ঢাকা ০১:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকার বন্দর নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না: তারেক রহমান

  • আপডেট সময় : ০২:৪৯:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের বন্দর বা এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের মতো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘একটি দেশ যেই সরকারকে নির্বাচিত করেনি, সেই সরকার দেশের দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিতে পারে না।’

তারেক রহমান বলেন, বন্দরের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত রুটিন কাজের অংশ নয়। এগুলো জাতীয় সম্পদ নিয়ে কৌশলগত সিদ্ধান্ত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বেঁধে ফেলার এসব সিদ্ধান্ত এমন একটি অন্তর্বর্তী সরকার নিয়েছে, যাদের কোনো ধরনের গণতান্ত্রিক ম্যান্ডেট নেই।

অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করেছে। এছাড়া ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি’র তালিকা থেকে উত্তরণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মাঝে সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান তারেক রহমান।

ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমান গাজীপুরের এক পোশাক কারখানার মালিকের গল্প তুলে ধরেন। তিনি লিখেন, এক দশকেরও বেশি সময়ে দাঁড় করানো ব্যবসায় সেই মালিকের কারখানায় কাজ করে কয়েক শ’ শ্রমিক। কারখানাটি চলে সমিত আয়ে। পণ্যের দাম প্রতিযোগিতামূলক রাখার জন্য যেসব শুল্কসুবিধা পেতেন, একদিন নীরবে সেসব সুবিধা তুলে নেয় সরকার। এরপর পণ্যের নতুন দামে ক্রয়াদেশ হারাতে থাকেন সেই মালিক। এতে কারখানা খোলা রাখা, শ্রমিকদের বেতন দেওয়া এবং নিজের পরিবারকে স্বচ্ছল রাখতে সেই মালিকের চাপ বেড়ে যায়।

দ্বিতীয় গল্পে নারায়ণগঞ্জের এক স্নাতক পড়ুয়া শিক্ষার্থীর পরিবারের গল্প তুলে ধরেন তারেক রহমান। এই শিক্ষার্থীর বাবা একটি কারখানায় কাজ করেন। পরিবার চালাতে তাকে ওভারটাইম করতে হয়। কিন্তু যখন কারখানা থেকে রপ্তানির চাপ কমতে থাকে, তখন শিক্ষার্থীর বাবার ওভারটাইম উঠে যায়। এক সময় শুরু হয় শ্রমিক ছাঁটাই, সেই শিক্ষার্থীর বাবাও ছাঁটাই হয়ে যান।

তারেক রহমান লিখেন, এসব গল্প কখনো সংবাদের শিরোনাম হয় না। এগুলো সাধারণ ঘরের ভেতরকার নীরব সংকট। সরকারের যে সিদ্ধান্তের কারণে পোশাক কারখানার মালিক কিংবা শিক্ষার্থীর পরিবারের এমন দশা, সেই সিদ্ধান্ত নিতে তারা ভোট দেননি। তাদের কখনো জিজ্ঞেসও করা হয়নি।

তারেক রহমান আরো লিখেন, বিএনপি আগেও বলেছে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের বিষয়ে যতটা আলোচনা হচ্ছে; বিষয়টি তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সময় নেওয়ার বিকল্প পথে না গিয়ে তাড়াহুড়া করে উত্তরণের সময়সূচি এগিয়ে নেওয়া পুরোপুরি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। অথচ এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এমন একটি অন্তর্বর্তী সরকার, যাদের কোনো নির্বাচনী ম্যান্ডেট নেই। তারপরও তারা এমন দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতিকে বহু দশক ধরে প্রভাবিত করবে।

এলডিসি থেকে উত্তরণে দেরি করা অসম্ভব কিংবা সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ অপমানজনক-একথা বলে বাংলাদেশ তার আলোচনা করার সক্ষমতা নিয়ে দুর্বলতা প্রকাশ করছে বলেও মত দেন তারেক রহমান। এ প্রসঙ্গে তিনি অ্যাঙ্গোলা ও সামোয়ার উদারণ দেন। এ’দুটি দেশের অনুরোধে জাতিসংঘ সময়সীমা পিছিয়েছে। জাতিসংঘের নিয়মেও এই সুযোগ আছে। এক্ষেত্রে দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে বাড়তি সময় চাওয়া নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত বলে মনে করেন তারেক রহমান।

তিনি লিখেন: সরকারি নথিপত্র বলছে, দেশের ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে ব্যাংকিং খাতে চাপ, বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অস্থিরতা, ঋণের ঝুঁকি বৃদ্ধি, রপ্তানি শ্লথ হয়ে আসার চাপ মোকাবিলা করছেন। এরপরও বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। কিন্তু উত্তরণে ‘যোগ্য’ হওয়া আর ‘প্রস্তুত’ হওয়া এক জিনিস নয়।

এসি/আপ্র/২৫/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

মেট্রোরেলের ভাড়া কার্ডে প্রথম দিনই অনলাইন রিচার্জে বাধা

অন্তর্বর্তী সরকার বন্দর নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না: তারেক রহমান

আপডেট সময় : ০২:৪৯:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকারের বন্দর বা এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের মতো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘একটি দেশ যেই সরকারকে নির্বাচিত করেনি, সেই সরকার দেশের দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিতে পারে না।’

তারেক রহমান বলেন, বন্দরের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত রুটিন কাজের অংশ নয়। এগুলো জাতীয় সম্পদ নিয়ে কৌশলগত সিদ্ধান্ত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বেঁধে ফেলার এসব সিদ্ধান্ত এমন একটি অন্তর্বর্তী সরকার নিয়েছে, যাদের কোনো ধরনের গণতান্ত্রিক ম্যান্ডেট নেই।

অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করেছে। এছাড়া ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি’র তালিকা থেকে উত্তরণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মাঝে সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান তারেক রহমান।

ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমান গাজীপুরের এক পোশাক কারখানার মালিকের গল্প তুলে ধরেন। তিনি লিখেন, এক দশকেরও বেশি সময়ে দাঁড় করানো ব্যবসায় সেই মালিকের কারখানায় কাজ করে কয়েক শ’ শ্রমিক। কারখানাটি চলে সমিত আয়ে। পণ্যের দাম প্রতিযোগিতামূলক রাখার জন্য যেসব শুল্কসুবিধা পেতেন, একদিন নীরবে সেসব সুবিধা তুলে নেয় সরকার। এরপর পণ্যের নতুন দামে ক্রয়াদেশ হারাতে থাকেন সেই মালিক। এতে কারখানা খোলা রাখা, শ্রমিকদের বেতন দেওয়া এবং নিজের পরিবারকে স্বচ্ছল রাখতে সেই মালিকের চাপ বেড়ে যায়।

দ্বিতীয় গল্পে নারায়ণগঞ্জের এক স্নাতক পড়ুয়া শিক্ষার্থীর পরিবারের গল্প তুলে ধরেন তারেক রহমান। এই শিক্ষার্থীর বাবা একটি কারখানায় কাজ করেন। পরিবার চালাতে তাকে ওভারটাইম করতে হয়। কিন্তু যখন কারখানা থেকে রপ্তানির চাপ কমতে থাকে, তখন শিক্ষার্থীর বাবার ওভারটাইম উঠে যায়। এক সময় শুরু হয় শ্রমিক ছাঁটাই, সেই শিক্ষার্থীর বাবাও ছাঁটাই হয়ে যান।

তারেক রহমান লিখেন, এসব গল্প কখনো সংবাদের শিরোনাম হয় না। এগুলো সাধারণ ঘরের ভেতরকার নীরব সংকট। সরকারের যে সিদ্ধান্তের কারণে পোশাক কারখানার মালিক কিংবা শিক্ষার্থীর পরিবারের এমন দশা, সেই সিদ্ধান্ত নিতে তারা ভোট দেননি। তাদের কখনো জিজ্ঞেসও করা হয়নি।

তারেক রহমান আরো লিখেন, বিএনপি আগেও বলেছে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের বিষয়ে যতটা আলোচনা হচ্ছে; বিষয়টি তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সময় নেওয়ার বিকল্প পথে না গিয়ে তাড়াহুড়া করে উত্তরণের সময়সূচি এগিয়ে নেওয়া পুরোপুরি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। অথচ এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এমন একটি অন্তর্বর্তী সরকার, যাদের কোনো নির্বাচনী ম্যান্ডেট নেই। তারপরও তারা এমন দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতিকে বহু দশক ধরে প্রভাবিত করবে।

এলডিসি থেকে উত্তরণে দেরি করা অসম্ভব কিংবা সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ অপমানজনক-একথা বলে বাংলাদেশ তার আলোচনা করার সক্ষমতা নিয়ে দুর্বলতা প্রকাশ করছে বলেও মত দেন তারেক রহমান। এ প্রসঙ্গে তিনি অ্যাঙ্গোলা ও সামোয়ার উদারণ দেন। এ’দুটি দেশের অনুরোধে জাতিসংঘ সময়সীমা পিছিয়েছে। জাতিসংঘের নিয়মেও এই সুযোগ আছে। এক্ষেত্রে দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে বাড়তি সময় চাওয়া নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত বলে মনে করেন তারেক রহমান।

তিনি লিখেন: সরকারি নথিপত্র বলছে, দেশের ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে ব্যাংকিং খাতে চাপ, বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অস্থিরতা, ঋণের ঝুঁকি বৃদ্ধি, রপ্তানি শ্লথ হয়ে আসার চাপ মোকাবিলা করছেন। এরপরও বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। কিন্তু উত্তরণে ‘যোগ্য’ হওয়া আর ‘প্রস্তুত’ হওয়া এক জিনিস নয়।

এসি/আপ্র/২৫/১১/২০২৫