ঢাকা ১১:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ

  • আপডেট সময় : ০৯:০৮:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতদের বিচার ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে হিন্দুদের কয়েকটি সংগঠন।
গতকাল শুক্রবার বিকেল বিকেল ৪টা থেকে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ সেখানে অবস্থান নেয়। পরে জাগো হিন্দু পরিষদ, আর্য প্রতিনিধি সভা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সনাতন কল্যাণ জোট, জাতীয় হিন্দু মহাসংঘ ও ইসকনসহ সংহতি জানিয়ে তাতে অংশ নেয়। এর আগে সকালে একই দাবিতে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা। সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা আইন ও কমিশন গঠন করার বিষয়ে সরকারের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলে জানান হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্রু।
তিনি বলেন, “আমরা সরকারের কাছে আমাদের দাবির বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি, কিন্তু সরকার আমাদের দাবির বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। তাই আমরা আজকে শাহবাগ অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের বিক্ষোভ চলবে।”
সাজন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ও জুমার নামাজ থাকায় সকাল থেকে অবরোধের পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় সেখানে মশাল মিছিল হবে।
দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা নানুয়া দীঘির পাড়ে দর্পন সংঘের পূজাম-পে হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখা দেখে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। হামলা, ভাঙচুর চালানো হয় অন্তত ৮টি মন্দিরে। তার জের ধরে সেদিনই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মন্দিরে হামলা হয়, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় পাঁচজন। এর পরের কয়েকদিনে নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ কয়েকটি জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা হয়। তাতে নোয়াখালীতে নিহত হয় দুজন।
অবরোধ কর্মসূচি থেকে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত সময় সাম্প্রদায়িক হামলা বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ।
বিক্ষোভকারীরা ‘জাগো রে জাগো, হিন্দু জাগো’, ‘মৌলবাদের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘জিহাদিদের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’, ‘মন্দিরে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রংপুরে আগুন কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সেখানে বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন, “আপনারা জানেন, দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর কী নারকীয় হামলা হয়েছে! প্রশাসন সেখানে তাদের দ্বায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে, রাষ্ট্র সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ।
“সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতররা বার বার পার পেয়ে যাচ্ছে। এর আগেও সাম্প্রদায়িক হামলায় সংখ্যালঘুরা বিচার পায়নি। হামলার কুশীলবরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। আমরা চাই, হামলার নেপথ্যে যারা জড়িত, তাদেরকেও যেন বিচারের আওতায় আনা হয়।”
রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের মানববন্ধন : দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেছে রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার (২২ অক্টোকর) রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন রোডে এ কর্মসূচির আয়োজন করে তারা।
কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার সংখ্যালঘুদের বিষয়ে আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী বারবার কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তারপরও কেন হামলা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না, সেটা বুঝতে পারছি না। আমরা মনে করি, দুষ্কৃতকারীদের কঠোর শাস্তি না হওয়ায় বারবার এমন ঘটনা ঘটছে।’
স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ বলেন, ‘অষ্টমীর পর থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সহিংসতা চলছেই। বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘর, মন্দিরে অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন ও হত্যাকা-ের এমন নজির আগে ছিল না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকটি হামলা দেখে বোঝা যায়, এসব পূর্বপরিকল্পিত ছিল। পুলিশ এসব প্রতিরোধে কোনো সাহায্য করেনি। হাজীগঞ্জে পুলিশকে এক ঘণ্টা আগে হামলার শঙ্কা কথা জানানো হলেও তারা আসেনি। তিন দফায় হামলার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।’
এদিন, সারাদেশে রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদী কর্মসূচি করা হয় বলেও রাজধানীর কর্মসূচি থেকে জানান মিশনের দায়িত্বশীলরা।
সারা দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের : দেশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দুদের ওপর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে সারা দেশে গণঅনশন, গণঅবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ গতকাল শুক্রবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আজ ২৩ অক্টোবর শনিবার ভোর ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে তাদের এ কর্মসূচি চলবে। এ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বলেন, ঢাকার শাহবাগ ও চট্টগ্রামের অন্দরকিল্লাসহ দেশের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গণঅনশন কর্মসূচি চলবে। দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের একটি মন্দিরে কুরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাংচুর চালানো হয়। এরপর চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয় হিন্দুদের উপাসনালয়, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলার এসব ঘটনায় মোট ৭১টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং প্রায় পাঁচশ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৯:০৮:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতদের বিচার ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে হিন্দুদের কয়েকটি সংগঠন।
গতকাল শুক্রবার বিকেল বিকেল ৪টা থেকে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ সেখানে অবস্থান নেয়। পরে জাগো হিন্দু পরিষদ, আর্য প্রতিনিধি সভা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সনাতন কল্যাণ জোট, জাতীয় হিন্দু মহাসংঘ ও ইসকনসহ সংহতি জানিয়ে তাতে অংশ নেয়। এর আগে সকালে একই দাবিতে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা। সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা আইন ও কমিশন গঠন করার বিষয়ে সরকারের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলে জানান হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্রু।
তিনি বলেন, “আমরা সরকারের কাছে আমাদের দাবির বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি, কিন্তু সরকার আমাদের দাবির বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। তাই আমরা আজকে শাহবাগ অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের বিক্ষোভ চলবে।”
সাজন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ও জুমার নামাজ থাকায় সকাল থেকে অবরোধের পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় সেখানে মশাল মিছিল হবে।
দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা নানুয়া দীঘির পাড়ে দর্পন সংঘের পূজাম-পে হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখা দেখে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। হামলা, ভাঙচুর চালানো হয় অন্তত ৮টি মন্দিরে। তার জের ধরে সেদিনই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মন্দিরে হামলা হয়, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় পাঁচজন। এর পরের কয়েকদিনে নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ কয়েকটি জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা হয়। তাতে নোয়াখালীতে নিহত হয় দুজন।
অবরোধ কর্মসূচি থেকে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত সময় সাম্প্রদায়িক হামলা বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ।
বিক্ষোভকারীরা ‘জাগো রে জাগো, হিন্দু জাগো’, ‘মৌলবাদের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘জিহাদিদের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’, ‘মন্দিরে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রংপুরে আগুন কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সেখানে বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় বলেন, “আপনারা জানেন, দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর কী নারকীয় হামলা হয়েছে! প্রশাসন সেখানে তাদের দ্বায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে, রাষ্ট্র সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ।
“সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতররা বার বার পার পেয়ে যাচ্ছে। এর আগেও সাম্প্রদায়িক হামলায় সংখ্যালঘুরা বিচার পায়নি। হামলার কুশীলবরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। আমরা চাই, হামলার নেপথ্যে যারা জড়িত, তাদেরকেও যেন বিচারের আওতায় আনা হয়।”
রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের মানববন্ধন : দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেছে রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার (২২ অক্টোকর) রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন রোডে এ কর্মসূচির আয়োজন করে তারা।
কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার সংখ্যালঘুদের বিষয়ে আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী বারবার কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তারপরও কেন হামলা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না, সেটা বুঝতে পারছি না। আমরা মনে করি, দুষ্কৃতকারীদের কঠোর শাস্তি না হওয়ায় বারবার এমন ঘটনা ঘটছে।’
স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ বলেন, ‘অষ্টমীর পর থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সহিংসতা চলছেই। বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘর, মন্দিরে অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন ও হত্যাকা-ের এমন নজির আগে ছিল না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকটি হামলা দেখে বোঝা যায়, এসব পূর্বপরিকল্পিত ছিল। পুলিশ এসব প্রতিরোধে কোনো সাহায্য করেনি। হাজীগঞ্জে পুলিশকে এক ঘণ্টা আগে হামলার শঙ্কা কথা জানানো হলেও তারা আসেনি। তিন দফায় হামলার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।’
এদিন, সারাদেশে রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদী কর্মসূচি করা হয় বলেও রাজধানীর কর্মসূচি থেকে জানান মিশনের দায়িত্বশীলরা।
সারা দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের : দেশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দুদের ওপর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে সারা দেশে গণঅনশন, গণঅবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ গতকাল শুক্রবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আজ ২৩ অক্টোবর শনিবার ভোর ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে তাদের এ কর্মসূচি চলবে। এ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বলেন, ঢাকার শাহবাগ ও চট্টগ্রামের অন্দরকিল্লাসহ দেশের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গণঅনশন কর্মসূচি চলবে। দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের একটি মন্দিরে কুরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাংচুর চালানো হয়। এরপর চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয় হিন্দুদের উপাসনালয়, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলার এসব ঘটনায় মোট ৭১টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং প্রায় পাঁচশ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।