ঢাকা ১২:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

অস্ট্রেলিয়ায় অদ্ভুত উপায়ে বোরকা নিষিদ্ধের দাবি, তীব্র প্রতিক্রিয়া

  • আপডেট সময় : ০৩:৫৪:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

একটি বিল পেশের অনুমতি চেয়ে না পাওয়ায় বোরকা পরে ‘প্রতিবাদ’ জানান অস্ট্রেলিয়ার কট্টর ডানপন্থি সেনেটর পলিন হ্যানসন- ছবি রয়টার্স

প্রত্যাশা ডেস্ক: পার্লামেন্টে বোরকা পরে প্রবেশ করে দেশজুড়ে আবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ডানপন্থী রাজনীতিবিদ ও ওয়ান নেশন দলের নেত্রী পলিন হ্যানসন। সোমবার (২৪ নভেম্বর) তিনি সিনেটে মুখ ঢাকা বোরকা নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিল উপস্থাপন করতে চাইলে অন্যান্য আইনপ্রণেতারা তাঁকে বাধা দেন। এর পরপরই তিনি একটি কালো বোরকা পরে আবারও পার্লামেন্টে ফিরে আসেন এবং নিজের আসনে বসেন।

সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, পলিন হ্যানসনের এই আচরণ পার্লামেন্টে উপস্থিত অন্যান্য আইনপ্রণেতাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। অস্ট্রেলিয়ান গ্রিনস দলের সিনেট নেতা লারিসা ওয়াটার্স এই ঘটনাকে ‘ধর্মীয় মানুষের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনের শামিল’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি এটিকে ‘চরম বর্ণবাদী’ কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

সরকারি দলের সিনেট নেতা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়ং একে ‘গভীরভাবে অসম্মানজনক’ বলে নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা যে রাজ্য থেকেই আসি না কেন, আমরা এই কক্ষে সব ধর্ম ও সব পটভূমির মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করি। তাই দায়িত্বশীল ও শালীন আচরণ করা আমাদের কর্তব্য।’

তবে পলিন হ্যানসন বোরকা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে সিনেটের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এটি পলিনের দ্বিতীয়বারের মতো সংসদে বোরকা পরিধান। এর আগে ২০১৭ সালেও তিনি নিরাপত্তা সমস্যা ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে বোরকার সম্পর্কের অভিযোগ তুলে একই ধরনের আচরণ করেছিলেন।

পরে ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে হ্যানসন জানান, তিনি ওই কাজটি করেছিলেন সিনেট কর্তৃক তাঁর প্রস্তাবিত বিল প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। তিনি লেখেন, ‘যদি পার্লামেন্ট বোরকা নিষিদ্ধ না করে, তাহলে আমি নিজেই এই দমনমূলক ও নিরাপত্তা-ঝুঁকিপূর্ণ পোশাক পরিধান করে দেখাব, যেন সবাই বুঝতে পারে বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যদি তারা আমাকে এটি পরতে দেখতে না চায়—তাহলে বোরকা নিষিদ্ধ করুক।’

হ্যানসন দীর্ঘদিন ধরে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে আসছেন। ২০১৬ সালে তিনি দাবি করেছিলেন যে অস্ট্রেলিয়া ‘মুসলমানদের দ্বারা প্লাবিত’ হচ্ছে এবং ইসলামকে তিনি অস্ট্রেলীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মতাদর্শ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।

সম্প্রতি একটি জরিপে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ান প্রধান রক্ষণশীল বিরোধীদল অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত থাকায় ওয়ান নেশন দলের জনসমর্থন বেড়ে ১৮ শতাংশে পৌঁছেছে। এদিকে সরকার নিয়োজিত এক দূত গত সেপ্টেম্বরে জানিয়েছিলেন, অস্ট্রেলিয়া দীর্ঘদিন ধরেই বেড়ে চলা ইসলামফোবিয়া মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে।

ওআ/আপ্র/২৫/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় জার্মানি

অস্ট্রেলিয়ায় অদ্ভুত উপায়ে বোরকা নিষিদ্ধের দাবি, তীব্র প্রতিক্রিয়া

আপডেট সময় : ০৩:৫৪:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: পার্লামেন্টে বোরকা পরে প্রবেশ করে দেশজুড়ে আবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ডানপন্থী রাজনীতিবিদ ও ওয়ান নেশন দলের নেত্রী পলিন হ্যানসন। সোমবার (২৪ নভেম্বর) তিনি সিনেটে মুখ ঢাকা বোরকা নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিল উপস্থাপন করতে চাইলে অন্যান্য আইনপ্রণেতারা তাঁকে বাধা দেন। এর পরপরই তিনি একটি কালো বোরকা পরে আবারও পার্লামেন্টে ফিরে আসেন এবং নিজের আসনে বসেন।

সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, পলিন হ্যানসনের এই আচরণ পার্লামেন্টে উপস্থিত অন্যান্য আইনপ্রণেতাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। অস্ট্রেলিয়ান গ্রিনস দলের সিনেট নেতা লারিসা ওয়াটার্স এই ঘটনাকে ‘ধর্মীয় মানুষের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনের শামিল’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি এটিকে ‘চরম বর্ণবাদী’ কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

সরকারি দলের সিনেট নেতা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়ং একে ‘গভীরভাবে অসম্মানজনক’ বলে নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা যে রাজ্য থেকেই আসি না কেন, আমরা এই কক্ষে সব ধর্ম ও সব পটভূমির মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করি। তাই দায়িত্বশীল ও শালীন আচরণ করা আমাদের কর্তব্য।’

তবে পলিন হ্যানসন বোরকা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে সিনেটের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এটি পলিনের দ্বিতীয়বারের মতো সংসদে বোরকা পরিধান। এর আগে ২০১৭ সালেও তিনি নিরাপত্তা সমস্যা ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে বোরকার সম্পর্কের অভিযোগ তুলে একই ধরনের আচরণ করেছিলেন।

পরে ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে হ্যানসন জানান, তিনি ওই কাজটি করেছিলেন সিনেট কর্তৃক তাঁর প্রস্তাবিত বিল প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। তিনি লেখেন, ‘যদি পার্লামেন্ট বোরকা নিষিদ্ধ না করে, তাহলে আমি নিজেই এই দমনমূলক ও নিরাপত্তা-ঝুঁকিপূর্ণ পোশাক পরিধান করে দেখাব, যেন সবাই বুঝতে পারে বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যদি তারা আমাকে এটি পরতে দেখতে না চায়—তাহলে বোরকা নিষিদ্ধ করুক।’

হ্যানসন দীর্ঘদিন ধরে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে আসছেন। ২০১৬ সালে তিনি দাবি করেছিলেন যে অস্ট্রেলিয়া ‘মুসলমানদের দ্বারা প্লাবিত’ হচ্ছে এবং ইসলামকে তিনি অস্ট্রেলীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মতাদর্শ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।

সম্প্রতি একটি জরিপে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ান প্রধান রক্ষণশীল বিরোধীদল অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত থাকায় ওয়ান নেশন দলের জনসমর্থন বেড়ে ১৮ শতাংশে পৌঁছেছে। এদিকে সরকার নিয়োজিত এক দূত গত সেপ্টেম্বরে জানিয়েছিলেন, অস্ট্রেলিয়া দীর্ঘদিন ধরেই বেড়ে চলা ইসলামফোবিয়া মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে।

ওআ/আপ্র/২৫/১১/২০২৫