ঢাকা ০২:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

বিশ্বে কমেছে ধূমপায়ী, তবুও মৃত্যু বছরে ৮০ লাখ

  • আপডেট সময় : ১২:০৯:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১
  • ১৫৭ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : বিশ্বে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধীরে ধীরে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমেছে। গত মঙ্গলবার এমন তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তামাক আসক্তির কারণে বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে দেশগুলোকে তামাকজাত পণ্য নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। খবর এএফপির।
গত মঙ্গলবার তামাকের ব্যবহার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডব্লিউএইচও। নতুন ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালে ধূমপান করেন, এমন মানুষ ছিলেন প্রায় ১৩০ কোটি। বিশ্বে ধূমপায়ীর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় কমেছে। ২০১৯ সালে বিশ্বে মোট ধূমপায়ীর সংখ্যা ছিল ১৩২ কোটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছর বিশ্বের ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ ও ৭ দশমিক ৮ শতাংশ নারী তামাকজাত পণ্য ব্যবহার করেছেন। তবে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো, এর মধ্যে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী ৩ কোটি ৮০ লাখ কিশোর-কিশোরীও তামাকজাত পণ্যে আসক্ত।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বে ধূমপায়ীর সংখ্যা ১২৭ কোটিতে নেমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা বাড়লেও সাত বছরে বিশ্বের ধূমপায়ীর সংখ্যা পাঁচ কোটি কমবে। ডব্লিউএইচওর এ প্রতিবেদনে অবশ্য ইলেকট্রনিক সিগারেট ব্যবহারকারীদের হিসাবে ধরা হয়নি।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যাচ্ছে, ২০০০ সালে ১৫ বছরের বেশি বয়সী বিশ্বের এক–তৃতীয়াংশ মানুষ তামাকজাত পণ্য ব্যবহার করতেন। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে এ সংখ্যা আরও কমবে। ওই সময়ের মধ্যে ১৫ বছরের বেশি বয়সী জনসংখ্যার এক–পঞ্চমাংশ তামাকে আসক্ত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, প্রতিবছর কম লোকের তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার করতে দেখাটা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। তেদরোস আধানোম আরও বলেন, ‘আমাদের এখনো বহুদূর যেতে হবে। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের প্রাণঘাতী পণ্য বিক্রি করে অনেক মুনাফা করে। এ জন্য এর পক্ষে তারা সাফাই গায়। এ কাজে হাতে থাকা প্রতিটি কৌশল ব্যবহার করতে থাকবে তারা।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে ৮০ লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। তাঁদের বেশির ভাগই সরাসরি তামাক ব্যবহার করেন। তবে এর মধ্যে ১২ লাখ মানুষ সরাসরি ধূমপান না করে শুধু ধূমপায়ীদের সংস্পর্শে থাকার কারণে প্রাণ হারাচ্ছেন।
গত মঙ্গলবারের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমে যাওয়ার পরও কিছু সময় ধরে তামাক ব্যবহারের কারণে বার্ষিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। এর কারণ যাঁরা তামাক সরাসরি ব্যবহার করেন, তাঁদের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তামাকজাত পণ্যের ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা ধীরে ধীরে প্রাণ হারাচ্ছেন।
২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনার সঠিক পথে থাকার কারণে ওই প্রতিবেদনে ৬০টি দেশের প্রশংসা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ডব্লিউএইচও সবশেষ বিশ্বজুড়ে যখন তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, তখন এমন দেশের সংখ্যা ছিল ৩২টি।
ডব্লিউএইচওর স্বাস্থ্য প্রচার বিভাগের প্রধান রুইডিগার ক্রেচ এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা অনেক দেশেই দারুণ অগ্রগতি দেখছি, কিন্তু এ সাফল্য ভঙ্গুর।’

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

বিশ্বে কমেছে ধূমপায়ী, তবুও মৃত্যু বছরে ৮০ লাখ

আপডেট সময় : ১২:০৯:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১

প্রত্যাশা ডেস্ক : বিশ্বে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধীরে ধীরে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমেছে। গত মঙ্গলবার এমন তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তামাক আসক্তির কারণে বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে দেশগুলোকে তামাকজাত পণ্য নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। খবর এএফপির।
গত মঙ্গলবার তামাকের ব্যবহার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডব্লিউএইচও। নতুন ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালে ধূমপান করেন, এমন মানুষ ছিলেন প্রায় ১৩০ কোটি। বিশ্বে ধূমপায়ীর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় কমেছে। ২০১৯ সালে বিশ্বে মোট ধূমপায়ীর সংখ্যা ছিল ১৩২ কোটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছর বিশ্বের ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ ও ৭ দশমিক ৮ শতাংশ নারী তামাকজাত পণ্য ব্যবহার করেছেন। তবে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো, এর মধ্যে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী ৩ কোটি ৮০ লাখ কিশোর-কিশোরীও তামাকজাত পণ্যে আসক্ত।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বে ধূমপায়ীর সংখ্যা ১২৭ কোটিতে নেমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা বাড়লেও সাত বছরে বিশ্বের ধূমপায়ীর সংখ্যা পাঁচ কোটি কমবে। ডব্লিউএইচওর এ প্রতিবেদনে অবশ্য ইলেকট্রনিক সিগারেট ব্যবহারকারীদের হিসাবে ধরা হয়নি।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যাচ্ছে, ২০০০ সালে ১৫ বছরের বেশি বয়সী বিশ্বের এক–তৃতীয়াংশ মানুষ তামাকজাত পণ্য ব্যবহার করতেন। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে এ সংখ্যা আরও কমবে। ওই সময়ের মধ্যে ১৫ বছরের বেশি বয়সী জনসংখ্যার এক–পঞ্চমাংশ তামাকে আসক্ত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, প্রতিবছর কম লোকের তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার করতে দেখাটা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। তেদরোস আধানোম আরও বলেন, ‘আমাদের এখনো বহুদূর যেতে হবে। তামাক কোম্পানিগুলো তাদের প্রাণঘাতী পণ্য বিক্রি করে অনেক মুনাফা করে। এ জন্য এর পক্ষে তারা সাফাই গায়। এ কাজে হাতে থাকা প্রতিটি কৌশল ব্যবহার করতে থাকবে তারা।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, তামাকজাত পণ্য ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে ৮০ লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। তাঁদের বেশির ভাগই সরাসরি তামাক ব্যবহার করেন। তবে এর মধ্যে ১২ লাখ মানুষ সরাসরি ধূমপান না করে শুধু ধূমপায়ীদের সংস্পর্শে থাকার কারণে প্রাণ হারাচ্ছেন।
গত মঙ্গলবারের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমে যাওয়ার পরও কিছু সময় ধরে তামাক ব্যবহারের কারণে বার্ষিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। এর কারণ যাঁরা তামাক সরাসরি ব্যবহার করেন, তাঁদের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তামাকজাত পণ্যের ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা ধীরে ধীরে প্রাণ হারাচ্ছেন।
২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনার সঠিক পথে থাকার কারণে ওই প্রতিবেদনে ৬০টি দেশের প্রশংসা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ডব্লিউএইচও সবশেষ বিশ্বজুড়ে যখন তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, তখন এমন দেশের সংখ্যা ছিল ৩২টি।
ডব্লিউএইচওর স্বাস্থ্য প্রচার বিভাগের প্রধান রুইডিগার ক্রেচ এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা অনেক দেশেই দারুণ অগ্রগতি দেখছি, কিন্তু এ সাফল্য ভঙ্গুর।’