ঢাকা ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

সবচেয়ে উষ্ণতম বছরের রেকর্ড এশিয়ায়

  • আপডেট সময় : ১১:৫৫:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন কপ-২৬ শুরুর কয়েক দিন আগে জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে রেকর্ড উষ্ণতম বছর পার করেছে এশিয়া। এই মহাদেশের উন্নয়নেও ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে চরম বৈরী আবহাওয়া।
জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) তাদের বার্ষিক ‘এশিয়া জলবায়ু পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলেছে, এই অঞ্চলের প্রত্যেকটি অংশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ডব্লিউএমও বলছে, চরম বৈরী আবহাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ২০২০ সালে এশিয়াজুড়ে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি, লাখ লাখ মানুষ বাস্ত্যুচুত এবং অবকাঠামো ও বাস্ত্যুসংস্থানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় শত শত বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হয়েছে। ‘খাদ্য ও পানির নিরাপত্তাহীনতা, স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং পরিবেশের অবনতির কারণে টেকসই উন্নয়ন হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।’ গ¬্যাসগোতে আগামী রোববার থেকে জাতিসংঘের জলাবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন কপ-২৬ শুরুর আগে ডব্লিউএমও এশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বার্ষিক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কপ-২৬ সম্মেলন গত রোববার শুরু হয়ে চলবে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত।
প্রতিবেদনে জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপদের কারণে মোট বার্ষিক গড় ক্ষয়ক্ষতির তথ্যও উল্লেখ করা হয়েছে। ডব্লিউএমও বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে চীনের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরপরই ভারত ৮৭ বিলিয়ন, জাপান ৮৩ বিলিয়ন এবং দক্ষিণ কোরিয়া ২৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।
তবে অর্থনীতির আকার বিবেচনা করলে বার্ষিক এই গড় ক্ষতির পরিমাণ তাজিকিস্তানের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৭ দশমিক ৯ শতাংশ, কম্বোডিয়ার ৫.৯ শতাংশ এবং লাওসের ৫.৮ শতাংশ হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা বৃদ্ধির কারণে এই অঞ্চলের মানুষের বাড়ির বাইরের কর্মঘণ্টা কার্যকরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পূর্বাভাষ দেওয়া হয়েছে। আর এতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলেও জানিয়েছে ডব্লিউএমও।
সংস্থাটির প্রধান পেট্টেরি তালাস বলেছেন, ‘আবহাওয়া ও জলবায়ুর বিপদ; বিশেষ করে বন্যা, ঝড় এবং খরা এই অঞ্চলের অনেক দেশে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। সম্মিলিতভাবে এসব প্রভাব টেকসই উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি করছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ায় আবহাওয়া এবং জলবায়ু-সম্পর্কিত বাস্তুচ্যুতি অনেকটা দীর্ঘমেয়াদী। বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর লোকজন দীর্ঘ সময় ধরে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে অথবা স্থানীয়ভাবে সুসংহত হতে পারেন না।
২০২০ সালে বন্যা এবং ঝড়ের কারণে এই অঞ্চলের প্রায় ৫ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং প্রাণ হারিয়েছেন ৫ হাজারের বেশি। তবে ২০২০ সালে প্রাণহানির এই সংখ্যা গত দুই দশকের মধ্যে বছরে গড় মৃত্যুর হিসেবে সর্বনি¤œ।
গত দুই দশকে প্রত্যেক বছর গড়ে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বন্যা, ঝড় এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বন্যা এবং ঝড়ের আগাম পূর্বাভাষ ব্যবস্থার সুফল হিসেবে প্রাণহানি কমেছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএমও।
রেকর্ডে এশিয়ার উষ্ণতম বছরের গড় তাপমাত্রা ১৯৮১ থেকে ২০১০ সালের গড়ের চেয়েও ১ দশমিক ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

যে ভাইকে জেল থেকে বের করেছি, সেই আমার স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করল…

সবচেয়ে উষ্ণতম বছরের রেকর্ড এশিয়ায়

আপডেট সময় : ১১:৫৫:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর ২০২১

প্রত্যাশা ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন কপ-২৬ শুরুর কয়েক দিন আগে জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে রেকর্ড উষ্ণতম বছর পার করেছে এশিয়া। এই মহাদেশের উন্নয়নেও ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে চরম বৈরী আবহাওয়া।
জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) তাদের বার্ষিক ‘এশিয়া জলবায়ু পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলেছে, এই অঞ্চলের প্রত্যেকটি অংশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ডব্লিউএমও বলছে, চরম বৈরী আবহাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ২০২০ সালে এশিয়াজুড়ে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি, লাখ লাখ মানুষ বাস্ত্যুচুত এবং অবকাঠামো ও বাস্ত্যুসংস্থানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় শত শত বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হয়েছে। ‘খাদ্য ও পানির নিরাপত্তাহীনতা, স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং পরিবেশের অবনতির কারণে টেকসই উন্নয়ন হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।’ গ¬্যাসগোতে আগামী রোববার থেকে জাতিসংঘের জলাবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন কপ-২৬ শুরুর আগে ডব্লিউএমও এশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বার্ষিক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কপ-২৬ সম্মেলন গত রোববার শুরু হয়ে চলবে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত।
প্রতিবেদনে জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপদের কারণে মোট বার্ষিক গড় ক্ষয়ক্ষতির তথ্যও উল্লেখ করা হয়েছে। ডব্লিউএমও বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে চীনের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরপরই ভারত ৮৭ বিলিয়ন, জাপান ৮৩ বিলিয়ন এবং দক্ষিণ কোরিয়া ২৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।
তবে অর্থনীতির আকার বিবেচনা করলে বার্ষিক এই গড় ক্ষতির পরিমাণ তাজিকিস্তানের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৭ দশমিক ৯ শতাংশ, কম্বোডিয়ার ৫.৯ শতাংশ এবং লাওসের ৫.৮ শতাংশ হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা বৃদ্ধির কারণে এই অঞ্চলের মানুষের বাড়ির বাইরের কর্মঘণ্টা কার্যকরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পূর্বাভাষ দেওয়া হয়েছে। আর এতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলেও জানিয়েছে ডব্লিউএমও।
সংস্থাটির প্রধান পেট্টেরি তালাস বলেছেন, ‘আবহাওয়া ও জলবায়ুর বিপদ; বিশেষ করে বন্যা, ঝড় এবং খরা এই অঞ্চলের অনেক দেশে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। সম্মিলিতভাবে এসব প্রভাব টেকসই উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি করছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ায় আবহাওয়া এবং জলবায়ু-সম্পর্কিত বাস্তুচ্যুতি অনেকটা দীর্ঘমেয়াদী। বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর লোকজন দীর্ঘ সময় ধরে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে অথবা স্থানীয়ভাবে সুসংহত হতে পারেন না।
২০২০ সালে বন্যা এবং ঝড়ের কারণে এই অঞ্চলের প্রায় ৫ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং প্রাণ হারিয়েছেন ৫ হাজারের বেশি। তবে ২০২০ সালে প্রাণহানির এই সংখ্যা গত দুই দশকের মধ্যে বছরে গড় মৃত্যুর হিসেবে সর্বনি¤œ।
গত দুই দশকে প্রত্যেক বছর গড়ে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বন্যা, ঝড় এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বন্যা এবং ঝড়ের আগাম পূর্বাভাষ ব্যবস্থার সুফল হিসেবে প্রাণহানি কমেছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএমও।
রেকর্ডে এশিয়ার উষ্ণতম বছরের গড় তাপমাত্রা ১৯৮১ থেকে ২০১০ সালের গড়ের চেয়েও ১ দশমিক ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।