নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় এক গৃহবধূ ও রিকশা চালকসহ তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে কামরাঙ্গীরচরে স্যানিটারি মিস্ত্রি উজ্জ্বল আকন (২৭), মুগদায় রিকশাচালক মো. মাসুম (৩০) ও যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে সুমি আক্তারের (২৪) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।
গতকাল বুধবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে পৃথক তিন জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, কামরাঙ্গীরচর রহমতবাগে একটি বাসায় স্যানিটারি মিস্ত্রি উজ্জ্বল আকন (২৭) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কামরাঙ্গীরচর থানার উপ-পরিদর্শক কমলেশ চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, “পারিবারিক কলহে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমানে মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটায় ভাড়া বাসার শয়নকক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় উজ্জ্বল। পরে খবর পেয়ে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।” মৃতের বড়ভাই সরোয়ার আকন জানান, যতটুকু শুনেছি—স্ত্রী রুমা বেগমের সঙ্গে ঝগড়ায় অভিমানে আত্মহত্যা করেছে উজ্জ্বল। মৃত উজ্জ্বল পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার ভিকাখালি গ্রামের মৃত কাদের আকনের ছেলে। অপরদিকে মুগদায় মো. মাসুম (৩০) নামের এক রিকশাচালক সুদের টাকা নিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে হতাশায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মৃত মাসুমের স্ত্রী ময়না বেগম জানান, মাসুম বেশ কিছুদিন আগে একজনের কাছ থেকে ৭৫ হাজার টাকা সুদে নিয়েছিল রিক্সা কিনে কাঁচামাল ব্যবসা করবে বলে। সেই টাকা সুদ-আসলে প্রায় আড়াই লাখ হওয়ায় তারা টাকার জন্য চাপ দেয়, সে কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় মুগদা মান্ডার ভাড়া বাসায় দরজা বন্ধ করে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় মাসুম। মুগদা থানার উপ-পরিদর্শক আলি আহমেদ জানান, প্রাথমিকভাবে জানা যায় মাসুম হতাশাগ্রস্ত হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে। মৃত মাসুম ঢাকার বংশাল আলুবাজার এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা মৃত হাসেম উদ্দিনের ছেলে। বর্তমানে ৩৭২ দক্ষিণ মান্ডায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকত। অন্য ঘটনায়, যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে সুমি আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধূ পারিবারিক কলহে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
মৃতের বড় বোন স্বপ্না আক্তার জানান, স্বামী সুমন যৌতুকের টাকার জন্য সুমিকে মারধর করতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মঙ্গলবার দুপুরে গলায় ফাঁস দেয় সুমি। পরে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ খবর পেয়ে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক জুয়েল হোসেন খান বলেন, “পারিবারিক কলহে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সুমি।” খবর পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় মৃতদেহ উদ্ধার করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে ও তদন্ত সাপেক্ষে মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে। সুমি লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার সাইচা গ্রামের থাই গ¬াস মিস্ত্রি মো. সুমনের স্ত্রী। একই এলাকার মৃত আসাদুল্লাহের মেয়ে সুমি। চার ভাই, চার বোনের মধ্যে সে ছিল ছোট। দুই কন্যা সন্তানের জননী ছিলেন সুমি।
রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় নারীসহ তিনজনের লাশ উদ্ধার
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ