ঢাকা ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

অনলাইন ক্লাসের নামে প্রযুক্তির কাছে জিম্মি শিক্ষার্থীদের চঞ্চলতা

  • আপডেট সময় : ১০:৫৩:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১
  • ১২১ বার পড়া হয়েছে

ক্যাম্পাস ক্যারিয়ার ডেস্ক : বৈশ্বিক মহামারিতে থমকে গেছে মানুষের ব্যস্তময় জীবন এবং ক্ষতিগ্রস্ত সব কর্মকা-। বাংলাদেশর এর আবস্থানও বাইরে নয়। সেই সঙ্গে আটকে গেছে শিক্ষার্থীদের জীবন। ধাপে ধাপে করোনার ছুটি লকডাউনে চলে গেল এক বছর।
কয়েক মাস মোটামুটি আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকায় সবকিছু ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু হঠাৎ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় কঠোর আইনের দিকে আবার সরকার। ইতোমধ্যে সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। বন্ধ করে দিয়েছে লঞ্চ, বাসসহ অন্যান্য গণপরিবহন আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ২৯ মে খোলার কথা থাকলেও তা এখন অসম্ভব।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ চলে গেলেও বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কোন প্রকার পরীক্ষা না হওয়ায় শিক্ষা ব্যবস্থা ক্ষতির মুখে বিপাকে শিক্ষার্থীরা।
বন্ধের এ সময়ে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, অন্যদিকে কোচিং বন্ধ, সকল ধরনের পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ওপর প্রভাব পড়ছে। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীরা বাসায় এক ঘেয়ামী জীবন কাটাচ্ছে। আর এজন্য শিক্ষার্থীরা বন্দি জীবনে এক বিরক্ত চলে আশায় স্বভাবিক।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইউজিসি অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রয়েছে ভিন্নমত।
যেখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভোর থেকে পড়াশোনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ত এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিত, সেখানে এখন মিলছে ভিন্ন চিত্র। বিদ্যালয়ের কথা ভুলে গিয়ে এখন তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ছে বিভিন্ন প্রযুক্তি যেমন, মোবাইল গেইমস, ফেইসবুক, টুইটারসহ নানা প্রযুক্তির কাছে জিম্মি এখন শিক্ষার্থীদের চঞ্চলতা। প্রযুক্তি যতটুকু না পড়াশোনার জন্য ব্যয় করে তার চেয়ে অন্য কাজে বেশি ব্যয় করে।
সাধারণত তরুণ ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায় মগ্ন থাকতে ভালোবাসে, কিন্তু এ সময়ে তারা প্রযুক্তি বেঁচে নিয়েছে। অনেক অভিভাবকেরা অনিচ্ছাকৃত হাতে তুলে দিচ্ছেন প্রযুক্তিকে।
একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। ছেলে আর মেয়ে প্রাইমারিতে পড়ে আর এক মেয়ে কলেজে পড়াশোনা করছে। তিনি বলেন, এই করোনার সময়ে এদের এক ঘেয়ামী জীবন-যাপনে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। সব কিছু জিনিস পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত হলে তা বিরক্ত কর ও কষ্টকর হয়ে উঠে। আমি একজন সন্তানের মা হিসেবেও বিরক্ত ও ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করেছি। আমার ছেলে-মেয়েদের তাই প্রযুক্তি নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছি। প্রযুক্তি যেমন ভাল দিক রয়েছে ঠিক তেমনি খারাপ দিক রয়েছে। তবে প্রযুক্তি ছাড়া ওদের সামলানো সম্ভবপর না। তবে আমি সচেতন ভাবে ওদের প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি। মহান সৃষ্টি কর্তার কাছে দোয়া করি যেন এই পৃথিবী আবার আগের মতো হয়। তবে অনলাইনে ক্লাস/পরীক্ষা কোনটায় শিক্ষার্থীর জন্য পূনাঙ্গ শিক্ষা অর্জন করাতে ব্যর্থ হচ্ছে।
মোটকথা হলো, সন্তানকে সঠিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে হবে পরিবারের। প্রযুক্তি ছাড়া এ পৃথিবী বর্তমানে অচল। তাই সব জিনিস এর ভাল-মন্দ দিক নিয়েই সৃষ্টি, ভালকে প্রতিষ্টা করতে একটু পরিশ্রম বেশি প্রয়োজন। খারাপ দিক আছে বলে কোন কিছু বাদ দেওয়া খুবই ক্ষুদ্র চিন্তা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অনলাইন ক্লাসের নামে প্রযুক্তির কাছে জিম্মি শিক্ষার্থীদের চঞ্চলতা

আপডেট সময় : ১০:৫৩:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১

ক্যাম্পাস ক্যারিয়ার ডেস্ক : বৈশ্বিক মহামারিতে থমকে গেছে মানুষের ব্যস্তময় জীবন এবং ক্ষতিগ্রস্ত সব কর্মকা-। বাংলাদেশর এর আবস্থানও বাইরে নয়। সেই সঙ্গে আটকে গেছে শিক্ষার্থীদের জীবন। ধাপে ধাপে করোনার ছুটি লকডাউনে চলে গেল এক বছর।
কয়েক মাস মোটামুটি আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকায় সবকিছু ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু হঠাৎ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় কঠোর আইনের দিকে আবার সরকার। ইতোমধ্যে সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। বন্ধ করে দিয়েছে লঞ্চ, বাসসহ অন্যান্য গণপরিবহন আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ২৯ মে খোলার কথা থাকলেও তা এখন অসম্ভব।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ চলে গেলেও বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কোন প্রকার পরীক্ষা না হওয়ায় শিক্ষা ব্যবস্থা ক্ষতির মুখে বিপাকে শিক্ষার্থীরা।
বন্ধের এ সময়ে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, অন্যদিকে কোচিং বন্ধ, সকল ধরনের পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ওপর প্রভাব পড়ছে। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীরা বাসায় এক ঘেয়ামী জীবন কাটাচ্ছে। আর এজন্য শিক্ষার্থীরা বন্দি জীবনে এক বিরক্ত চলে আশায় স্বভাবিক।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইউজিসি অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রয়েছে ভিন্নমত।
যেখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভোর থেকে পড়াশোনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ত এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিত, সেখানে এখন মিলছে ভিন্ন চিত্র। বিদ্যালয়ের কথা ভুলে গিয়ে এখন তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ছে বিভিন্ন প্রযুক্তি যেমন, মোবাইল গেইমস, ফেইসবুক, টুইটারসহ নানা প্রযুক্তির কাছে জিম্মি এখন শিক্ষার্থীদের চঞ্চলতা। প্রযুক্তি যতটুকু না পড়াশোনার জন্য ব্যয় করে তার চেয়ে অন্য কাজে বেশি ব্যয় করে।
সাধারণত তরুণ ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায় মগ্ন থাকতে ভালোবাসে, কিন্তু এ সময়ে তারা প্রযুক্তি বেঁচে নিয়েছে। অনেক অভিভাবকেরা অনিচ্ছাকৃত হাতে তুলে দিচ্ছেন প্রযুক্তিকে।
একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। ছেলে আর মেয়ে প্রাইমারিতে পড়ে আর এক মেয়ে কলেজে পড়াশোনা করছে। তিনি বলেন, এই করোনার সময়ে এদের এক ঘেয়ামী জীবন-যাপনে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। সব কিছু জিনিস পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত হলে তা বিরক্ত কর ও কষ্টকর হয়ে উঠে। আমি একজন সন্তানের মা হিসেবেও বিরক্ত ও ধৈর্যের সীমা অতিক্রম করেছি। আমার ছেলে-মেয়েদের তাই প্রযুক্তি নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছি। প্রযুক্তি যেমন ভাল দিক রয়েছে ঠিক তেমনি খারাপ দিক রয়েছে। তবে প্রযুক্তি ছাড়া ওদের সামলানো সম্ভবপর না। তবে আমি সচেতন ভাবে ওদের প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি। মহান সৃষ্টি কর্তার কাছে দোয়া করি যেন এই পৃথিবী আবার আগের মতো হয়। তবে অনলাইনে ক্লাস/পরীক্ষা কোনটায় শিক্ষার্থীর জন্য পূনাঙ্গ শিক্ষা অর্জন করাতে ব্যর্থ হচ্ছে।
মোটকথা হলো, সন্তানকে সঠিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে হবে পরিবারের। প্রযুক্তি ছাড়া এ পৃথিবী বর্তমানে অচল। তাই সব জিনিস এর ভাল-মন্দ দিক নিয়েই সৃষ্টি, ভালকে প্রতিষ্টা করতে একটু পরিশ্রম বেশি প্রয়োজন। খারাপ দিক আছে বলে কোন কিছু বাদ দেওয়া খুবই ক্ষুদ্র চিন্তা।