ঢাকা ০৮:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
১৮টি ভাষায় ১০ হাজার গান গেয়েছেন

৭২ বছরে পা রাখলেন কিংবদন্তী রুনা লায়লা

  • আপডেট সময় : ০১:৫২:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৬ বার পড়া হয়েছে

রুনা লায়লা

বিনোদন ডেস্ক: কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লা। আজ (১৭ নভেম্বর) তার ৭২তম জন্মদিন। সাথে পূর্ণ করলেন সংগীত জীবনের ৬০ বছর। একটা সময় উপমহাদেশের তিনটি দেশেই যিনি সমানতালে গান করে গেছেন।
সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী’ তো অনেক পরের কথা। তারও আগে, হিন্দি গানের সাদাকালো জগতে উপমহাদেশজুড়ে তোলপাড় ফেলে দেওয়া ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ কিংবা পাকিস্তানি চলচ্চিত্রের ক্ল্যাসিক ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত’— এই গানগুলোও নিশ্চয়ই মনে আছে সবার।

দীর্ঘ সময়ে তিনি কেবল বাংলাদেশে নয়, উপমহাদেশজুড়ে পেয়েছেন বিপুল ভালোবাসা। ১৮টি ভাষায় গেয়েছেন দশ হাজারের বেশি গান। রুনা লায়লা যে এই উপমহাদেশের অন্যতম প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী- এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বিশেষ করে, বাংলাদেশের বাংলা গানকে তিনি বিশ্বের নানান দেশে পৌঁছে দিয়েছেন, নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ সহ অগণিত স্বীকৃতি।

১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণকারী রুনা লায়লার সংগীত জীবনের শুরুটা হয়েছিল ষাটের দশকের শেষের দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কীতে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি সংগীতাঙ্গনে আসেন এবং দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’র মতো গানগুলো তাকে পাকিস্তানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়।

এরপর ভারতেও তার কণ্ঠের জাদু ছড়িয়ে পড়ে। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ গানটি সাদাকালো যুগেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সাথে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেন, যা বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়।

তবে রুনা লায়লার মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘যাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪) সহ মোট সাতবার তিনি শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিন দিন তোর বাড়িতে গেলাম’-এর মতো কালজয়ী বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পায়।

এই কিংবদন্তী শিল্পী প্রায়ই তার এই দীর্ঘ এবং সফল যাত্রার কৃতিত্ব দেন তার মাকে। তিনি স্বীকার করেন, এই শিল্পীর এতদূর আসার পেছনে তার মায়ের অবদানই সবচেয়ে বেশি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। যখনই গান গাইতে যেতাম ছোটবেলায় মা সঙ্গে যেতেন।’

শিল্পীর ৭২তম জন্মদিনটি আরো বিশেষ হয়ে উঠেছে ভক্তদের কাছে। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের পর্দা নামছে রুনা লায়লার কণ্ঠ দিয়েই। শিল্পীর জন্মদিনকে (১৭ নভেম্বর) সামনে রেখে গত রোববার রাতে প্রকাশ পায় তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’। এই গানটি তার ক্যারিয়ারে বিশেষ স্থান দখল করে আছে এবং এটিই তাকে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি এনে দিয়েছিল।

অবশ্য এই কিংবদন্তি শিল্পী সম্প্রতি এক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এবারের জন্মদিন নিয়ে এবার তার তেমন কোনো বিশেষ পরিকল্পনা নেই। পারিবারিকভাবেই দিনটি উদযাপন করা হবে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই সময় কাটাবেন ‘কুইন অব মেলোডি’ খ্যাত শিল্পী রুনা লায়লা।
সানা/আপ্র/১৭/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় নিয়ে যা বললো ভারত

১৮টি ভাষায় ১০ হাজার গান গেয়েছেন

৭২ বছরে পা রাখলেন কিংবদন্তী রুনা লায়লা

আপডেট সময় : ০১:৫২:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

বিনোদন ডেস্ক: কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লা। আজ (১৭ নভেম্বর) তার ৭২তম জন্মদিন। সাথে পূর্ণ করলেন সংগীত জীবনের ৬০ বছর। একটা সময় উপমহাদেশের তিনটি দেশেই যিনি সমানতালে গান করে গেছেন।
সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী’ তো অনেক পরের কথা। তারও আগে, হিন্দি গানের সাদাকালো জগতে উপমহাদেশজুড়ে তোলপাড় ফেলে দেওয়া ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ কিংবা পাকিস্তানি চলচ্চিত্রের ক্ল্যাসিক ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত’— এই গানগুলোও নিশ্চয়ই মনে আছে সবার।

দীর্ঘ সময়ে তিনি কেবল বাংলাদেশে নয়, উপমহাদেশজুড়ে পেয়েছেন বিপুল ভালোবাসা। ১৮টি ভাষায় গেয়েছেন দশ হাজারের বেশি গান। রুনা লায়লা যে এই উপমহাদেশের অন্যতম প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী- এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বিশেষ করে, বাংলাদেশের বাংলা গানকে তিনি বিশ্বের নানান দেশে পৌঁছে দিয়েছেন, নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ সহ অগণিত স্বীকৃতি।

১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণকারী রুনা লায়লার সংগীত জীবনের শুরুটা হয়েছিল ষাটের দশকের শেষের দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কীতে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি সংগীতাঙ্গনে আসেন এবং দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’র মতো গানগুলো তাকে পাকিস্তানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়।

এরপর ভারতেও তার কণ্ঠের জাদু ছড়িয়ে পড়ে। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ গানটি সাদাকালো যুগেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সাথে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেন, যা বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়।

তবে রুনা লায়লার মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘যাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪) সহ মোট সাতবার তিনি শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিন দিন তোর বাড়িতে গেলাম’-এর মতো কালজয়ী বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পায়।

এই কিংবদন্তী শিল্পী প্রায়ই তার এই দীর্ঘ এবং সফল যাত্রার কৃতিত্ব দেন তার মাকে। তিনি স্বীকার করেন, এই শিল্পীর এতদূর আসার পেছনে তার মায়ের অবদানই সবচেয়ে বেশি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। যখনই গান গাইতে যেতাম ছোটবেলায় মা সঙ্গে যেতেন।’

শিল্পীর ৭২তম জন্মদিনটি আরো বিশেষ হয়ে উঠেছে ভক্তদের কাছে। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের পর্দা নামছে রুনা লায়লার কণ্ঠ দিয়েই। শিল্পীর জন্মদিনকে (১৭ নভেম্বর) সামনে রেখে গত রোববার রাতে প্রকাশ পায় তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’। এই গানটি তার ক্যারিয়ারে বিশেষ স্থান দখল করে আছে এবং এটিই তাকে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি এনে দিয়েছিল।

অবশ্য এই কিংবদন্তি শিল্পী সম্প্রতি এক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এবারের জন্মদিন নিয়ে এবার তার তেমন কোনো বিশেষ পরিকল্পনা নেই। পারিবারিকভাবেই দিনটি উদযাপন করা হবে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই সময় কাটাবেন ‘কুইন অব মেলোডি’ খ্যাত শিল্পী রুনা লায়লা।
সানা/আপ্র/১৭/১১/২০২৫