চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : বাংলাদেশে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগেই প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ার ‘সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে’ মন্তব্য তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ উদ্বেগ দেখান। মাহবুব তালুকদার বলেন, “একটা ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে যে ৩৬০ জন চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, পত্রিকা মতে। আর ১৬০০ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন অন্যান্য পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। এটা একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। তো আমাদেরকে নতুন করে চিন্তা করতে হবে।”
উদ্বেগের কারণ ব্যাখ্যা করে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াকে উৎসাহিত করা ‘বোধহয় সম্ভব নয়’, ‘সমীচীনও নয়’।
“নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিবর্তন করলে এ অবস্থা থেকে আমরা উদ্ধার পেতে পারি কি না। সেইগুলি আগামীতে যারা আসবেন নির্বাচন কমিশনে, তারা অবশ্যই ভেবে দেখবেন।”
বিনা লড়াইয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আরও ৫২ ইউপি: চতুর্থ ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৪৮ জন চেয়ারম্যান লাকসামে বিনা ভোটে কীভাবে পার, জানালেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সফলতার বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুব তালুকদার বলেন, “একেক জনের একেক রকম অনুভূতি, আমার অনুভূতি এক রকম। আমার আরও চারজন সহকর্মী আছেন, তাদের অনুভূতি অন্যরকম। আমাদের ব্যক্তিগত অনুভূতির কোনো মূল্যায়ন করা এখানে উচিত নয়।
“আমাদের কমিশন যে অনুভূতি ব্যক্ত করেছে তা আমারও। কারণ একটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে আমি বিশ্বাস করি। এককভাবে কোনও বক্তব্য এখানে রাখতে চাই না।”
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শুরু হওয়া সংলাপে কোনো সুপারিশ করবেন কিনা জানতে চাইলে এ কমিশনার বলেন, “এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার জন্য সমীচীন হবে না মনে হয়। যদি কখনও কেউ মনে করেন যে আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে তারা কিছু গ্রহণ করবেন, তখন আমরা হয়ত আমাদের অভিজ্ঞতা বলব। এ মুহূর্তে কিছু বলা উচিত হবে না।”
এই নির্বাচন কমিশনের ৫৫ দিন মেয়াদ থাকার কথা জানিয়ে মাহবুব তালুকদার বলেন, “তার আগে আমরা আমাদের দায়িত্ব সুসম্পন্ন করতে চাই। বাংলায় প্রবাদ আছে, যার শেষ ভালো তার সব ভালো। কাজেই এই শেষ ভালোটাকে আমরা সব ভালোর মধ্যে নিয়ে আসতে চাই।”
সভার আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, “ষষ্ঠ ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে এবং আমরা একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েছি যে ষষ্ঠ ধাপের নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করব সবর্ত্র। সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা আরও সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছি।” চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার কামরুল হাসান, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামন, নগর পুলিশের কমিশনার সালেহ মো তানভীরসহ চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা প্রশাসকরা ও নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিনা লড়াইয়ে জয়ের সংস্কৃতি চিন্তার বিষয়: মাহবুব তালুকদার
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ