আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফ্রিকার মধ্যাঞ্চলীয় দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর নাইরাগঙ্গো আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে নেমে আসা লাভার স্রোতে কয়েকশত ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে ও কিছু লোক নিখোঁজ রয়েছেন কিন্তু রক্ষা পেয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান শহর গোমা।
বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে সক্রিয় ও বিপজ্জনক এই আগ্নেয়গিরিটির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে গত শনিবার সন্ধ্যায় ২০ লাখ বাসিন্দার শহর গোমায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। রাতের আকাশ অদ্ভুত লাল রং ধারণ করেছিল আর কমলা রঙের লাভার স্রোত হ্রদ তীরবর্তী শহরটির দিকে এগোতে শুরু করেছিল।
গত রোববার দেশটির সরকারের মুখপাত্র প্যাট্রিক মুয়ায়া এক বিবৃতিতে ১৫ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। এদের মধ্যে নয় জন ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন, চার জন গোমার মুনজেনজে কারগার থেকে পালানোর চেষ্টাকালে ও আরও দুই জন লাভার আগুনে পুড়ে মারা যান। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার পর গোমার উত্তরে একটি গ্রামে দুই জন নিহত হয়েছে বলে দেখেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর কথা ও নিখোঁজ স্বজনদের কথা বলেছে। এসব বিবেচনায় মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০০২ সালে এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে আড়াইশো লোকের মৃত্যু ও এক লাখ ২০ হাজার মানুষ বাস্তুহারা হয়েছিল। ওই স্মৃতিতে তাড়িত হয়ে আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা সঙ্গে যা কিছু নেওয়া সম্ভব নিয়ে হেঁটে এলাকা ছেড়ে গেছেন। তাদের অনেকে নিকটবর্তী রুয়ান্ডার সীমান্তের দিকে যান।
রেডক্রস জানিয়েছে, গত শনিবার তিন থেকে পাঁচ হাজার লোক রুয়ান্ডায় পালিয়ে গেছে। তাদের অনেকেই কৃষক, তারা গবাদিপশু সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন। গত রোববার এদের অনেকে ফিরতে শুরু করেছিলেন বলে জানিযেছে রয়টার্স। আগ্নেয়গিরির পাশগুলোতে ফাটল তৈরি হওয়ায় সেগুলো থেকে বিভিন্ন দিকে লাভার প্রবাহ শুরু হয়।
রোববার দিনের বেলা গোমার প্রান্তে আধা মাইল চওড়া ধূমায়িত একটি কালো ক্ষত দেখা যায়, সেখানে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে লাভা ঠা-া হয়ে ছিল। কয়েকটি পয়েন্টে লাভার স্রোত তিন তলা সমান উঁচু ছিল, ফলে বড় বড় ভবনও এর কবলে পড়ে ধ্বংস হয়।
লাভার স্রোতে ১৭টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত এবং তিনটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি পানি সরবরাহের পাইপলাইন ধ্বংস হয়েছে বলে মুয়ায়া জানিয়েছেন। গোমা থেকে উত্তরদিকমুখি একটি মহাসড়কের ওপর দিয়ে লাভার স্রোত পার হওয়ায় প্রধান এ সরবরাহ রুটটি বন্ধ হয়ে গেছে। শহরটির বিদ্যুৎ সরবরাহও বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। গোমার উদ্দেশ্যে সরকারি একটি প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে বলে মুয়ায়া জানিয়েছেন।
কঙ্গোয় অগ্ন্যুৎপাত: লাভার স্রোত আনল ধ্বংস, মৃত্যু
জনপ্রিয় সংবাদ