ঢাকা ০৩:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেফতার ৪ জন

  • আপডেট সময় : ১২:১৯:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

সাভার সংবাদদাতা: ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে পিকনিকের কথা বলে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার এসআই শফিকুল ইসলাম সুমন।

এর আগে, বুধবার রাতে ভুক্তভোগীর বোন বাদী হয়ে চার জনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন।

গ্রেফতাররা হলেন- দেলোয়ার ভূঁইয়া (২৬), তাজুল ইসলাম তাজ (২৩), শ্রাবণ সাহা (২৩) ও অন্তু দেওয়ান (২৮)। তারা সাভারের আশুলিয়ার বেসরকারি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী ওই তরুণী আশুলিয়ার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি পরিবারের সঙ্গে ধামরাই পৌরসভায় বসবাস করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে পিকনিকের কথা বলে ভুক্তভোগীকে আশুলিয়ার ফুলেরটেক এলাকায় একটি বাসায় নিয়ে যায় অভিযুক্ত প্রথম তিন জন। যাওয়ার সময় তাকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে অচেতন করার ওষুধ খাওয়ালে কিছুক্ষণ পর ভুক্তভোগী অচেতন হয়ে পড়েন। বিকাল ৫টার দিকে জ্ঞান ফিরলে তিনি ওই বাসায় তিন জনকে দেখতে পান। তখন ওই তিন জন তাকে ধর্ষণ করে। এ ছাড়া ভিডিও ও ছবি ধারণ করা হয়েছে বলে বুঝতে পারেন। এ সময় তিনি চিৎকার করলে অভিযুক্তরা তাকে আইনি ব্যবস্থা নিলে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ও অ্যাসিড দিয়ে মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকি দেয়।

এরপরও তারা বিভিন্ন সময় একাধিক ধাপে হুমকি দিয়ে ৯৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এরইমধ্যে গত ৬ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে তাকে ফের আশুলিয়ার বাইশ মাইল এলাকায় আটকে ৪ নম্বর অভিযুক্তের সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক করতে বলে। এতে রাজি না হলে তাকে প্রথম তিন অভিযুক্ত চড়থাপ্পড়সহ মারধর করে।

একপর্যায়ে জোরপূর্বক নেশাজাতীয় বিষাক্ত পানীয় পান করায়। তাদের কবল থেকে ছাড় পেয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে সেখানেই অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে প্রথমে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ই তার পরিবারের এক সদস্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। চিকিৎসার পর তিনি ফের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরলে গত ২৬ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে অভিযুক্তদের দেখতে পান তিনি।

একপর্যায়ে অভিযুক্তরা তাকে একটি কক্ষে নিয়ে দরজা আটকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দেওয়া অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয় ও নতুন জীবন শুরু করতে পরামর্শ দেয়। এতেও সায় না দিয়ে বের হতে গেলে তাকে গালিগালাজ ও হুমকি দেয়।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, এ ঘটনায় মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আগামীকাল আদালতে পাঠানো হবে।

আশুলিয়া থানার ওসি আব্দুল হান্নান বলেন, এটা গত ৪ এপ্রিলের ঘটনা। ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করেছে ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় ১৭ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামীকাল তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে।

এসি/আপ্র/০৪/১২/২০২৫

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেফতার ৪ জন

আপডেট সময় : ১২:১৯:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

সাভার সংবাদদাতা: ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে পিকনিকের কথা বলে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার এসআই শফিকুল ইসলাম সুমন।

এর আগে, বুধবার রাতে ভুক্তভোগীর বোন বাদী হয়ে চার জনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন।

গ্রেফতাররা হলেন- দেলোয়ার ভূঁইয়া (২৬), তাজুল ইসলাম তাজ (২৩), শ্রাবণ সাহা (২৩) ও অন্তু দেওয়ান (২৮)। তারা সাভারের আশুলিয়ার বেসরকারি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী ওই তরুণী আশুলিয়ার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি পরিবারের সঙ্গে ধামরাই পৌরসভায় বসবাস করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে পিকনিকের কথা বলে ভুক্তভোগীকে আশুলিয়ার ফুলেরটেক এলাকায় একটি বাসায় নিয়ে যায় অভিযুক্ত প্রথম তিন জন। যাওয়ার সময় তাকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে অচেতন করার ওষুধ খাওয়ালে কিছুক্ষণ পর ভুক্তভোগী অচেতন হয়ে পড়েন। বিকাল ৫টার দিকে জ্ঞান ফিরলে তিনি ওই বাসায় তিন জনকে দেখতে পান। তখন ওই তিন জন তাকে ধর্ষণ করে। এ ছাড়া ভিডিও ও ছবি ধারণ করা হয়েছে বলে বুঝতে পারেন। এ সময় তিনি চিৎকার করলে অভিযুক্তরা তাকে আইনি ব্যবস্থা নিলে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ও অ্যাসিড দিয়ে মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকি দেয়।

এরপরও তারা বিভিন্ন সময় একাধিক ধাপে হুমকি দিয়ে ৯৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এরইমধ্যে গত ৬ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে তাকে ফের আশুলিয়ার বাইশ মাইল এলাকায় আটকে ৪ নম্বর অভিযুক্তের সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক করতে বলে। এতে রাজি না হলে তাকে প্রথম তিন অভিযুক্ত চড়থাপ্পড়সহ মারধর করে।

একপর্যায়ে জোরপূর্বক নেশাজাতীয় বিষাক্ত পানীয় পান করায়। তাদের কবল থেকে ছাড় পেয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে সেখানেই অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে প্রথমে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ই তার পরিবারের এক সদস্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। চিকিৎসার পর তিনি ফের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরলে গত ২৬ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে অভিযুক্তদের দেখতে পান তিনি।

একপর্যায়ে অভিযুক্তরা তাকে একটি কক্ষে নিয়ে দরজা আটকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দেওয়া অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয় ও নতুন জীবন শুরু করতে পরামর্শ দেয়। এতেও সায় না দিয়ে বের হতে গেলে তাকে গালিগালাজ ও হুমকি দেয়।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, এ ঘটনায় মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আগামীকাল আদালতে পাঠানো হবে।

আশুলিয়া থানার ওসি আব্দুল হান্নান বলেন, এটা গত ৪ এপ্রিলের ঘটনা। ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করেছে ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় ১৭ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামীকাল তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে।

এসি/আপ্র/০৪/১২/২০২৫