ঢাকা ১১:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
স্বাস্থ্য প্রতিদিন====

চুল ও ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরিষার তেল

  • আপডেট সময় : ০৭:৫২:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: সরিষার তেলের ব্যবহার বাংলাদেশে দৈনন্দিন না হলেও রান্নায় বা চুলের যত্নে মাঝে মধ্যে ব্যবহার করে থাকেন অনেকে। সরিষা গাছের বীজ থেকে এই তেল পাওয়া যায়। কালো সরিষা, বাদামি সরিষা ও সাদা সরিষা গাছ থেকে এই তেল পাওয়া যায়।

২০১৬ সালের এক গবেষণায় (ইঁদুরের ওপর পরিচালিত) দেখা গেছে, সরিষার তেল শরীরের কিছু ব্যথা-গ্রাহক রিসেপ্টরকে বাধা দেয়। ফলে এটি পেশির ব্যথা বা শরীরের অন্যান্য ধরনের ব্যথা উপশমে কার্যকর হতে পারে। তবে মানুষের ক্ষেত্রে একই রকম ব্যথানাশক প্রভাব ফেলে কি না, তা নিশ্চিত করতে আরো গবেষণা প্রয়োজন।

একই বছরের আরেকটি গবেষণায় ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সরিষার তেলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অর্থাৎ এটি জীবাণুর বৃদ্ধি থামাতে এবং ত্বক, মাথার ত্বক ও শরীরের সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।

ভারতীয় ও নেপালি রান্নায় বেশ জনপ্রিয় এই ঝাঁজে ভরা তেল। আবার যুক্তরাষ্ট্রে এই তেল মূলত চুল ও মালিশের তেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রে এই তেল খাবারে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। কর্তৃপক্ষ বলছে, এতে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত এরুসিক অ্যাসিড থাকতে পারে; যা পশু অধ্যয়নে স্বাস্থ্যঝুঁকির সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ মিলেছে।

চুলের যত্নে আমাদের দেশে নারকেল তেল জনপ্রিয় হলেও সরিষার তেলেও রয়েছে বেশ উপকার। সাধারণত ছেলেদের চুলে সরিষার তেল ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। চুলের যত্নে সরিষার তেল ব্যবহার করার কারণ হলো-

প্রাকৃতিক কন্ডিশনার: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো প্রাকৃতিক চর্বি সমৃদ্ধ হওয়ায় সরিষার তেল চুলের জন্য ভালো কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। প্রতি ১০০ গ্রাম সরিষার তেলে রয়েছে প্রায় ৫৯ গ্রাম মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ২১ গ্রাম পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ১২ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট।

হেয়ার মাস্ক: চুলে আর্দ্রতা জোগাতে সরিষার তেল হেয়ার মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করা যায়। সরিষার তেলে থাকা ন্যাচারাল ফ্যাট প্রতিটি চুলের গোড়ায় আবরণ তৈরি করে তা সিল করে দেয়। ফলে চুল আরও উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়ে উঠতে পারে। এটি চুলের শুষ্কতা কমাতে, মাথার ত্বকের শুষ্ক ও খসখসে ভাব দূর করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি চুলের ফ্রিজি ভাবও কমায়।

সরিষার তেলের হেয়ার মাস্ক তৈরি পদ্ধতি: শুধু এক টেবিল চামচ সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। আবার চাইলে একাধিক তেলের মিশ্রণও বানানো যায়। এক টেবিল চামচ সরিষার তেল, এক টেবিল চামচ বাদাম তেল ও এক টেবিল চামচ জোজোবা তেল একসঙ্গে নিয়ে সামান্য গরম করুন। এরপর চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত মিশ্রণটি লাগান। কমপক্ষে ৩০ মিনিট রেখে তারপর ধুয়ে ফেলুন। গরম পানি দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন; যাতে কোনো তেল চুলে বা মাথায় থেকে না যায়। মাসে একবার এভাবে ব্যবহার করতে পারেন।

চুলের ক্ষয় রোধ: চুলের আগা ফাটা বা চুল ভেঙে যাওয়া রোধে সরিষার তেল বেশ ভালো কাজ করে। এ ছাড়া হিট ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে এই তেল। পানিবাহিত কারণে চুলের ক্ষতি ঠেকাতে এই তেল বেশ ভালো কাজ করে।

ত্বকের প্রদাহ ও ব্যথা কমে: সরিষার তেল ত্বকে মাখলে একধরনের উষ্ণতা সৃষ্টি হয়। বহুদিন ধরে এটি ঘরোয়া উপায়ে পেশির ব্যথা উপশমে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গবেষণায় দেখা গেছে, সরিষার তেলে মরিচের উপাদান ক্যাপসাইসিনের মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ক্যাপসাইসিন নিয়ে বহু গবেষণায় এটিকে প্রদাহনাশক ও ব্যথানাশক উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ কারণে সরিষার তেল ডার্মাটাইটিস, একজিমা, সোরিয়াসিস ও ফলিকুলাইটিসের মতো মাথার ত্বক ও চুলের কিছু সমস্যাও প্রশমনে সহায়ক হতে পারে।

আঙুলের ডগায় অল্প পরিমাণ তেল নিয়ে আলতোভাবে মাথার ত্বকে মাসাজ করুন। সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা পর্যন্ত রাখতে পারেন। এরপর ভালোভাবে ধুয়ে শ্যাম্পু দিয়ে নিন।

খুশকি নিয়ন্ত্রণ: সরিষার তেলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। মাথার ত্বকে এ তেল ব্যবহার করলে ইস্টের বৃদ্ধি থেকে সৃষ্ট খুশকি এবং ব্রণ বা ফুসকুড়ির মতো সমস্যাগুলো প্রতিরোধ বা কমাতে সহায়ক হতে পারে।

হাতের তালুতে অল্প পরিমাণ তেল নিয়ে পুরো চুলে বা শুধু চুলের ডগায় লাগাতে পারেন। প্রায় ১০ মিনিট রেখে দিয়ে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।

কিছু ক্ষেত্রে হতে পারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: সরিষার তেলে কারও কারো জন্য এটি ত্বকে জ্বালাপোড়ার কারণ হয়। সরিষার তেলে প্রাকৃতিকভাবে ক্যাপসাইসিন, এরুসিক অ্যাসিড ও অ্যালাইল থায়োসায়ানেট নামক সালফার যৌগ থাকে। এগুলো ত্বকে হালকা জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। আবার কিছু মানুষের জন্য ক্ষতিকরও হতে পারে। সরিষার তেল থেকে কী কী সমস্যায় পড়তে পারেন—

ফোসকা বা চর্মরোগ: সরিষার তেল খেলে বা ত্বকে ব্যবহারে কিছু মানুষের মধ্যে লাইকেন প্ল্যানাস নামে পরিচিত একধরনের চর্মরোগ সৃষ্টি করতে পারে। এই রোগে ত্বকে বেগুনি রঙের ক্ষত বা সাদা ফোসকা দেখা দেয়।

ত্বক ও চোখে জ্বালাপোড়া: চুল বা মাথার ত্বকে অতিরিক্ত সরিষার তেল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত। এতে থাকা প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান ত্বক বা চোখে জ্বালা ও চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে।

রোমকূপ বন্ধ হওয়া: অন্য তেলের মতো সরিষার তেলও দীর্ঘ সময় রেখে দিলে রোমকূপ বন্ধ করে দিতে পারে। তাই চুলে সরিষার তেল ব্যবহারের পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলা জরুরি। না হলে চুলে অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব, মাথার ত্বকের রোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং সরিষার তেলের তীব্র গন্ধ থেকে যাবে।

শিশুদের জন্য উপযুক্ত নয়: শিশু ও ছোট বাচ্চাদের শরীরে সরিষার তেল ব্যবহার করা উচিত নয়। এ তেলের ঝাঁজালো স্বাদ ও তীব্র গন্ধ সৃষ্টিকারী রাসায়নিক উপাদান তাদের সংবেদনশীল ত্বকে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। তবে প্রথমবারের মতো সরিষার তেল ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করে নেওয়া উচিত।

যদি চুল পড়া বা পাতলা হওয়ার সমস্যা থাকে কিংবা মাথার ত্বকে অ্যাকজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ফুসকুড়ি বা জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যদি আপনার চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তাহলে সরিষার তেল বা অন্যান্য চুলের পরিচর্যার পদ্ধতি কার্যকর না-ও হতে পারে।

আজকের প্রত্যাশা/ কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

স্বাস্থ্য প্রতিদিন====

চুল ও ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরিষার তেল

আপডেট সময় : ০৭:৫২:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: সরিষার তেলের ব্যবহার বাংলাদেশে দৈনন্দিন না হলেও রান্নায় বা চুলের যত্নে মাঝে মধ্যে ব্যবহার করে থাকেন অনেকে। সরিষা গাছের বীজ থেকে এই তেল পাওয়া যায়। কালো সরিষা, বাদামি সরিষা ও সাদা সরিষা গাছ থেকে এই তেল পাওয়া যায়।

২০১৬ সালের এক গবেষণায় (ইঁদুরের ওপর পরিচালিত) দেখা গেছে, সরিষার তেল শরীরের কিছু ব্যথা-গ্রাহক রিসেপ্টরকে বাধা দেয়। ফলে এটি পেশির ব্যথা বা শরীরের অন্যান্য ধরনের ব্যথা উপশমে কার্যকর হতে পারে। তবে মানুষের ক্ষেত্রে একই রকম ব্যথানাশক প্রভাব ফেলে কি না, তা নিশ্চিত করতে আরো গবেষণা প্রয়োজন।

একই বছরের আরেকটি গবেষণায় ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সরিষার তেলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অর্থাৎ এটি জীবাণুর বৃদ্ধি থামাতে এবং ত্বক, মাথার ত্বক ও শরীরের সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।

ভারতীয় ও নেপালি রান্নায় বেশ জনপ্রিয় এই ঝাঁজে ভরা তেল। আবার যুক্তরাষ্ট্রে এই তেল মূলত চুল ও মালিশের তেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রে এই তেল খাবারে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। কর্তৃপক্ষ বলছে, এতে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত এরুসিক অ্যাসিড থাকতে পারে; যা পশু অধ্যয়নে স্বাস্থ্যঝুঁকির সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ মিলেছে।

চুলের যত্নে আমাদের দেশে নারকেল তেল জনপ্রিয় হলেও সরিষার তেলেও রয়েছে বেশ উপকার। সাধারণত ছেলেদের চুলে সরিষার তেল ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। চুলের যত্নে সরিষার তেল ব্যবহার করার কারণ হলো-

প্রাকৃতিক কন্ডিশনার: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো প্রাকৃতিক চর্বি সমৃদ্ধ হওয়ায় সরিষার তেল চুলের জন্য ভালো কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। প্রতি ১০০ গ্রাম সরিষার তেলে রয়েছে প্রায় ৫৯ গ্রাম মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ২১ গ্রাম পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ১২ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট।

হেয়ার মাস্ক: চুলে আর্দ্রতা জোগাতে সরিষার তেল হেয়ার মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করা যায়। সরিষার তেলে থাকা ন্যাচারাল ফ্যাট প্রতিটি চুলের গোড়ায় আবরণ তৈরি করে তা সিল করে দেয়। ফলে চুল আরও উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়ে উঠতে পারে। এটি চুলের শুষ্কতা কমাতে, মাথার ত্বকের শুষ্ক ও খসখসে ভাব দূর করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি চুলের ফ্রিজি ভাবও কমায়।

সরিষার তেলের হেয়ার মাস্ক তৈরি পদ্ধতি: শুধু এক টেবিল চামচ সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারেন। আবার চাইলে একাধিক তেলের মিশ্রণও বানানো যায়। এক টেবিল চামচ সরিষার তেল, এক টেবিল চামচ বাদাম তেল ও এক টেবিল চামচ জোজোবা তেল একসঙ্গে নিয়ে সামান্য গরম করুন। এরপর চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত মিশ্রণটি লাগান। কমপক্ষে ৩০ মিনিট রেখে তারপর ধুয়ে ফেলুন। গরম পানি দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন; যাতে কোনো তেল চুলে বা মাথায় থেকে না যায়। মাসে একবার এভাবে ব্যবহার করতে পারেন।

চুলের ক্ষয় রোধ: চুলের আগা ফাটা বা চুল ভেঙে যাওয়া রোধে সরিষার তেল বেশ ভালো কাজ করে। এ ছাড়া হিট ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে এই তেল। পানিবাহিত কারণে চুলের ক্ষতি ঠেকাতে এই তেল বেশ ভালো কাজ করে।

ত্বকের প্রদাহ ও ব্যথা কমে: সরিষার তেল ত্বকে মাখলে একধরনের উষ্ণতা সৃষ্টি হয়। বহুদিন ধরে এটি ঘরোয়া উপায়ে পেশির ব্যথা উপশমে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গবেষণায় দেখা গেছে, সরিষার তেলে মরিচের উপাদান ক্যাপসাইসিনের মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ক্যাপসাইসিন নিয়ে বহু গবেষণায় এটিকে প্রদাহনাশক ও ব্যথানাশক উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ কারণে সরিষার তেল ডার্মাটাইটিস, একজিমা, সোরিয়াসিস ও ফলিকুলাইটিসের মতো মাথার ত্বক ও চুলের কিছু সমস্যাও প্রশমনে সহায়ক হতে পারে।

আঙুলের ডগায় অল্প পরিমাণ তেল নিয়ে আলতোভাবে মাথার ত্বকে মাসাজ করুন। সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা পর্যন্ত রাখতে পারেন। এরপর ভালোভাবে ধুয়ে শ্যাম্পু দিয়ে নিন।

খুশকি নিয়ন্ত্রণ: সরিষার তেলে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। মাথার ত্বকে এ তেল ব্যবহার করলে ইস্টের বৃদ্ধি থেকে সৃষ্ট খুশকি এবং ব্রণ বা ফুসকুড়ির মতো সমস্যাগুলো প্রতিরোধ বা কমাতে সহায়ক হতে পারে।

হাতের তালুতে অল্প পরিমাণ তেল নিয়ে পুরো চুলে বা শুধু চুলের ডগায় লাগাতে পারেন। প্রায় ১০ মিনিট রেখে দিয়ে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।

কিছু ক্ষেত্রে হতে পারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: সরিষার তেলে কারও কারো জন্য এটি ত্বকে জ্বালাপোড়ার কারণ হয়। সরিষার তেলে প্রাকৃতিকভাবে ক্যাপসাইসিন, এরুসিক অ্যাসিড ও অ্যালাইল থায়োসায়ানেট নামক সালফার যৌগ থাকে। এগুলো ত্বকে হালকা জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। আবার কিছু মানুষের জন্য ক্ষতিকরও হতে পারে। সরিষার তেল থেকে কী কী সমস্যায় পড়তে পারেন—

ফোসকা বা চর্মরোগ: সরিষার তেল খেলে বা ত্বকে ব্যবহারে কিছু মানুষের মধ্যে লাইকেন প্ল্যানাস নামে পরিচিত একধরনের চর্মরোগ সৃষ্টি করতে পারে। এই রোগে ত্বকে বেগুনি রঙের ক্ষত বা সাদা ফোসকা দেখা দেয়।

ত্বক ও চোখে জ্বালাপোড়া: চুল বা মাথার ত্বকে অতিরিক্ত সরিষার তেল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত। এতে থাকা প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান ত্বক বা চোখে জ্বালা ও চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে।

রোমকূপ বন্ধ হওয়া: অন্য তেলের মতো সরিষার তেলও দীর্ঘ সময় রেখে দিলে রোমকূপ বন্ধ করে দিতে পারে। তাই চুলে সরিষার তেল ব্যবহারের পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলা জরুরি। না হলে চুলে অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব, মাথার ত্বকের রোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং সরিষার তেলের তীব্র গন্ধ থেকে যাবে।

শিশুদের জন্য উপযুক্ত নয়: শিশু ও ছোট বাচ্চাদের শরীরে সরিষার তেল ব্যবহার করা উচিত নয়। এ তেলের ঝাঁজালো স্বাদ ও তীব্র গন্ধ সৃষ্টিকারী রাসায়নিক উপাদান তাদের সংবেদনশীল ত্বকে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। তবে প্রথমবারের মতো সরিষার তেল ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করে নেওয়া উচিত।

যদি চুল পড়া বা পাতলা হওয়ার সমস্যা থাকে কিংবা মাথার ত্বকে অ্যাকজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ফুসকুড়ি বা জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যদি আপনার চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তাহলে সরিষার তেল বা অন্যান্য চুলের পরিচর্যার পদ্ধতি কার্যকর না-ও হতে পারে।

আজকের প্রত্যাশা/ কেএমএএ