ঢাকা ০৫:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

টঙ্গী সেতু বন্ধ, তীব্র যানজটে দুর্ভোগ

  • আপডেট সময় : ১২:৪৩:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ নদীর উপর টঙ্গী ব্রিজ বন্ধ করে দেওয়ায় গত দু দিন ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে লেগে আছে ভয়াবহ যানজট। ব্রিজের একটি স্থানে ঢালাই খসে রড বেরিয়ে গেছে। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত হওয়ায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। যানজটের কারণে ঢাকায় প্রবেশ ও বের হতে বাসগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কবে নাগাদ এই ভোগান্তির অবসান এমন প্রশ্নে গতকাল শনিবার বিআরটিএ প্রকল্পের (সেতু বিভাগের) পরিচালক মহিরুল ইসলাম জানান, আগামী দশ দিনের মধ্যে সেতুর ভাঙা অংশ মেরামত করে চলাচল উপযোগী করা হবে।
গত বুধবার রাত ১০টার পর থেকে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ সেতুটি পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকেই সৃষ্টি হয় যানজটের। যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ঢাকা-টঙ্গী-কালিগঞ্জ-ঘোড়াশালসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোর যাত্রীরা। টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে ঢাকা অভিমুখী লেনের সব ধরনের যানবাহন সড়কে বাঁশ ও অন্যান্য উপকরণ ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টঙ্গী স্টেশন রোড হয়ে ইউটার্ন নিয়ে বিকল্প পথে রাজধানীতে প্রবেশ করলেও দীর্ঘ যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ময়মনসিংহের ড্রিমল্যান্ড পরিবহনের চালাক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এ মহাসড়কে গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বিআরটিএ’র প্রকল্পের উন্নয়ন কাজের ধীরগতির কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে এ কাজ চলছে। এখন শুরু হয়েছে সেতু মেরামত। সড়কটিই এখন চলাচলকারী যাত্রী ও বাস চালকদের যন্ত্রণার কারণ বলে মনে হচ্ছে।’
পেঁয়াজ ও অন্যান্য খাদ্য উপকরণ ভ্যানযোগে টঙ্গী ব্রিজ পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন জসীম উদ্দিন জানান, ব্রিজের কাছেই বাঁশ দিয়ে বাঁধ দেওয়ায় অন্যদের মতো তিনিও আটকে যান। এরপর কুলি দিয়ে বস্তাগুলো মাথায় বহন করে টঙ্গী ব্রিজ পার করছেন। তিনি বলেন, ‘উপায় না থাকায় ব্রিজের ওপারে আব্দুল্লাহপুর থেকে আরেকটি ভ্যানে বস্তাগুলো ওঠাতে হবে।’
সরেজমিন দেখা গেছে, টঙ্গী ব্রিজে সড়কের ঢাকা অভিমুখী লেনটি ফাঁকা। উল্টো লেনটিতে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন দাঁড়িয়ে আছে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর আনুমানিক চার-পাঁচ ফুট করে এগিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা থেকে আসা পিকাপভ্যানের চালক রমজান আলী যাবেন ময়মনসিংহে। তিনি জানান, ব্রিজ পার হতে তার সময় লেগেছে তিন ঘণ্টা।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন বলেন, ‘এমনিতেই এক লেন, তার ওপর গাড়ির চাপ। আমরা উত্তরবঙ্গের গাড়িগুলো সরাসরি টঙ্গী বাজার বেইলি ব্রিজ দিয়ে ঢাকায় নিচ্ছি। আর ঢাকার গাড়িগুলো কামারপাড়া সড়ক দিয়ে গাজীপুরে প্রবেশ করছে। ফলে ইউটার্নে কিছুটা সময় লাগলেও এতে কিছুটা সুফল পাচ্ছি। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যরাও সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছেন। তবে সাধারণ মানুষ যাতে দুর্ভোগে না পড়েন সেই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
মহিরুল ইসলাম জানান, সড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা শনিবার ভাঙা ব্রিজটি পরিদর্শনে টঙ্গীতে যাবেন। পরে তাদের মতামত নিয়ে আট-দশ দিনের মধ্যে ব্রিজটির ভাঙা অংশে ঢালাই/মেরামত করে যানবাহনের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তখন এ যানজট সমস্যা থাকবে না।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

টঙ্গী সেতু বন্ধ, তীব্র যানজটে দুর্ভোগ

আপডেট সময় : ১২:৪৩:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ নদীর উপর টঙ্গী ব্রিজ বন্ধ করে দেওয়ায় গত দু দিন ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে লেগে আছে ভয়াবহ যানজট। ব্রিজের একটি স্থানে ঢালাই খসে রড বেরিয়ে গেছে। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত হওয়ায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। যানজটের কারণে ঢাকায় প্রবেশ ও বের হতে বাসগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কবে নাগাদ এই ভোগান্তির অবসান এমন প্রশ্নে গতকাল শনিবার বিআরটিএ প্রকল্পের (সেতু বিভাগের) পরিচালক মহিরুল ইসলাম জানান, আগামী দশ দিনের মধ্যে সেতুর ভাঙা অংশ মেরামত করে চলাচল উপযোগী করা হবে।
গত বুধবার রাত ১০টার পর থেকে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ সেতুটি পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকেই সৃষ্টি হয় যানজটের। যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ঢাকা-টঙ্গী-কালিগঞ্জ-ঘোড়াশালসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোর যাত্রীরা। টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে ঢাকা অভিমুখী লেনের সব ধরনের যানবাহন সড়কে বাঁশ ও অন্যান্য উপকরণ ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টঙ্গী স্টেশন রোড হয়ে ইউটার্ন নিয়ে বিকল্প পথে রাজধানীতে প্রবেশ করলেও দীর্ঘ যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ময়মনসিংহের ড্রিমল্যান্ড পরিবহনের চালাক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এ মহাসড়কে গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বিআরটিএ’র প্রকল্পের উন্নয়ন কাজের ধীরগতির কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে এ কাজ চলছে। এখন শুরু হয়েছে সেতু মেরামত। সড়কটিই এখন চলাচলকারী যাত্রী ও বাস চালকদের যন্ত্রণার কারণ বলে মনে হচ্ছে।’
পেঁয়াজ ও অন্যান্য খাদ্য উপকরণ ভ্যানযোগে টঙ্গী ব্রিজ পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন জসীম উদ্দিন জানান, ব্রিজের কাছেই বাঁশ দিয়ে বাঁধ দেওয়ায় অন্যদের মতো তিনিও আটকে যান। এরপর কুলি দিয়ে বস্তাগুলো মাথায় বহন করে টঙ্গী ব্রিজ পার করছেন। তিনি বলেন, ‘উপায় না থাকায় ব্রিজের ওপারে আব্দুল্লাহপুর থেকে আরেকটি ভ্যানে বস্তাগুলো ওঠাতে হবে।’
সরেজমিন দেখা গেছে, টঙ্গী ব্রিজে সড়কের ঢাকা অভিমুখী লেনটি ফাঁকা। উল্টো লেনটিতে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন দাঁড়িয়ে আছে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর আনুমানিক চার-পাঁচ ফুট করে এগিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা থেকে আসা পিকাপভ্যানের চালক রমজান আলী যাবেন ময়মনসিংহে। তিনি জানান, ব্রিজ পার হতে তার সময় লেগেছে তিন ঘণ্টা।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন বলেন, ‘এমনিতেই এক লেন, তার ওপর গাড়ির চাপ। আমরা উত্তরবঙ্গের গাড়িগুলো সরাসরি টঙ্গী বাজার বেইলি ব্রিজ দিয়ে ঢাকায় নিচ্ছি। আর ঢাকার গাড়িগুলো কামারপাড়া সড়ক দিয়ে গাজীপুরে প্রবেশ করছে। ফলে ইউটার্নে কিছুটা সময় লাগলেও এতে কিছুটা সুফল পাচ্ছি। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যরাও সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছেন। তবে সাধারণ মানুষ যাতে দুর্ভোগে না পড়েন সেই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
মহিরুল ইসলাম জানান, সড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা শনিবার ভাঙা ব্রিজটি পরিদর্শনে টঙ্গীতে যাবেন। পরে তাদের মতামত নিয়ে আট-দশ দিনের মধ্যে ব্রিজটির ভাঙা অংশে ঢালাই/মেরামত করে যানবাহনের জন্য খুলে দেওয়া হবে। তখন এ যানজট সমস্যা থাকবে না।