ঝালকাঠি সংবাদদাতা : ঢাকা থেকে নানা-নানিকে নিয়ে বরগুনার বাড়িতে ফিরছিলেন তিন ভাইবোন; পথে ঝালকাঠিতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকা-ের পর থেকে ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন পাঁচজনই। চার দিন ধরে তাদের খোঁজ না পেয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন ৫০ বছর বয়সী ফাতেমা শাহিদুন। গতকাল সোমবার সকালে তিনি ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে আসেন অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে। এই অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের যে বয়সের কথা তিনি শুনেছেন, তার বড় ছেলের বয়সও সে রকমই। ফাতেমা বলেন, তার বাবা মুজফ্ফর হাওলাদার আর মা আমেনা বেগম সৌদি আরব থাকতেন। সম্প্রতি তারা দেশে ফেরেন। আমার বাবা-মাকে আনতে গেছিল আমার তিন ছেলেমেয়ে। বড় ছেলে ওবায়দুল (৩০), বড় মেয়ে কুলসুম (২২), আর ছোট মেয়ে আয়শা (১৯)। তারা তাদের নানা-নানিকে নিয়ে ঢাকা থেকে ফিরছিল। শুক্রবার সকালে তাদের বাড়ি ফেরার কথা। তারা কেউ ফেরে নাই।” পরে তিনি শুনতে পান লঞ্চে আগুন লাগার খবর। সেই থেকে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বাদুরতলা গ্রামের এই স্বজন এবং তাদের অন্য স্বজনরা প্রিজনদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন সম্ভাব্য সব জায়গায়। যদিও ৩৩ জনকে শনাক্ত করতে না পেরে গণকবর দেওয়া হয়েছে ইতোমধ্যেই। নিখোঁজদের সন্ধান পেতে চার দিন ধরে অনেক স্বজন ঝালকাঠি শহরে অবস্থান করছেন। ঝালকাঠি পুলিশের কাছে নিখোঁজ ৪১ জনের নাম দিয়েছেন স্বজনরা। গতকাল সোমবার ঝালকাঠি পৌর মিনিপার্কে ডিএনএ টেস্টের জন্য নিখোঁজদের স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ শুরু করেছে সিআইডি পুলিশ। তাদের পক্ষ থেকে শহরে সকালে মাইকিং করা হয়। ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে ঝালকাঠিতে সুগন্ধা নদীতে শুক্রবার ভোরের দিকে লঞ্চটিতে আগুন লাগে। এতে তিন ডজনের বেশি মানুষের প্রাণ যায়। নিখোঁজ হন অর্ধশতাধিক। তাছাড়া দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে আছেন আরও অর্ধশতাধিক।