প্রত্যাশা ডেস্ক: বুধবার হংকংয়ের একটি বহুতল আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমপক্ষে ১২৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তারা আরো জানিয়েছে, ৭৯ জন আহত হয়েছে এবং ১৬ জনের মৃতদেহ ভবনের ভেতরে পড়ে আছে। এখনো কয়েক ডজন মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় পার হয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তা সচিব ক্রিস ট্যাং বলেন, ‘ঘটনাস্থলে ১২৪ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। চারজনকে হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভবনগুলোতে এখনো ষোলটি পোড়া মৃতদেহ রয়েছে। মোট ৭৯ জন আহত হয়েছেন।’ তিনি আরো হতাহতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
বুধবার বিকেলে ওয়াং ফুক কোর্টে আগুন লেগে যায় এবং দ্রুত হাউজিং কমপ্লেক্সের আটটি আবাসিক টাওয়ারের মধ্যে সাতটিতে ছড়িয়ে যায়। নিরাপত্তা প্রধান ট্যাং পিং-কুয়াং আগুনের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার জন্য দায়ী করেছেন অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকগুলোর জানালার বাইরে রাখা স্টাইরোফোমকে। এ ছাড়া ভবনের আটটি ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেম ‘সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনি’।
বেশ কয়েকজন বাসিন্দা এর আগে জানিয়েছেন, আগুন লাগার সময় তাদের অ্যালার্ম বাজেনি। এ ঘটনায় পরবর্তীতে মামলা করা হবে নিরাপত্তা প্রধান জানিয়েছেন।
হংকংয়ের শিক্ষা ব্যুরো শুক্রবার ঘোষণা করেছে, তাই পো এলাকার সব স্কুলে জরুরি ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলো, বিশেষ স্কুলগুলো এক লাখ হংকং ডলার পাবে। কেজি বা কিন্ডারগার্টেনগুলো পাবে পঞ্চাশ হাজার হংকং ডলার।
এই তহবিল শিক্ষার্থীদের, শিক্ষকদের এবং অভিভাবকদের সহায়তার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। হংকং জকি ক্লাবও প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীর জন্য পাঁচ হাজার হংকং ডলার ত্রাণ প্রদান করবে।
এ ছাড়া শিক্ষক ও অভিভাবকদের জন্য শনিবার ও রবিবার দুইদিনে মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা নিয়ে পাঁচটি অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বক্তাদের মধ্যে থাকবেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানী এবং সামাজিক কর্মী।
কর্মকর্তারা বলছেন, আগুন এখন প্রায় সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে। আগুন নিভে যাওয়া ভবনগুলোতে এখনো যারা নিখোঁজ রয়েছেন তাদের খুঁজে বের করতে উদ্ধারকর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। হংকংয়ের ঘনবসতিপূর্ণ ওয়াং ফুক কোর্ট আবাসিক কমপ্লেক্সের আটটি ব্লকে মোট ২ হাজার ফ্ল্যাটে ৪ হাজার ৬০০-এর বেশি মানুষ বসবাস করে। এক একটি ভবন ৩২তলার।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের পর জরুরি ভিত্তিতে খোলা আটটি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৯০০ বাসিন্দাকে রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরে আপনজনকে খুঁজে মরিয়া হয়ে অপেক্ষা করছেন অনেকে। এ ঘটনায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং শোক প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে চীনা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান সিসিটিভি।
ছবিসূত্র : রয়টার্স
ওআ/আপ্র/২৮/১১/২০২৫























