ঢাকা ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

সুদানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত ২৪

  • আপডেট সময় : ১১:৪৭:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২১
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতায় কমপক্ষে ২৪ জন নিহত হয়েছেন। গত রোববার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর এলাকায় আরব এবং অ-আরব সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
মানবিক সহায়তা প্রদানকারী একটি সংস্থার বরাত দিয়ে রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। এর আগে গত নভেম্বর মাসে দারফুর অঞ্চলে পশুপালকদের মধ্যকার টানা কয়েকদিনের সংঘাতে ৩৫ জন নিহত হয়েছিলেন।
দারফুরের উদ্বাস্তু ও শরণার্থীদের জেনারেল কোঅর্ডিনেশনের মুখপাত্র আদম রিগাল বলছেন, শনিবার রাতে পশ্চিম দারফুর প্রদেশের ক্রিন্ডিং আশ্রয়শিবিরে দু’জন ব্যক্তির মধ্যে আর্থিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। সেই ঘটনা নিয়েই পরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিম দারফুর প্রদেশের ওই আশ্রয়শিবিরে মূলত উদ্বাস্তুরাই বসবাস করেন।
রিগাল জানান, শনিবার রাতের ওই ঘটনা নিয়ে গত রোববার খুব সকালে ওই ক্যাম্পে হামলা করে আরব যোদ্ধারা। পপুলার ডিফেন্স ফোর্স নামে পরিচিত ওই যোদ্ধারা আশ্রয়শিবিরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং মালামাল লুট করে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হয়। প্রাদেশিক রাজধানী জেনেনা থেকে চার কিলোমিটার (২.৫ মাইল) পূর্বে ওই আশ্রয়শিবিরটি অবস্থিত। এখানে আফ্রিকান মাসালিত উপজাতির সদস্যরা বসবাস করেন। দারফুর সংকটের কারণেই তারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন এবং ওই আশ্রয়শিবিরে বসবাস করছেন।
অবশ্য সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দারফুরের ক্রিন্ডিং অঞ্চলে এ ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। গত মাসে সেখানকার জেবেল মুন এলাকায় জমি নিয়ে আরব এবং অ-আরব সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছিলেন। সে ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আরও ১২ জন।
এছাড়া নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুদান ও তার প্রতিবেশী দেশ চাদের সীমান্তবর্তী জেবেল মুন পার্বত্য এলাকায় আরব জাতিভুক্ত পশুপালক ও সুদানের স্থানীয় জনগোষ্ঠীভুক্ত পশুপালকের মধ্যে সংঘর্ষে ৩৫ জন নিহত হয়েছিলেন। সেসময় ওই এলাকার ১৬টি গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ১৬ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পৌঁছেছে সুদানের পশ্চিম দারফুর। সুদানের তৎকালীন সরকার ওমর আল বশিরের বিরুদ্ধে জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগে ২০০৩ সালে বিদ্রোহ ঘোষণা করে স্থানীয় একাধিক সশস্ত্র সংগঠন। ২০১৯ সালে বশিরের পদত্যাগ ও কারাবরণের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় এই গৃহযুদ্ধ। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ বছরের এই গৃহযুদ্ধে দারফুরে মারা গেছেন ৩ লাখেরও বেশি মানুষ, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২৫ লাখেরও বেশি। অবশ্য গৃহযুদ্ধ শেষ হলেও নানা বিষয়ে প্রায়ই আরব এবং অ-আরব সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যাওয়ার ঘটনা খুবই সাধারণ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সুদানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত ২৪

আপডেট সময় : ১১:৪৭:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতায় কমপক্ষে ২৪ জন নিহত হয়েছেন। গত রোববার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর এলাকায় আরব এবং অ-আরব সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
মানবিক সহায়তা প্রদানকারী একটি সংস্থার বরাত দিয়ে রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। এর আগে গত নভেম্বর মাসে দারফুর অঞ্চলে পশুপালকদের মধ্যকার টানা কয়েকদিনের সংঘাতে ৩৫ জন নিহত হয়েছিলেন।
দারফুরের উদ্বাস্তু ও শরণার্থীদের জেনারেল কোঅর্ডিনেশনের মুখপাত্র আদম রিগাল বলছেন, শনিবার রাতে পশ্চিম দারফুর প্রদেশের ক্রিন্ডিং আশ্রয়শিবিরে দু’জন ব্যক্তির মধ্যে আর্থিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। সেই ঘটনা নিয়েই পরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিম দারফুর প্রদেশের ওই আশ্রয়শিবিরে মূলত উদ্বাস্তুরাই বসবাস করেন।
রিগাল জানান, শনিবার রাতের ওই ঘটনা নিয়ে গত রোববার খুব সকালে ওই ক্যাম্পে হামলা করে আরব যোদ্ধারা। পপুলার ডিফেন্স ফোর্স নামে পরিচিত ওই যোদ্ধারা আশ্রয়শিবিরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং মালামাল লুট করে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হয়। প্রাদেশিক রাজধানী জেনেনা থেকে চার কিলোমিটার (২.৫ মাইল) পূর্বে ওই আশ্রয়শিবিরটি অবস্থিত। এখানে আফ্রিকান মাসালিত উপজাতির সদস্যরা বসবাস করেন। দারফুর সংকটের কারণেই তারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন এবং ওই আশ্রয়শিবিরে বসবাস করছেন।
অবশ্য সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দারফুরের ক্রিন্ডিং অঞ্চলে এ ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। গত মাসে সেখানকার জেবেল মুন এলাকায় জমি নিয়ে আরব এবং অ-আরব সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছিলেন। সে ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আরও ১২ জন।
এছাড়া নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুদান ও তার প্রতিবেশী দেশ চাদের সীমান্তবর্তী জেবেল মুন পার্বত্য এলাকায় আরব জাতিভুক্ত পশুপালক ও সুদানের স্থানীয় জনগোষ্ঠীভুক্ত পশুপালকের মধ্যে সংঘর্ষে ৩৫ জন নিহত হয়েছিলেন। সেসময় ওই এলাকার ১৬টি গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ১৬ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পৌঁছেছে সুদানের পশ্চিম দারফুর। সুদানের তৎকালীন সরকার ওমর আল বশিরের বিরুদ্ধে জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগে ২০০৩ সালে বিদ্রোহ ঘোষণা করে স্থানীয় একাধিক সশস্ত্র সংগঠন। ২০১৯ সালে বশিরের পদত্যাগ ও কারাবরণের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় এই গৃহযুদ্ধ। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ বছরের এই গৃহযুদ্ধে দারফুরে মারা গেছেন ৩ লাখেরও বেশি মানুষ, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২৫ লাখেরও বেশি। অবশ্য গৃহযুদ্ধ শেষ হলেও নানা বিষয়ে প্রায়ই আরব এবং অ-আরব সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যাওয়ার ঘটনা খুবই সাধারণ।