ঢাকা ১১:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

পেটে কাঁচি রেখে সেলাই: কাউকে দায়ী করছে না তদন্ত কমিটি

  • আপডেট সময় : ০১:২৪:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণীর পেটে অস্ত্রোপচারের পর ভেতরে কাঁচি রেখে সেলাই করে দেওয়ার ঘটনায় সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে দায়ী করছে না তদন্ত কমিটি; কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হচ্ছে না।
মেডিকেলের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুল হাসান নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি সোমবার হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানের কাছে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বে এমন ঘটনা ‘নতুন নয়’, ভবিষ্যতে ‘আরও সতর্ক’ হওয়া দরকার।
এ তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন গাইনি বিভাগের অধ্যাপক কানিজ ফাতেমা এবং সার্জারি বিভাগের মো. কামরুজ্জামান। গত বছরের ৩ মার্চ মনিরা খাতুন নামের ১৮ বছর বয়সী ওই নারীর প্রথম অস্ত্রোপচার হয়। সম্প্রতি এক্সরেতে পেটে কাঁচি থেকে যাওয়ার বিষয়টি ধরা পড়লে ১১ ডিসেম্বর ওই হাসপাতালেই আবার অস্ত্রোপচার করে কাঁচিটি বের করা হয়। পরে ১৯ ডিসেম্বর গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।
গত সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার কথা জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, “প্রতিবেদনে এ ঘটনার জন্য কে দায়ী, তা সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়নি। কিংবা কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়নি।”
গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝুটিগ্রামের খাইরুল মিয়ার মেয়ে মনিরা খাতুন পেটে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে ২০২০ সালের মার্চে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ৩ মার্চ অস্ত্রোপচারের সময় ছয় ইঞ্চি লম্বা কাঁচি মনিরার পেটের মধ্যে রেখে সেলাই করা হয়। এরপর মনিরা প্রায়ই পেটে ব্যাথা অনুভব করতেন। সম্প্রতি এক্সরে করে বিষয়টি ধরা পড়লে পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়। মেডিকেলের সহযোগী অধ্যাপক মোল্লা সরফউদ্দিনের অধীনে ওই অস্ত্রোপচারের সময় আরও তিন-চারজন চিকিৎসক অংশ নেন জানিয়ে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, “কার গাফিলতিতে এ ঘটনা ঘটেছে, তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন জার্নালের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ জাতীয় ঘটনা অপ্রতুল নয়। এমন নয়, এটিই প্রথম ঘটেছে। এর আগেও বিভিন্ন দেশে অস্ত্রোপচারের সময় এ জাতীয় ঘটনা ঘটেছে।”
ভবিষ্যতে অস্ত্রপচারের সময় অধিক সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। হাসপাতালে ভর্তি মনিরার শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে জানালেও আর কত দিন তার ভর্তি থাকা লাগবে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি পরিচালক।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পেটে কাঁচি রেখে সেলাই: কাউকে দায়ী করছে না তদন্ত কমিটি

আপডেট সময় : ০১:২৪:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১

ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণীর পেটে অস্ত্রোপচারের পর ভেতরে কাঁচি রেখে সেলাই করে দেওয়ার ঘটনায় সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে দায়ী করছে না তদন্ত কমিটি; কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হচ্ছে না।
মেডিকেলের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুল হাসান নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি সোমবার হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানের কাছে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বে এমন ঘটনা ‘নতুন নয়’, ভবিষ্যতে ‘আরও সতর্ক’ হওয়া দরকার।
এ তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন গাইনি বিভাগের অধ্যাপক কানিজ ফাতেমা এবং সার্জারি বিভাগের মো. কামরুজ্জামান। গত বছরের ৩ মার্চ মনিরা খাতুন নামের ১৮ বছর বয়সী ওই নারীর প্রথম অস্ত্রোপচার হয়। সম্প্রতি এক্সরেতে পেটে কাঁচি থেকে যাওয়ার বিষয়টি ধরা পড়লে ১১ ডিসেম্বর ওই হাসপাতালেই আবার অস্ত্রোপচার করে কাঁচিটি বের করা হয়। পরে ১৯ ডিসেম্বর গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।
গত সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার কথা জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, “প্রতিবেদনে এ ঘটনার জন্য কে দায়ী, তা সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়নি। কিংবা কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়নি।”
গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝুটিগ্রামের খাইরুল মিয়ার মেয়ে মনিরা খাতুন পেটে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে ২০২০ সালের মার্চে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ৩ মার্চ অস্ত্রোপচারের সময় ছয় ইঞ্চি লম্বা কাঁচি মনিরার পেটের মধ্যে রেখে সেলাই করা হয়। এরপর মনিরা প্রায়ই পেটে ব্যাথা অনুভব করতেন। সম্প্রতি এক্সরে করে বিষয়টি ধরা পড়লে পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়। মেডিকেলের সহযোগী অধ্যাপক মোল্লা সরফউদ্দিনের অধীনে ওই অস্ত্রোপচারের সময় আরও তিন-চারজন চিকিৎসক অংশ নেন জানিয়ে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, “কার গাফিলতিতে এ ঘটনা ঘটেছে, তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন জার্নালের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ জাতীয় ঘটনা অপ্রতুল নয়। এমন নয়, এটিই প্রথম ঘটেছে। এর আগেও বিভিন্ন দেশে অস্ত্রোপচারের সময় এ জাতীয় ঘটনা ঘটেছে।”
ভবিষ্যতে অস্ত্রপচারের সময় অধিক সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। হাসপাতালে ভর্তি মনিরার শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে জানালেও আর কত দিন তার ভর্তি থাকা লাগবে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি পরিচালক।