ঢাকা ০৬:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজ দেশে কতটা মানবাধিকার রক্ষা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের!

  • আপডেট সময় : ০২:১১:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১৫০ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার নিয়ে পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নানা তৎপরতা প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়। এবারের মানবাধিকার দিবসেও (১০ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকটি সংস্থা ও ব্যক্তির ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে, সারা বিশ্বের মানবাধিকার নিয়ে যাদের এত মাথাব্যথা তাদের নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা হচ্ছে কতটুকু?
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশেই শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ। সেখানকার কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকদের মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক হত্যায় সবার ওপরে রয়েছে দেশটি। ২০১৮ থেকে ২০২১ এই চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে নজিরবিহীন সব ঘটনা ঘটেছে। রাস্তায় ফেলে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক হত্যার মতো জঘন্য ঘটনাও ঘটছে বারবার। এমনকি এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। এডুকেশন উইক এক প্রতিবেদনে বলছে, ২০১৮ থেকে ২০২১ এই চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ২৮টি স্কুলে হামলা হয়েছে। মারা গেছে আড়াইশরও বেশি শিক্ষার্থী। আহত অবস্থায় পঙ্গুত্ব বরণ করেছে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী।
আর উইকিপিডিয়া বলছে, ২০০০ সালের পরের ২০ বছরে প্রায় ৩০০ বিদ্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। যেখানে মারা গেছে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। এ ব্যাপারে এখনো কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। বিশেষজ্ঞরা মার্কিনীদের এসব প্রোপাগান্ডামূলক প্রতিবেদন থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিচ্ছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদের মতে, কথায় কথায় মানবাধিকারের অভিযোগ তোলা আমেরিকার নিজের দেশে কতটুকু মানবাধিকার রক্ষা হয়- সেটা দেখা উচিত। ইসরায়েল যখন নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে তখন আমেরিকার চোখে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না? সৌদি যখন ইয়েমেনে হত্যাযজ্ঞ চালায় তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না? আমেরিকান সৈন্যরা যখন নির্বিচারে ইরাক ও আফগানিস্তানে নিরীহ জনগণকে হত্যা করে তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না? নিজ দেশে যখন কালোদের গুলি করে হত্যা করা হয় তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না!
কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকা- বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। নিউইয়র্কের রাস্তায় পুলিশের হাতে নির্মমভাবে খুন হন এই কৃষ্ণাঙ্গ। যিনি ছিলেন একেবারেই নিরপরাধ। একই বছরে ফ্লয়েডের মতো ঘটনার শিকার হন ডন্টে রাইট ও আহমাউদ আরবেরি। যারা শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে প্রাণ দেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোড়লিপনা নতুন কিছু নয়। গত কয়েক দশক ধরে দেশটি বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধ-বিগ্রহ বাঁধিয়ে নিজেদের সৈন্য মোতায়েন করে আসছে। আফগানিস্তান ও ইরাকে শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে তারা কী অশান্তি সৃষ্টি করেছে তা বিশ্ববাসী দেখেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মত, বাংলাদেশ অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেটে রয়েছে। নানা আবদার পূরণ না করায় তারা এখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ক্ষুব্ধ। এবারের মানবাধিকার দিবসে র‌্যাব এবং এলিট ফোর্সটির সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটা তারই অংশ। নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা না করে অন্য দেশের মানবাধিকার নিয়ে নাক গলানোর নৈতিক অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের কতটুকু রয়েছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নিজ দেশে কতটা মানবাধিকার রক্ষা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের!

আপডেট সময় : ০২:১১:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২১

প্রত্যাশা ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার নিয়ে পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নানা তৎপরতা প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়। এবারের মানবাধিকার দিবসেও (১০ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকটি সংস্থা ও ব্যক্তির ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে, সারা বিশ্বের মানবাধিকার নিয়ে যাদের এত মাথাব্যথা তাদের নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা হচ্ছে কতটুকু?
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশেই শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ। সেখানকার কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকদের মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক হত্যায় সবার ওপরে রয়েছে দেশটি। ২০১৮ থেকে ২০২১ এই চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে নজিরবিহীন সব ঘটনা ঘটেছে। রাস্তায় ফেলে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক হত্যার মতো জঘন্য ঘটনাও ঘটছে বারবার। এমনকি এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। এডুকেশন উইক এক প্রতিবেদনে বলছে, ২০১৮ থেকে ২০২১ এই চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ২৮টি স্কুলে হামলা হয়েছে। মারা গেছে আড়াইশরও বেশি শিক্ষার্থী। আহত অবস্থায় পঙ্গুত্ব বরণ করেছে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী।
আর উইকিপিডিয়া বলছে, ২০০০ সালের পরের ২০ বছরে প্রায় ৩০০ বিদ্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। যেখানে মারা গেছে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। এ ব্যাপারে এখনো কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। বিশেষজ্ঞরা মার্কিনীদের এসব প্রোপাগান্ডামূলক প্রতিবেদন থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিচ্ছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদের মতে, কথায় কথায় মানবাধিকারের অভিযোগ তোলা আমেরিকার নিজের দেশে কতটুকু মানবাধিকার রক্ষা হয়- সেটা দেখা উচিত। ইসরায়েল যখন নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে তখন আমেরিকার চোখে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না? সৌদি যখন ইয়েমেনে হত্যাযজ্ঞ চালায় তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না? আমেরিকান সৈন্যরা যখন নির্বিচারে ইরাক ও আফগানিস্তানে নিরীহ জনগণকে হত্যা করে তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না? নিজ দেশে যখন কালোদের গুলি করে হত্যা করা হয় তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না!
কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকা- বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। নিউইয়র্কের রাস্তায় পুলিশের হাতে নির্মমভাবে খুন হন এই কৃষ্ণাঙ্গ। যিনি ছিলেন একেবারেই নিরপরাধ। একই বছরে ফ্লয়েডের মতো ঘটনার শিকার হন ডন্টে রাইট ও আহমাউদ আরবেরি। যারা শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে প্রাণ দেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোড়লিপনা নতুন কিছু নয়। গত কয়েক দশক ধরে দেশটি বিভিন্ন অঞ্চলে যুদ্ধ-বিগ্রহ বাঁধিয়ে নিজেদের সৈন্য মোতায়েন করে আসছে। আফগানিস্তান ও ইরাকে শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে তারা কী অশান্তি সৃষ্টি করেছে তা বিশ্ববাসী দেখেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মত, বাংলাদেশ অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেটে রয়েছে। নানা আবদার পূরণ না করায় তারা এখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ক্ষুব্ধ। এবারের মানবাধিকার দিবসে র‌্যাব এবং এলিট ফোর্সটির সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটা তারই অংশ। নিজ দেশে মানবাধিকার রক্ষা না করে অন্য দেশের মানবাধিকার নিয়ে নাক গলানোর নৈতিক অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের কতটুকু রয়েছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।