ক্রীড়া ডেস্ক : চোট কাটিয়ে দুই মাস পর মাত্রই ক্লাবের অনুশীলনে ফিরেছেন গ্যারেথ বেল। এরই মধ্যে ডাক পেয়েছেন ওয়েলস জাতীয় দলে। এ অবস্থায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলতে গিয়ে চোটপ্রবণ এই ফরোয়ার্ড নতুন করে আবার ছিটকে যাবেন না তো, প্রশ্নটা অনেকের মনেই উঁকি দিচ্ছে। রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি অবশ্য এতে তেমন কোনো সমস্যা দেখছেন না।
বরং বেল কখন, কোথায় খেলবেন-সেই সিদ্ধান্তের ভার তার ওপরই ছেড়ে দিতে চান এই ইতালিয়ান কোচ। সঙ্গে এটাও জানিয়ে দিলেন, আন্তর্জাতিক বিরতি শেষে ফেরার পর খেলার অবস্থায় থাকলে রিয়াল দলেও সুযোগ পাবেন বেল। রিয়ালে ক্যারিয়ারের শুরুতে সাফল্য পেলেও বেল গত কয়েক বছরে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন একের পর এক চোটের কারণে। সদ্য হ্যামস্ট্রিং চোট কাটিয়ে ফেরা ৩২ বছর বয়সী এই ফুটবলার ওয়েলসের চলতি মাসের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দলে ডাক পেয়েছেন। জাতীয় দলে ফিরলেও এখনও ক্লাব কোচের আস্থা অর্জন করতে পারেননি তিনি। লা লিগায় শনিবার রায়ো ভাইয়েকানোর মুখোমুখি হবে রিয়াল। এই ম্যাচের স্কোয়াডে বেলকে রাখেননি কোচ। শুক্রবার আনচেলত্তির সংবাদ সম্মেলনের অনেকটা জুড়ে ছিল বেল প্রসঙ্গ। উঠে আসে দলটিতে তার পারফরম্যান্সের অধারাবাহিকতা ও ওয়েলস দলে ডাক পাওয়া প্রসঙ্গ। দ্বিতীয় মেয়াদে রিয়ালের দায়িত্ব নেওয়া এই কোচ অবশ্য কোনো সমস্যা দেখছেন না। “প্রথমত, আমি তার বাবা নই। হ্যাঁ, (রিয়ালে) বেলের শেষ সময়টা ভালো যায়নি, কিন্তু বেল যা করেছে তা কেউ ভুলে যায়নি।” “তার মেডিকেল ছাড়পত্র আছে এবং সে অনুশীলন করতে পারবে। আমরা ওয়েলসকে বলতে পারি না যে, সে খেলতে পারবে না, কারণ সেখানে (স্ক্যান রিপোর্টে) বস্তুনিষ্ঠ তথ্য রয়েছে। স্ক্যান রিপোর্টে বলা হয়েছে সে সুস্থ হয়ে উঠেছে।” ২০১৩ সালে তখনকার রেকর্ড ট্রান্সফার ফির বিনিময়ে টটেনহ্যাম থেকে রিয়ালে যোগ দেওয়ার পর বেশ সাফল্যম-িত সময় কাটান বেল। চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুটি লিগসহ জেতেন বেশ কয়েকটি বড় শিরোপা। কয়েকটি শিরোপা জয়ে তার মুখ্য ভূমিকাও আছে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই একের পর এক চোটে খেলতে পারেননি অনেক ম্যাচ। ফলে সমর্থকদের রোষানলের শিকার হয়েছেন প্রায়ই। মাঝে তাকে ধারে পাঠানো হয়েছিল টটেনহ্যামে।
তবে বেলের পাশেই দাঁড়ালেন আনচেলত্তি। স্মরণ করিয়ে দিলেন ক্লাবে বেলের অবদানের কথা। “২০১৪ সালে সে আমাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও কোপা দেল রে এবং এরপর (২০১৮ সালে) লিভারপুলের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাতে সাহায্য করেছিল।” “সমর্থকরা এগুলো ভুলে যায়নি। সে তার সেরা ছন্দে নেই, কিন্তু আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে। জাতীয় দল থেকে ফেরার পর যদি সে খেলার অবস্থায় থাকে, তাহলে খেলবে।” আনচেলত্তির আশা, মাত্রই চোট কাটিয়ে ফেরা বেলকে নিয়ে কোনো ঝুঁকির পথে যাবে না ওয়েলস। “যদি জাতীয় দল থেকে তার ডাক আসে, আমাদের তাকে সেখানে পাঠাতে হবে। পরিস্থিতি কেমন তা আমরা ব্যাখ্যা করেছি এবং পরিস্থিতি মূল্যায়ন করার জন্য ওয়েলস এক সপ্তাহ সময় পাচ্ছে। আমার মনে হয় না ওয়েলস ঝুঁকি নেবে।” ইউরোপ অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ‘ই’ গ্রুপে ছয় ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে ওয়েলস। সমান পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে চেক রিপাবলিক। যদিও এক ম্যাচ কম খেলেছে তারা। ওয়েলসের সমান ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বেলজিয়াম। আগামী ১৩ নভেম্বরে বেলারুশের বিপক্ষে ম্যাচের তিন দিন পর বেলজিয়ামের মুখোমুখি হবে ওয়েলস।