ঢাকা ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

নারী মুক্তির প্রশ্নে সমাজ এখনো অন্ধকারে: ড. তানিয়া হক

  • আপডেট সময় : ১১:৩৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৯৭ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু প্রতিবেদক : বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের দেখানো পথেই দেশের নারীরা অন্ধকার থেকে ধীরে ধীরে আলোকিত জীবনের দিকে অগ্রযাত্রা করতে সক্ষম হয়েছে। তবে এই অগ্রযাত্রায় বহু অর্জনের ভিড়েও নারীর প্রতি বৈষম্য এখনো উনিশ শতকের সঙ্গে প্রচ- মিল। তাই নারী মুক্তির ক্ষেত্রে প্রায় শতবর্ষ আগে বেগম রোকেয়া যে পরিবর্তন এনেছিলেন তার কোনও বিকল্প এখনো নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ আয়োজিত ‘রোকেয়া স্মারক বক্তৃতামালা ২০২১’-এ এসব কথা বলেন বিভাগের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক। ‘নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় রোকেয়ার ভাবনা: তৎকালীন সমাজ ও বর্তমান প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এই বক্তৃতায় ড. তানিয়া হক সেসময়ের সঙ্গে বর্তমান সময়ে নারীর প্রতি বৈষম্যগুলোর একটি তুলনামূলক চিত্রের বিশ্লেষণ তুলে ধরেন।
গত মঙ্গলবার বিকালে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বিশেষ অতিথি ছিলেন। স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক তানিয়া হক বলেন, ‘বাঙালি জাতির ইতিহাসে সমাজ-সংস্কারক হিসেবে বেগম রোকেয়া অন্যতম। তিনি ছিলেন ব্যক্তিত্ব ও মননে তার সময়ের চেয়ে বহু বহু যুগ এগিয়ে। নারী অধিকারের প্রশ্নে তিনি সমাজের নির্লিপ্ততা তুলে ধরেছিলেন। বিশেষ করে বাংলার মুসলিম সমাজে নারী মুক্তির আলো নিয়ে এসেছিলন।’
নারী অধিকার নিয়ে সোচ্চার ঢাবির এই শিক্ষক বলেন, ‘পিতৃতান্ত্রিক সমাজে অন্তঃপুরে অবরুদ্ধ নারীকে মানুষ করে তোলার অভিপ্রায়ে মহীয়সী রোকেয়া তার গোটা জীবনটাই ব্যয় করেছেন। তবে দুঃখজনকভাবে জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে এত বিপ্লবের পরও আধুনিক সমাজ নারী মুক্তি প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। আর এই জায়গাটিতে এসেই আমরা যুগপৎ রোকেয়ার স্বপ্নের বাস্তবায়ন এবং স্বপ্নভঙ্গ দেখতে পাই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবপ্রতিষ্ঠিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের প্রথম পরিচালক ড. তানিয়া হক স্মারক বক্তৃতায় একবিংশ শতাব্দিতেও মেয়েদের ‘পিংক কলার জব’, ‘সেবাধর্মী সব কাজ মেয়েদের’, ‘শিক্ষিত নারীদের নিগৃহীত অবস্থান’, ‘ইভ টিজিং’ ‘বাল্য বিয়ে’সহ সমাজে নারীর নানা প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোকপাত করেন। এই আধুনিক সময়েও বেগম রোকেয়ার নারীবাদের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি তুলে ধরে তানিয়া হক বলেন, ‘তিনি নারীকে মূল্যায়ন করেছিলেন মানুষ হিসেবে। তিনি চাইতেন আত্মমর্যাদার সঙ্গে আত্মশক্তি বিকশিত করে নারীরা তাদের যথাযথ অধিকার অর্জন করে নিক।’
‘কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখনো নারীর আত্মমর্যাদা বিকাশে অসামান্য অগ্রগতি হয়নি। পরিবর্তে সৌন্দর্যের রাজনীতি আর পুঁজিবাদী চিন্তাভাবনা দিয়ে নারীকে তার স্বনির্ভরতার চিন্তা থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টায় আমরা দেখতে পাই’। উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. উম্মে বুশরা ফাতেহা সুলতানার স্বাগত বক্তব্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে বৃত্তি ও মুজিববর্ষ রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নামও ঘোষণা করা করা হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এক নারীকে দুই ভাই বিয়ে করে বললেন- আমরা গর্বিত

নারী মুক্তির প্রশ্নে সমাজ এখনো অন্ধকারে: ড. তানিয়া হক

আপডেট সময় : ১১:৩৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১

নারী ও শিশু প্রতিবেদক : বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের দেখানো পথেই দেশের নারীরা অন্ধকার থেকে ধীরে ধীরে আলোকিত জীবনের দিকে অগ্রযাত্রা করতে সক্ষম হয়েছে। তবে এই অগ্রযাত্রায় বহু অর্জনের ভিড়েও নারীর প্রতি বৈষম্য এখনো উনিশ শতকের সঙ্গে প্রচ- মিল। তাই নারী মুক্তির ক্ষেত্রে প্রায় শতবর্ষ আগে বেগম রোকেয়া যে পরিবর্তন এনেছিলেন তার কোনও বিকল্প এখনো নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ আয়োজিত ‘রোকেয়া স্মারক বক্তৃতামালা ২০২১’-এ এসব কথা বলেন বিভাগের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক। ‘নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় রোকেয়ার ভাবনা: তৎকালীন সমাজ ও বর্তমান প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এই বক্তৃতায় ড. তানিয়া হক সেসময়ের সঙ্গে বর্তমান সময়ে নারীর প্রতি বৈষম্যগুলোর একটি তুলনামূলক চিত্রের বিশ্লেষণ তুলে ধরেন।
গত মঙ্গলবার বিকালে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বিশেষ অতিথি ছিলেন। স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক তানিয়া হক বলেন, ‘বাঙালি জাতির ইতিহাসে সমাজ-সংস্কারক হিসেবে বেগম রোকেয়া অন্যতম। তিনি ছিলেন ব্যক্তিত্ব ও মননে তার সময়ের চেয়ে বহু বহু যুগ এগিয়ে। নারী অধিকারের প্রশ্নে তিনি সমাজের নির্লিপ্ততা তুলে ধরেছিলেন। বিশেষ করে বাংলার মুসলিম সমাজে নারী মুক্তির আলো নিয়ে এসেছিলন।’
নারী অধিকার নিয়ে সোচ্চার ঢাবির এই শিক্ষক বলেন, ‘পিতৃতান্ত্রিক সমাজে অন্তঃপুরে অবরুদ্ধ নারীকে মানুষ করে তোলার অভিপ্রায়ে মহীয়সী রোকেয়া তার গোটা জীবনটাই ব্যয় করেছেন। তবে দুঃখজনকভাবে জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে এত বিপ্লবের পরও আধুনিক সমাজ নারী মুক্তি প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। আর এই জায়গাটিতে এসেই আমরা যুগপৎ রোকেয়ার স্বপ্নের বাস্তবায়ন এবং স্বপ্নভঙ্গ দেখতে পাই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবপ্রতিষ্ঠিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের প্রথম পরিচালক ড. তানিয়া হক স্মারক বক্তৃতায় একবিংশ শতাব্দিতেও মেয়েদের ‘পিংক কলার জব’, ‘সেবাধর্মী সব কাজ মেয়েদের’, ‘শিক্ষিত নারীদের নিগৃহীত অবস্থান’, ‘ইভ টিজিং’ ‘বাল্য বিয়ে’সহ সমাজে নারীর নানা প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আলোকপাত করেন। এই আধুনিক সময়েও বেগম রোকেয়ার নারীবাদের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি তুলে ধরে তানিয়া হক বলেন, ‘তিনি নারীকে মূল্যায়ন করেছিলেন মানুষ হিসেবে। তিনি চাইতেন আত্মমর্যাদার সঙ্গে আত্মশক্তি বিকশিত করে নারীরা তাদের যথাযথ অধিকার অর্জন করে নিক।’
‘কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখনো নারীর আত্মমর্যাদা বিকাশে অসামান্য অগ্রগতি হয়নি। পরিবর্তে সৌন্দর্যের রাজনীতি আর পুঁজিবাদী চিন্তাভাবনা দিয়ে নারীকে তার স্বনির্ভরতার চিন্তা থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টায় আমরা দেখতে পাই’। উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. উম্মে বুশরা ফাতেহা সুলতানার স্বাগত বক্তব্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে বৃত্তি ও মুজিববর্ষ রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নামও ঘোষণা করা করা হয়।