ঢাকা ০৯:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

তবুও কিছু নেই

  • আপডেট সময় : ১২:১৬:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর ২০২১
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

রওনক বিনতে মুনীব প্রীতি : সব আছে তবুও যেনো কিছুই নেই কাছে
পাহাড়, নদী, ঝর্তা আগের মতোই আছে।কোকিলের কুহুতান ও ময়না টিয়ার গান
সমুদ্রে ঢেউ আছে তবুও কেনো নিষ্প্রাণ?

শূন্যতার মাঝে যেনো পরগাছা শূণ্যলতা
ইচ্ছেরা হতে চায় জীবনানন্দের বনলতা।
অতৃপ্ত স্বপ্নগুলো অপূর্ণতার দেয়াল বন্দী
পরিপূর্ণতার ছলে গেঁথেছিনু কতো ফন্দি।

আকাশের নীল আছে বাতাসে শব্দ ভাসে
শহরে কোলাহল আছে দিগন্তে সূর্য হাসে।
তবুও কেনো অস্থিরতা? দৃষ্টি মাঝে বিবর্ণ?
প্রাণপণ প্রচেষ্টায় লিপ্ত, লক্ষ্য হবে যে পূর্ণ।

তিতির পাখি
শওকত আলী : এক দেশে ছিল প্রভাবশালী বাদশাহ,তিনি সকল প্রাণীর ভাষা বুঝতে পারতেন। বাদশার এমন ক্ষমতার কারণে তার দেশের লোকজন কোন অন্যায় করতে ভয় পেতো। যদি কেউ অন্যায় করতো তাকে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে তার শাস্তি দেওয়া হতো। বাদশাহ যাতে সুন্দর শান্ত ও ন্যায়ের সাথে দেশ শাসন করতে পারার জন্য প্রত্যেক প্রাণীদের মধ্যে থেকেও একজন করে মন্ত্রী নিয়োগ দিলেন। তারাও বাদশাহের দরবারে উপস্থিত থাকতো।
তিতির পাখি ছিল পাখিদের মন্ত্রী, তার বুদ্ধির কারণে থাকে মন্ত্রী করা হয়। তিতিরের বুদ্ধির প্রসিদ্ধীও ছিল সারা দেশে। তাই বাদশাহ তিতিরকে খুব ভালোবাসতেন।তিতির পাখি বুদ্ধি ও সততার কারণে মন্ত্রীর পাশাপাশি বাদশার চিঠি বাহক বা দূত ও ছিলেন। বাদশাহ কোন সমস্যায় পড়লে তিতির পাখির কাছে পরামর্শ চাইতো।তিতির ও উত্তম পরামর্শটিই দিতো। তিতিরের এতো সফলতা দেখে, মানুষের মন্ত্রীর খুব খারাপ লাগতো। িেতরকে খুব ঘৃণা ও করতো।
বাদশাহ যাতে তিতির পাখি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং মানুষের মন্ত্রী দিকে সুদৃষ্টি দেন সেই জন্য একদিন বাদশাহ ও রাজদরবারে সকলকে মন্ত্রীর বাড়িতে নৈশভোজে দাওয়াত দেন। মন্ত্রীর দাওয়াতে সাড়া দিয়ে সকলে উপস্থিত হলেও তিতির পাখি উপস্থিত হলোনা। উপস্থিত না হওয়ার একটি ও কারণ ছিল। সন্ধ্যাবেলা এক কাক এসে নালিশ করলো, কোকিল তার বাসায় ডিম পেড়ে, ডিমে তা দিচ্ছে। এদিকে কাকের থাকার কোন স্থান নেই। কাক অনেক বুঝিয়ে বলেও, কুকিল কোন মতে কাকের বাসা ছেড়ে দিচ্ছে না। মন্ত্রী তিতির বিচারকার্য শুরু করার জন্য কোকিলকে ডেকে পাঠালো। জিজ্ঞেসা করা হলো কাকের করা দাবি গুলো সত্যি কি-না? কোকিল মিষ্টি সুরে বলে উঠলো, আসলেই যদি বাসাটা কাকের হয়, তাহলে সে কেন একটি প্রমাণ আনছে না? মন্ত্রী তিতির কাক কে একটি প্রমাণ আনতে বলে,কিন্তু কাক কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ আনতে পারেনি।তখন কোকিল মন্ত্রীকে বললেন, কাকযে মিথ্যা বলছে তা তো এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট। তিতির তার কথায় কোন সাড়া না দিয়ে। কোকিল কে আদেশ দিলেন, সে এই মুহূর্তে তার ডিম নিয়ে কাকের বাসা ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে। তখন কোকিল বাদশার সামনে চেচিয়ে বলে উঠলো,আমাদের দেশে কখন থেকে অন্যায় ও জুলুম শুরু হয়েছে সৃষ্টিকর্তা’ই ভালো জানেন।
কোকিল তার ন্যায় ফিরে পেতে,মন্ত্রী তিতিরের বিরুদ্ধে বিচার নিয়ে বাদশার দরবারে উপস্থিত। কোকিল তার সাথে ঘটে যাওয়া সকল কিছু বাদশাকে বললেন। তিতিরের এমন আচরণ বাদশাহ বিশ্বাস করতে পারছিনা। বাদশাহ মন্ত্রী তিতিকে তলব করলো। তিতির আসতে একটু সময় নিচ্ছিলেন। বাদশাহ তো খুব চিন্তিত হলেন। অনেকক্ষণ পরে তিতির রাজদরবারে উপস্থিত হয়। বাদশাহ তিতির কে তাঁর এমন বিচার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে, তিতির বলেন মানুষের মাঝে প্রচলিত আছে কোকিল কখনো নিজের জন্য নিজে বাসা তৈরি করে না। আর মানুষ হলো সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষের মাঝে প্রচলিত কথা ভুল হতে পারে না। তখন কোকিলের বুঝতে আর দেরি হলনা যে অন্য জনের ক্ষতি করে নিজে কখনো সুখী হতে পারে না। সুখী হতে হলে নিজেকে’ই করতে হয় নিজের কাজ।
মন্ত্রী তিতিরের এমন বুদ্ধিদীপ্ত বিচার ও বিচক্ষণতায় মুগ্ধ হয়ে বাদশাহ বললো তিতির আজ তুমি যাই চাইবে তাই তুমি পাবে। তখন মন্ত্রী তিতির বললো আমার প্রিয় বাদশাহ, তাঁর সভাসদ, এবং দেশের সকল সৈনিকে,আমার বনের ভেতরে নদী তীরে মধ্যান্থ গ্রহণের আমন্ত্রণ রইলো। বাদশাহ মুচকি হাসলেন এবং তিতিরের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন।
পরের দিন বাদশাহ, সভাসদ, এবং দেশের সকল সৈনিক সহ নিমন্ত্রিত স্থানের দিকে রওনা হলেন। সকলেই মধ্যান্থের পূর্বে উপস্থিত হয়ে গেলেন। কিন্তু সেখানে তখনো খাওয়া দাওয়ার কোন প্রকার ব্যবস্তা করা হয়নি। খাওয়ার সময় হলে তিতির আকাশে উড়ে গিয়ে একটা বড়সড় ফড়িং শিকার করে এবং তা নদীর পানিতে পেলে দিয়ে বললো। ফড়িং এর গোস্তো সকলে না পেলেও ঝোলের কোন অভাব হবে না। সকলেই তৃপ্তি মিটিয়ে আহার করোন। সকলের প্রয়োজন অল্পতে তুষ্ট হওয়া।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

তবুও কিছু নেই

আপডেট সময় : ১২:১৬:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর ২০২১

রওনক বিনতে মুনীব প্রীতি : সব আছে তবুও যেনো কিছুই নেই কাছে
পাহাড়, নদী, ঝর্তা আগের মতোই আছে।কোকিলের কুহুতান ও ময়না টিয়ার গান
সমুদ্রে ঢেউ আছে তবুও কেনো নিষ্প্রাণ?

শূন্যতার মাঝে যেনো পরগাছা শূণ্যলতা
ইচ্ছেরা হতে চায় জীবনানন্দের বনলতা।
অতৃপ্ত স্বপ্নগুলো অপূর্ণতার দেয়াল বন্দী
পরিপূর্ণতার ছলে গেঁথেছিনু কতো ফন্দি।

আকাশের নীল আছে বাতাসে শব্দ ভাসে
শহরে কোলাহল আছে দিগন্তে সূর্য হাসে।
তবুও কেনো অস্থিরতা? দৃষ্টি মাঝে বিবর্ণ?
প্রাণপণ প্রচেষ্টায় লিপ্ত, লক্ষ্য হবে যে পূর্ণ।

তিতির পাখি
শওকত আলী : এক দেশে ছিল প্রভাবশালী বাদশাহ,তিনি সকল প্রাণীর ভাষা বুঝতে পারতেন। বাদশার এমন ক্ষমতার কারণে তার দেশের লোকজন কোন অন্যায় করতে ভয় পেতো। যদি কেউ অন্যায় করতো তাকে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে তার শাস্তি দেওয়া হতো। বাদশাহ যাতে সুন্দর শান্ত ও ন্যায়ের সাথে দেশ শাসন করতে পারার জন্য প্রত্যেক প্রাণীদের মধ্যে থেকেও একজন করে মন্ত্রী নিয়োগ দিলেন। তারাও বাদশাহের দরবারে উপস্থিত থাকতো।
তিতির পাখি ছিল পাখিদের মন্ত্রী, তার বুদ্ধির কারণে থাকে মন্ত্রী করা হয়। তিতিরের বুদ্ধির প্রসিদ্ধীও ছিল সারা দেশে। তাই বাদশাহ তিতিরকে খুব ভালোবাসতেন।তিতির পাখি বুদ্ধি ও সততার কারণে মন্ত্রীর পাশাপাশি বাদশার চিঠি বাহক বা দূত ও ছিলেন। বাদশাহ কোন সমস্যায় পড়লে তিতির পাখির কাছে পরামর্শ চাইতো।তিতির ও উত্তম পরামর্শটিই দিতো। তিতিরের এতো সফলতা দেখে, মানুষের মন্ত্রীর খুব খারাপ লাগতো। িেতরকে খুব ঘৃণা ও করতো।
বাদশাহ যাতে তিতির পাখি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং মানুষের মন্ত্রী দিকে সুদৃষ্টি দেন সেই জন্য একদিন বাদশাহ ও রাজদরবারে সকলকে মন্ত্রীর বাড়িতে নৈশভোজে দাওয়াত দেন। মন্ত্রীর দাওয়াতে সাড়া দিয়ে সকলে উপস্থিত হলেও তিতির পাখি উপস্থিত হলোনা। উপস্থিত না হওয়ার একটি ও কারণ ছিল। সন্ধ্যাবেলা এক কাক এসে নালিশ করলো, কোকিল তার বাসায় ডিম পেড়ে, ডিমে তা দিচ্ছে। এদিকে কাকের থাকার কোন স্থান নেই। কাক অনেক বুঝিয়ে বলেও, কুকিল কোন মতে কাকের বাসা ছেড়ে দিচ্ছে না। মন্ত্রী তিতির বিচারকার্য শুরু করার জন্য কোকিলকে ডেকে পাঠালো। জিজ্ঞেসা করা হলো কাকের করা দাবি গুলো সত্যি কি-না? কোকিল মিষ্টি সুরে বলে উঠলো, আসলেই যদি বাসাটা কাকের হয়, তাহলে সে কেন একটি প্রমাণ আনছে না? মন্ত্রী তিতির কাক কে একটি প্রমাণ আনতে বলে,কিন্তু কাক কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ আনতে পারেনি।তখন কোকিল মন্ত্রীকে বললেন, কাকযে মিথ্যা বলছে তা তো এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট। তিতির তার কথায় কোন সাড়া না দিয়ে। কোকিল কে আদেশ দিলেন, সে এই মুহূর্তে তার ডিম নিয়ে কাকের বাসা ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে। তখন কোকিল বাদশার সামনে চেচিয়ে বলে উঠলো,আমাদের দেশে কখন থেকে অন্যায় ও জুলুম শুরু হয়েছে সৃষ্টিকর্তা’ই ভালো জানেন।
কোকিল তার ন্যায় ফিরে পেতে,মন্ত্রী তিতিরের বিরুদ্ধে বিচার নিয়ে বাদশার দরবারে উপস্থিত। কোকিল তার সাথে ঘটে যাওয়া সকল কিছু বাদশাকে বললেন। তিতিরের এমন আচরণ বাদশাহ বিশ্বাস করতে পারছিনা। বাদশাহ মন্ত্রী তিতিকে তলব করলো। তিতির আসতে একটু সময় নিচ্ছিলেন। বাদশাহ তো খুব চিন্তিত হলেন। অনেকক্ষণ পরে তিতির রাজদরবারে উপস্থিত হয়। বাদশাহ তিতির কে তাঁর এমন বিচার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে, তিতির বলেন মানুষের মাঝে প্রচলিত আছে কোকিল কখনো নিজের জন্য নিজে বাসা তৈরি করে না। আর মানুষ হলো সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষের মাঝে প্রচলিত কথা ভুল হতে পারে না। তখন কোকিলের বুঝতে আর দেরি হলনা যে অন্য জনের ক্ষতি করে নিজে কখনো সুখী হতে পারে না। সুখী হতে হলে নিজেকে’ই করতে হয় নিজের কাজ।
মন্ত্রী তিতিরের এমন বুদ্ধিদীপ্ত বিচার ও বিচক্ষণতায় মুগ্ধ হয়ে বাদশাহ বললো তিতির আজ তুমি যাই চাইবে তাই তুমি পাবে। তখন মন্ত্রী তিতির বললো আমার প্রিয় বাদশাহ, তাঁর সভাসদ, এবং দেশের সকল সৈনিকে,আমার বনের ভেতরে নদী তীরে মধ্যান্থ গ্রহণের আমন্ত্রণ রইলো। বাদশাহ মুচকি হাসলেন এবং তিতিরের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন।
পরের দিন বাদশাহ, সভাসদ, এবং দেশের সকল সৈনিক সহ নিমন্ত্রিত স্থানের দিকে রওনা হলেন। সকলেই মধ্যান্থের পূর্বে উপস্থিত হয়ে গেলেন। কিন্তু সেখানে তখনো খাওয়া দাওয়ার কোন প্রকার ব্যবস্তা করা হয়নি। খাওয়ার সময় হলে তিতির আকাশে উড়ে গিয়ে একটা বড়সড় ফড়িং শিকার করে এবং তা নদীর পানিতে পেলে দিয়ে বললো। ফড়িং এর গোস্তো সকলে না পেলেও ঝোলের কোন অভাব হবে না। সকলেই তৃপ্তি মিটিয়ে আহার করোন। সকলের প্রয়োজন অল্পতে তুষ্ট হওয়া।