ঢাকা ১২:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

ঢাবি শিক্ষার্থী এলমা হত্যার বিচার দাবি শিক্ষক-সহপাঠীদের

  • আপডেট সময় : ১২:২৮:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃত্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এলমা চৌধুরী মেঘলার মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুতবিচার দাবি করেছেন তার সহপাঠী ও শিক্ষকরা।
গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এই দাবি জানান।
মানববন্ধনে নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী, সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শামীম বানু, প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং এলমার সহপাঠীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তারা অভিযোগ করেন, এলমাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা এর নিন্দা জানিয়ে দ্রুতবিচার দাবি করেন।
মানববন্ধনে নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপারসন রেজওয়ানা চৌধুরী বলেন, আমাদের ছাত্রী, আমাদের মেয়ে এলমার স্বাভাবিক মৃত্যু হতে পারে না, স্বাভাবিক হলে শরীরে এত দাগ হবে কেন। হাসপাতালে যাওয়ার পর তার এই দৃশ্যটা দেখে আমি মানতে পারছি না। তার স্বামীকে দেখেও মনে হয়েছে অস্বাভাবিক এবং কথাবার্তা খুবই অসংলগ্ন। আমার বিভাগের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত এবং সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এসময় প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, এটি স্পষ্ট একটি হত্যা। এলমার পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন, তাকে মানসিকভাবেও নির্যাতন করা হয়েছে। এটি খুবই মর্মান্তিক। আমরা একটি সুস্থ এবং দ্রুত তদন্তের দাবি রাখি। এই হত্যাকারীরা সমাজের দুর্বৃত্ত, এরা সাধু সাজার চেষ্টা করে। এই ধরনের অপমৃত্যু বন্ধ হোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এলমার পরিবারের পাশে আছে।
কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন এলমার হত্যাকা-ের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন বলেন, এলমার হত্যাকা-ের ঘটনাটি শুধু মর্মান্তিক নয় নৃশংসও বটে। আমরা এর দ্রুত বিচার দাবি করছি। কেননা, আমাদের দেশে বিচার প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘ হয়। এলমার স্বামী প্রভাবশালী বলে আমরা জেনেছি। অনেক সময় প্রভাবশালী হওয়ার কারণে হত্যাকা-ের সুষ্ঠু বিচার হয় না। তবে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলার সাথে জড়িত বিভাগটি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবেন এই প্রত্যাশা রাখি।
সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শামীম বানু বলেন, সে আমার হলের একজন ভালো ও মেধাবী ছাত্রী ছিল। বিয়ে করার পরে সে তার রুমমেটদের সাথে যোগাযোগ করতে পারতো না। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত এবং আমরা এটার সুষ্ঠু বিচার দাবি করি। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া।
এলমার সহপাঠী আরিফুল ইসলাম বলেন, এলমা খুবই বন্ধুসুলভ ছিল। রক্ষণশীল এক প্রবাসী ব্যক্তির সাথে ফেসবুকে পরিচিত হয়ে ঘরোয়াভাবে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমরা দেখতে পাই সে তার স্বাভাবিক জীবন থেকে কেমন দূরে সরে যায়। আমাদের সাথে মেলামেশা করতে তার স্বামী তাকে বাধা দিত। সে ঘর হতে বের হতে পারতো না। বের হলেও তার সাথে একজন গার্ড দিয়ে রাখতো এবং সে কোথায় কী করছে সব কিছু তার স্বামী ভিডিও কলের মাধ্যমে সবকিছু তদারকি করতো।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকাল চারটার দিকে রাজধানীর বনানীতে স্বামীর বাসায় মারা যান ইলমা। তার শরীরে আঘাতের অনেক চিহ্ন আছে বলে পুলিশ ও তার সহপাঠীদের সূত্রে জানা গেছে। পরিবার ও সহপাঠীরা হত্যা দাবি করলেও এলমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় বনানী পুলিশ তার প্রবাসী স্বামীকে আটক করেছে।
শরীরে মিলেছে জখমের চিহ্ন, স্বামী ইফতেখার ৩ দিনের রিমান্ডে : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইলমা চৌধুরী মেঘলার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পরে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেলে ইলমা চৌধুরীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. ফারহানা ইয়াসমিন। মর্গ সূত্রে জানা গেছে, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার জন্য ইলমার ব্লাড, নেক টিস্যু, ভিসেরাসহ প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রাজধানীর বনানী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গুলশান আরা বানু বলেন, ‘ইলমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। শরীরে রক্ত জমাট বেধে ছোপ ছোপ কালচে দাগ রয়েছে। তার হাত-পা, ঘাড়ে লম্বা-লম্বি এবং থুতনিতে কালচে জখম ছিল।’ তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তে সব ধরনের নমুনা নেওয়া হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’ ইলমার চাচা গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, ‘মরদেহ সাভারের ধামরাইয়ে গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হচ্ছে। তাকে ধামরাইয়ের পাঠানটোলা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।’
গত মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর বনানীতে স্বামীর বাসায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন ঢাবি শিক্ষার্থী ইলমা চৌধুরী মেঘলা। পরে তাকে গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ইলমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে এটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চাইছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ইলমার পরিবারের দাবি- ইলমাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ইলমার মা সিমথি চৌধুরী বলেন, ‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ হত্যাকা-ের বিচার চাই।’
এদিকে, ইলমার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে বনানী থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। ইলমার বাবা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় ইলমার স্বামী ইফতেখার আবেদীন, তার মা শিরিন আমিন ও ইফতেখারের পালক বাবা মো. আমিনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ইলমার স্বামী ইফতেখার আবেদীনকে তিনদিনের রিমা-ে নিয়েছে পুলিশ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঢাবি শিক্ষার্থী এলমা হত্যার বিচার দাবি শিক্ষক-সহপাঠীদের

আপডেট সময় : ১২:২৮:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃত্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এলমা চৌধুরী মেঘলার মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুতবিচার দাবি করেছেন তার সহপাঠী ও শিক্ষকরা।
গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এই দাবি জানান।
মানববন্ধনে নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী, সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শামীম বানু, প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং এলমার সহপাঠীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় তারা অভিযোগ করেন, এলমাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা এর নিন্দা জানিয়ে দ্রুতবিচার দাবি করেন।
মানববন্ধনে নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপারসন রেজওয়ানা চৌধুরী বলেন, আমাদের ছাত্রী, আমাদের মেয়ে এলমার স্বাভাবিক মৃত্যু হতে পারে না, স্বাভাবিক হলে শরীরে এত দাগ হবে কেন। হাসপাতালে যাওয়ার পর তার এই দৃশ্যটা দেখে আমি মানতে পারছি না। তার স্বামীকে দেখেও মনে হয়েছে অস্বাভাবিক এবং কথাবার্তা খুবই অসংলগ্ন। আমার বিভাগের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত এবং সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এসময় প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, এটি স্পষ্ট একটি হত্যা। এলমার পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন, তাকে মানসিকভাবেও নির্যাতন করা হয়েছে। এটি খুবই মর্মান্তিক। আমরা একটি সুস্থ এবং দ্রুত তদন্তের দাবি রাখি। এই হত্যাকারীরা সমাজের দুর্বৃত্ত, এরা সাধু সাজার চেষ্টা করে। এই ধরনের অপমৃত্যু বন্ধ হোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এলমার পরিবারের পাশে আছে।
কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন এলমার হত্যাকা-ের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন বলেন, এলমার হত্যাকা-ের ঘটনাটি শুধু মর্মান্তিক নয় নৃশংসও বটে। আমরা এর দ্রুত বিচার দাবি করছি। কেননা, আমাদের দেশে বিচার প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘ হয়। এলমার স্বামী প্রভাবশালী বলে আমরা জেনেছি। অনেক সময় প্রভাবশালী হওয়ার কারণে হত্যাকা-ের সুষ্ঠু বিচার হয় না। তবে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলার সাথে জড়িত বিভাগটি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবেন এই প্রত্যাশা রাখি।
সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শামীম বানু বলেন, সে আমার হলের একজন ভালো ও মেধাবী ছাত্রী ছিল। বিয়ে করার পরে সে তার রুমমেটদের সাথে যোগাযোগ করতে পারতো না। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত এবং আমরা এটার সুষ্ঠু বিচার দাবি করি। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া।
এলমার সহপাঠী আরিফুল ইসলাম বলেন, এলমা খুবই বন্ধুসুলভ ছিল। রক্ষণশীল এক প্রবাসী ব্যক্তির সাথে ফেসবুকে পরিচিত হয়ে ঘরোয়াভাবে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর আমরা দেখতে পাই সে তার স্বাভাবিক জীবন থেকে কেমন দূরে সরে যায়। আমাদের সাথে মেলামেশা করতে তার স্বামী তাকে বাধা দিত। সে ঘর হতে বের হতে পারতো না। বের হলেও তার সাথে একজন গার্ড দিয়ে রাখতো এবং সে কোথায় কী করছে সব কিছু তার স্বামী ভিডিও কলের মাধ্যমে সবকিছু তদারকি করতো।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকাল চারটার দিকে রাজধানীর বনানীতে স্বামীর বাসায় মারা যান ইলমা। তার শরীরে আঘাতের অনেক চিহ্ন আছে বলে পুলিশ ও তার সহপাঠীদের সূত্রে জানা গেছে। পরিবার ও সহপাঠীরা হত্যা দাবি করলেও এলমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় বনানী পুলিশ তার প্রবাসী স্বামীকে আটক করেছে।
শরীরে মিলেছে জখমের চিহ্ন, স্বামী ইফতেখার ৩ দিনের রিমান্ডে : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইলমা চৌধুরী মেঘলার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পরে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেলে ইলমা চৌধুরীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. ফারহানা ইয়াসমিন। মর্গ সূত্রে জানা গেছে, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার জন্য ইলমার ব্লাড, নেক টিস্যু, ভিসেরাসহ প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রাজধানীর বনানী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গুলশান আরা বানু বলেন, ‘ইলমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। শরীরে রক্ত জমাট বেধে ছোপ ছোপ কালচে দাগ রয়েছে। তার হাত-পা, ঘাড়ে লম্বা-লম্বি এবং থুতনিতে কালচে জখম ছিল।’ তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তে সব ধরনের নমুনা নেওয়া হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’ ইলমার চাচা গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, ‘মরদেহ সাভারের ধামরাইয়ে গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হচ্ছে। তাকে ধামরাইয়ের পাঠানটোলা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।’
গত মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর বনানীতে স্বামীর বাসায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন ঢাবি শিক্ষার্থী ইলমা চৌধুরী মেঘলা। পরে তাকে গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ইলমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে এটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চাইছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ইলমার পরিবারের দাবি- ইলমাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ইলমার মা সিমথি চৌধুরী বলেন, ‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ হত্যাকা-ের বিচার চাই।’
এদিকে, ইলমার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে বনানী থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। ইলমার বাবা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় ইলমার স্বামী ইফতেখার আবেদীন, তার মা শিরিন আমিন ও ইফতেখারের পালক বাবা মো. আমিনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ইলমার স্বামী ইফতেখার আবেদীনকে তিনদিনের রিমা-ে নিয়েছে পুলিশ।