ঢাকা ১১:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত: আইনমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০২:১৪:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৮৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যায়’ সম্পৃক্ততার অভিযোগ ‘কল্পনাপ্রসূত’ বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
গতকাল রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, “দেশে কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- হয়নি। বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের বিষয়টি সঠিক নয়।”
গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্র ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচার বহির্ভূত হত্যায়’ সম্পৃক্ততার অভিযোগে বর্তমান পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমদসহ র‌্যাবের সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে আনেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। পরে দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে ‘খুবই দুঃখজনক।’ তবে এই ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে তিনি মনে করেন।
গতকাল রোববার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারকদের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। তিনি বলেন, “যারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাদের একটা কর্তব্য থাকে। সেটা হচ্ছে নিউ প্রসেস এবং যাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে পক্ষকে শোনা। “আমার কাছে যতটুকু তথ্য আছে, যাদের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাদের কথা শোনা হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। আমি এটাও বলতে চাই, যেসব দোষে র‌্যাব ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে দোষী করা হয়েছে, তা কিন্তু ঠিক নয় এবং কল্পনাপ্রসূত।”
২০১৮ সালে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হক। র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে ওই ঘটনার কথাও বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। ২০১৮ সালে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হক। র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে ওই ঘটনার কথাও বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ২০১৮ সালে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হককে ‘বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যার মত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সম্পৃক্ততরার জন্য’ র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও পুলিশের বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমদ এবং কক্সবাজারে র‌্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক মিফতা উদ্দিন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তারা।
আর ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং তাতে সহযোগিতার’ কারণ দেখিয়ে র‌্যাব, এর সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স তোফায়েল মুস্তাফা সরওয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স মোহাম্মদ আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তর। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বেসরকারি সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে, র‌্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ২০০৯ সাল থেকে ছয় শতাধিক গুম এবং ২০১৮ সাল থেকে প্রায় ছয়শ বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- ও নির্যাতনের জন্য দায়ী।”
খালেদা জিয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে ‘অপেক্ষা’ করতে বললেন আইনমন্ত্রী : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আবেদনের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে ‘অপেক্ষা’ করতে বললেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল রোববার ঢাকায় বিচারকদের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন তিনি। খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী এক কথায় বলেন: “একটু অপেক্ষা করুন, দেখবেন।” এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর এ ধরনের একটি কর্মশালা উদ্বোধনের পর আইনমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে ‘আইনি উপায়’ খোঁজার কথা বলেছিলেন। আর চারদিন আগে গুলশানের বাসায় প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার বিষয়ে আবেদন বিবেচনা করতে ‘নজির’ খুঁজছেন। উপমহাদেশে কোনো আদালতে এমন ‘নজির আছে কি না’ তা দেখে ‘কিছুদিনের মধ্যেই’ সিদ্ধান্ত জানাবেন। এরপর গত শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিজের নির্বাচনী এলাকায় এক সমাবেশে খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে চিকিৎসা করানোর দাবি নিয়ে বিএনপির আন্দোলনকে ‘কটাক্ষ’ করেন আইনমন্ত্রী। সে সমাবেশে তিনি বলেন, “একটা কথা আছে নাৃ দাঁড়াইতে দিলে বইতে চায়, বইতে দিলে শুইতে চায়। আর শুইতে দিলে ঘুমাইতে চায়। এখন অবস্থা হইছে এই রকম আর কি। এখন কয় বিদেশে যাইতে দিতে হবে।”
রোববার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ৩০ জন জেলা ও দায়রা জজ এবং মহানগর দায়রা জজদের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনের পর সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেন আইনমন্ত্রীকে। এবার তিনি বললেন অপেক্ষা করার কথা। দুর্নীতির দুই মামলায় দ-িত খালেদা জিয়া এখন সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত। দেড় বছর আগে তার সাময়িক মুক্তির শর্তে বলা হয়েছিল, তাকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা। এর মধ্যে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর আবেদন করা হয় খালেদা জিয়ার পরিবার-স্বজনদের পক্ষ থেকে। গত ২৩ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে স্মারকলিপি দেন বিএনপিপন্থি ১৫ জন আইনজীবী। এ বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় চেয়ে আইনমনন্ত্রী তখন জানান, স্মারকলিপিটি ‘অবশ্যই’ পর্যালোচনা করা হবে। তবে সিদ্ধান্ত ও মতামতের বিষয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত: আইনমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:১৪:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যায়’ সম্পৃক্ততার অভিযোগ ‘কল্পনাপ্রসূত’ বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
গতকাল রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, “দেশে কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- হয়নি। বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের বিষয়টি সঠিক নয়।”
গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্র ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিচার বহির্ভূত হত্যায়’ সম্পৃক্ততার অভিযোগে বর্তমান পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমদসহ র‌্যাবের সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে আনেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। পরে দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে ‘খুবই দুঃখজনক।’ তবে এই ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না বলে তিনি মনে করেন।
গতকাল রোববার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বিচারকদের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। তিনি বলেন, “যারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাদের একটা কর্তব্য থাকে। সেটা হচ্ছে নিউ প্রসেস এবং যাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে পক্ষকে শোনা। “আমার কাছে যতটুকু তথ্য আছে, যাদের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাদের কথা শোনা হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। আমি এটাও বলতে চাই, যেসব দোষে র‌্যাব ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে দোষী করা হয়েছে, তা কিন্তু ঠিক নয় এবং কল্পনাপ্রসূত।”
২০১৮ সালে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হক। র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে ওই ঘটনার কথাও বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। ২০১৮ সালে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় র‌্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হক। র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে ওই ঘটনার কথাও বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ২০১৮ সালে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হককে ‘বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যার মত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সম্পৃক্ততরার জন্য’ র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও পুলিশের বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমদ এবং কক্সবাজারে র‌্যাব-৭ এর সাবেক অধিনায়ক মিফতা উদ্দিন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তারা।
আর ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং তাতে সহযোগিতার’ কারণ দেখিয়ে র‌্যাব, এর সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স তোফায়েল মুস্তাফা সরওয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স মোহাম্মদ আনোয়ার লতিফ খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তর। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বেসরকারি সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে, র‌্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ২০০৯ সাল থেকে ছয় শতাধিক গুম এবং ২০১৮ সাল থেকে প্রায় ছয়শ বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- ও নির্যাতনের জন্য দায়ী।”
খালেদা জিয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে ‘অপেক্ষা’ করতে বললেন আইনমন্ত্রী : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আবেদনের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে ‘অপেক্ষা’ করতে বললেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল রোববার ঢাকায় বিচারকদের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন তিনি। খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী এক কথায় বলেন: “একটু অপেক্ষা করুন, দেখবেন।” এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর এ ধরনের একটি কর্মশালা উদ্বোধনের পর আইনমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে ‘আইনি উপায়’ খোঁজার কথা বলেছিলেন। আর চারদিন আগে গুলশানের বাসায় প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার বিষয়ে আবেদন বিবেচনা করতে ‘নজির’ খুঁজছেন। উপমহাদেশে কোনো আদালতে এমন ‘নজির আছে কি না’ তা দেখে ‘কিছুদিনের মধ্যেই’ সিদ্ধান্ত জানাবেন। এরপর গত শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিজের নির্বাচনী এলাকায় এক সমাবেশে খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে চিকিৎসা করানোর দাবি নিয়ে বিএনপির আন্দোলনকে ‘কটাক্ষ’ করেন আইনমন্ত্রী। সে সমাবেশে তিনি বলেন, “একটা কথা আছে নাৃ দাঁড়াইতে দিলে বইতে চায়, বইতে দিলে শুইতে চায়। আর শুইতে দিলে ঘুমাইতে চায়। এখন অবস্থা হইছে এই রকম আর কি। এখন কয় বিদেশে যাইতে দিতে হবে।”
রোববার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ৩০ জন জেলা ও দায়রা জজ এবং মহানগর দায়রা জজদের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনের পর সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেন আইনমন্ত্রীকে। এবার তিনি বললেন অপেক্ষা করার কথা। দুর্নীতির দুই মামলায় দ-িত খালেদা জিয়া এখন সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত। দেড় বছর আগে তার সাময়িক মুক্তির শর্তে বলা হয়েছিল, তাকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা। এর মধ্যে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর আবেদন করা হয় খালেদা জিয়ার পরিবার-স্বজনদের পক্ষ থেকে। গত ২৩ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে স্মারকলিপি দেন বিএনপিপন্থি ১৫ জন আইনজীবী। এ বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় চেয়ে আইনমনন্ত্রী তখন জানান, স্মারকলিপিটি ‘অবশ্যই’ পর্যালোচনা করা হবে। তবে সিদ্ধান্ত ও মতামতের বিষয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে।