ঢাকা ০৩:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যা: সেই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

  • আপডেট সময় : ১২:৫৩:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি বাসার ৭ তলায় মা লায়লা ফিরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যার ঘটনায় কথিত গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত গৃহকর্মীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে নিহত লায়লা ফিরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানা একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে আজিজুল ইসলাম লেখেন, আমি পেশায় একজন শিক্ষক। বর্তমানে শাহজাহান রোডের বাসা নং-৩২/২/এ (৭/বি) ফ্ল্যাটে থাকি। গত চারদিন পূর্বে আসামি (আয়েশা) আমার বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সোমবার ৮ ডিসেম্বর সকাল অনুমান ৭টার সময় আমি আমার কর্মস্থল উত্তরায় চলে যাই। আমি আমার কর্মস্থলে উপস্থিত থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরবর্তীতে আমি নিরুপায় হয়ে বেলা অনুমান ১১টার সময় বাসায় ফেরত এসে দেখতে পাই যে, আমার স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে এবং আমার মেয়ের গলার ডান দিকে কাটা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেইন গেটের দিকে পড়ে আছে। আমার মেয়ের ওই অবস্থা দেখে তাকে উদ্ধার করে পরিছন্নকর্মী মো. আশিকের মাধ্যমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এজাহারে তিনি আরো উল্লেখ করেন, আমি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখতে পাই, উল্লিখিত আসামি (গৃহকর্মী আয়েশা) সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে কাজ করার জন্য বাসায় আসেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আমার মেয়ের একটি মোবাইল, একটি ল্যাপটপ স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী (সঠিক পরিমাণ স্মরণ নাই) নিয়ে যায়।

সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে আমি নিশ্চিত হই যে, অজ্ঞাত কারণে সকাল ৭টা ৫১ থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় আমার স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি অথবা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি জানান, মোহাম্মদপুরের শাজাহান রোডে মা ও তার মেয়েকে হত্যার ঘটনায় কথিত গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামি করে নিহত নাফিসার বাবা আজম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানা একটি মামলা (মামলা নং-২৯) দায়ের করেছেন। মামলাটিকে এসআই শহিদুল ওসমান মাসুম তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার (৮ ডিসেম্বর) কথিত গৃহকর্মী আয়েশা মা লায়লা ফিরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যা করে পালিয়ে যান। সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে তিনি বোরকা পরে লিফটে উঠে ৭ তলায় যান। পরে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে মুখে মাস্ক লাগিয়ে কাঁধে একটি ব্যাগ ও স্কুল ড্রেস পরে বেরিয়ে যান। নিহত নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ জানায়, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লায়লা ফিরোজের মরদেহ দেখতে পাই। পরে বাথরুমের বালতি থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি সুইচ গিয়ার ও একটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করি। হত্যার পর ওই গৃহকর্মী বাথরুমে গোসল করে রক্ত পরিষ্কার শেষে নাফিজার স্কুল ড্রেস পরে পালিয়ে যান।

এসি/আপ্র/০৯/১২/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে হত্যা: সেই গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় : ১২:৫৩:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি বাসার ৭ তলায় মা লায়লা ফিরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যার ঘটনায় কথিত গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত গৃহকর্মীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে নিহত লায়লা ফিরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানা একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে আজিজুল ইসলাম লেখেন, আমি পেশায় একজন শিক্ষক। বর্তমানে শাহজাহান রোডের বাসা নং-৩২/২/এ (৭/বি) ফ্ল্যাটে থাকি। গত চারদিন পূর্বে আসামি (আয়েশা) আমার বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সোমবার ৮ ডিসেম্বর সকাল অনুমান ৭টার সময় আমি আমার কর্মস্থল উত্তরায় চলে যাই। আমি আমার কর্মস্থলে উপস্থিত থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরবর্তীতে আমি নিরুপায় হয়ে বেলা অনুমান ১১টার সময় বাসায় ফেরত এসে দেখতে পাই যে, আমার স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে এবং আমার মেয়ের গলার ডান দিকে কাটা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেইন গেটের দিকে পড়ে আছে। আমার মেয়ের ওই অবস্থা দেখে তাকে উদ্ধার করে পরিছন্নকর্মী মো. আশিকের মাধ্যমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এজাহারে তিনি আরো উল্লেখ করেন, আমি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখতে পাই, উল্লিখিত আসামি (গৃহকর্মী আয়েশা) সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে কাজ করার জন্য বাসায় আসেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আমার মেয়ের একটি মোবাইল, একটি ল্যাপটপ স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী (সঠিক পরিমাণ স্মরণ নাই) নিয়ে যায়।

সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে আমি নিশ্চিত হই যে, অজ্ঞাত কারণে সকাল ৭টা ৫১ থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় আমার স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি অথবা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি জানান, মোহাম্মদপুরের শাজাহান রোডে মা ও তার মেয়েকে হত্যার ঘটনায় কথিত গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামি করে নিহত নাফিসার বাবা আজম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানা একটি মামলা (মামলা নং-২৯) দায়ের করেছেন। মামলাটিকে এসআই শহিদুল ওসমান মাসুম তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার (৮ ডিসেম্বর) কথিত গৃহকর্মী আয়েশা মা লায়লা ফিরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যা করে পালিয়ে যান। সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে তিনি বোরকা পরে লিফটে উঠে ৭ তলায় যান। পরে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে মুখে মাস্ক লাগিয়ে কাঁধে একটি ব্যাগ ও স্কুল ড্রেস পরে বেরিয়ে যান। নিহত নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ জানায়, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লায়লা ফিরোজের মরদেহ দেখতে পাই। পরে বাথরুমের বালতি থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি সুইচ গিয়ার ও একটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করি। হত্যার পর ওই গৃহকর্মী বাথরুমে গোসল করে রক্ত পরিষ্কার শেষে নাফিজার স্কুল ড্রেস পরে পালিয়ে যান।

এসি/আপ্র/০৯/১২/২০২৫