আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা নিয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইউক্রেন ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
যদিও খসড়া নিয়ে এখনো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে মতপার্থক্য রয়েই গেছে। সোমবার (২৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ইউক্রেনে প্রায় চার বছর ধরে চলমান রাশিয়ার যুদ্ধ শেষ করতে যুক্তরাষ্ট্রের যে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে, তাতে “অসাধারণ অগ্রগতি” হয়েছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
জেনেভায় মার্কিন মিশনে সাংবাদিকদের রুবিও বলেন, ‘আমরা সত্যিই অনেকদূর এগিয়েছি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে এগিয়ে যেতে পারব বলে আমি খুব আশাবাদী।’
তিনি জানান, ন্যাটোর ভূমিকা এবং ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার মতো কিছু ইস্যুতে কাজ বাকী থাকলেও, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থাপিত ২৮ দফার শান্তি প্রস্তাবের বেশ কিছু জটিল বিষয়ে তারা মতপার্থক্য কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
রুবিওর ভাষায়, ‘আজ আমরা সে দিক থেকে খুব বড় অগ্রগতি করেছি।’
ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাকও একই সুরে বলেন, আলোচনায় ‘খুব ভালো অগ্রগতি’ হয়েছে এবং তারা ‘ইউক্রেনের প্রাপ্য ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির দিকে এগোচ্ছে’।
এর আগে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে না। এরপরই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা ওয়াশিংটনকে ধন্যবাদ জানাতে শুরু করেন। রোববার সকালে ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, ‘ইউক্রেনের ‘নেতৃত্ব’ আমাদের প্রচেষ্টার জন্য কোনো কৃতজ্ঞতা দেখায়নি, আর ইউরোপ এখনো রাশিয়া থেকে তেল কিনছে।’
অল্পক্ষণ পরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে পোস্ট করে লেখেন, তার দেশ ‘যুক্তরাষ্ট্রকে… এবং ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে’ ধন্যবাদ জানাচ্ছে, কারণ এই সহায়তা ‘ইউক্রেনের প্রাণ বাঁচাচ্ছে’।
এদিকে সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেলেনস্কি খুব শিগগিরই ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফর করতে পারেন।
এছাড়া বৃহস্পতিবারের মধ্যে সমঝোতা সম্ভব কি না— এমন প্রশ্নে রুবিও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব এটি শেষ করা’। তিনি প্রস্তাবিত মার্কিন পরিকল্পনাকে ‘পরিবর্তনশীল নথি’ হিসেবে বর্ণনা করেন, যা সংশোধন হতে থাকবে। এবং চূড়ান্ত প্রস্তাব তৈরি হলে তা মস্কোর কাছেও উপস্থাপন করতে হবে।
রুবিও বলেন, ‘স্পষ্টতই, এখানে রাশিয়ারও মতামত দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অবশ্য আগেই বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা চূড়ান্ত শান্তি চুক্তির ভিত্তি হতে পারে। তবে ইউক্রেন আলোচনা থেকে সরে এলে আরো ভূখণ্ড দখলের হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
এসি/আপ্র/২৪/১১/২০২৫




















