারপর টেলিভিশন নাটকেও ব্যস্ততা বাড়িয়ে দেন। টেলিভিশনে তার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘সকাল-সন্ধ্যা’। এরপর তিনি সহস্রাধিক নাটকে অভিনয় করে দর্শক মন জয় করেন। এ বছরে ২৪ অক্টোবর বেলা সাড়ে তিনটায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। উল্লেখ, জহির রায়হান পরিচালিত ‘সংসার’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন মাহমুদ সাজ্জাদ। পরে তিনি খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘ঝড়ের পাখি’, ‘আপন পর’, আজিজ আজহারের ‘চোখের জলে’-সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক পরিচিতি পান।
ইন্দ্র মোহন রাজবংশী
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী ৭ এপ্রিল ২০২১ মার যান। তিনি একজন বাংলাদেশী লোকগানের শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, জারি, সারি, মুর্শিদি ইত্যাদি গাইতেন। পাশাপাশি রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীও ছিলেন। এছাড়াও ‘ঢাকা ৮৬’ খ্যাত চলচ্চিত্রকার শফিকুর রহমান, ‘দেবদাস’ সিনেমার প্রযোজক কামরুল, বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আনোয়ারার স্বামী মহিতুল ইসলাম, অভিনেতা শামীম ভিস্তি, নৃত্য পরিচালক সুমন রহমান, কাইয়ুম চৌধুরীর স্ত্রী শিল্পী তাহেরা চৌধুরী, সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ, নাট্যপরিচালক ও অভিনেতা কায়েস চৌধুরী এ বছর পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।