ঢাকা ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
শিক্ষকদের কর্মবিরতি

গাইবান্ধায় শিক্ষাবঞ্চিত ২৩ হাজার শিক্ষার্থী

  • আপডেট সময় : ০৪:০০:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে- ছবি সংগৃহীত

আঃ জলিল মন্ডল, গাইবান্ধা: দশম গ্রেডে বেতন উন্নীতকরণসহ তিন দফা দাবি আদায় এবং শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাইবান্ধা জেলার ৪শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকে একযোগে কর্মবিরতি পালন করছেন সহকারী শিক্ষকরা। এতে গাইবান্ধা জেলার প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থী প্রাত্যহিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। গতকাল সোমবার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এলেও বঞ্চিত হয় পাঠদান থেকে।

সরেজমিনে জেলার রহমান নগর, কিশামত বালুয়া, আসাদুজ্জামান, এনএইচ মডার্ন ও কলেজিয়েট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও ক্লাসে যাচ্ছেন না। বিদ্যালয়ের বারান্দায় অনেক শিক্ষার্থীকে খেলাধুলা করতে দেখা গেছে। আবার অনেককেই বাড়ি ফিরে যেতে দেখা যায়। ময়না নামে এক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা জানতাম না আজ স্কুলে ক্লাস হবে না। এসে দেখি স্যাররা বসে আছেন, তাই আমরা খেলাধুলা করছি। প্রান্তর নামে আরেক শিক্ষার্থী বলে, স্যারদের দাবি না মানলে স্যাররা ক্লাস নেবেন না। আমরা চাই তাদের দাবি পূরণ হোক, তাহলে স্যাররাও খুশি হয়ে ক্লাস নেবেন।

অভিভাবকরা হঠাৎ শিক্ষকদের এই কর্মবিরতিতে চিন্তিত। এ সময় রহিম মিয়া নামে এক অভিভাবক বলেন, হঠাৎ শিক্ষকরা কর্মবিরতি করায় ছাত্ররা স্কুলে গিয়ে ফিরে আসছে। সামনে পরীক্ষা, এখন ক্লাস না হলে ওদের অনেক ক্ষতি হবে। মো. শরিফুল ইসলাম নামের একজন সচেতন অভিভাবক বলেন, শিক্ষকদের এই দাবি সরকার মেনে নিলেই তো হয়। তাতে প্রত্যেক শিক্ষক তাদের কর্মজীবনে ফিরে আসতে পারে এবং শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে পড়ালেখা করতে পারে।

এ বিষয়ে কর্মবিরতি পালনকারী গাইবান্ধা পৌরসভার কলেজিয়েট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আরেফিন আকতার জানান, আমাদের তিন দফা দাবি বিশেষ করে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য এই কর্মসূচি চলছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আন্দোলনে অনেক শিক্ষক পুলিশি লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন। সরকারের উচিত দ্রুত বিষয়টি দেখা। যত তাড়াতাড়ি দাবি মানবে, তত দ্রুত আমরা ক্লাসে ফিরবো।

রহমান নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিল্লাত মিয়া বলেন,পাঠদান সাময়িকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, এটা সত্যি। কিন্তু আমাদের বেতন-ভাতা খুবই কম। দাবি মেনে নিলে শিক্ষার্থীদের এই সাময়িক ক্ষতি আমরা পরবর্তীতে পুষিয়ে দিব। শিক্ষকদের চলমান এই কর্মসূচির কারণে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। তবে শিক্ষকরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ময়নুর রহমান মিলন জানান, প্রাথমিকের কেন্দ্রীয় শিক্ষক সংগঠনগুলো ঘোষিত কর্মসূচি সফল করার জন্য সদর উপজেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি চলছে।

রিয়াজ/সানা/আপ্র/১১/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

শিক্ষকদের কর্মবিরতি

গাইবান্ধায় শিক্ষাবঞ্চিত ২৩ হাজার শিক্ষার্থী

আপডেট সময় : ০৪:০০:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

আঃ জলিল মন্ডল, গাইবান্ধা: দশম গ্রেডে বেতন উন্নীতকরণসহ তিন দফা দাবি আদায় এবং শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাইবান্ধা জেলার ৪শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সোমবার (১০ নভেম্বর) সকাল থেকে একযোগে কর্মবিরতি পালন করছেন সহকারী শিক্ষকরা। এতে গাইবান্ধা জেলার প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থী প্রাত্যহিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। গতকাল সোমবার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এলেও বঞ্চিত হয় পাঠদান থেকে।

সরেজমিনে জেলার রহমান নগর, কিশামত বালুয়া, আসাদুজ্জামান, এনএইচ মডার্ন ও কলেজিয়েট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও ক্লাসে যাচ্ছেন না। বিদ্যালয়ের বারান্দায় অনেক শিক্ষার্থীকে খেলাধুলা করতে দেখা গেছে। আবার অনেককেই বাড়ি ফিরে যেতে দেখা যায়। ময়না নামে এক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা জানতাম না আজ স্কুলে ক্লাস হবে না। এসে দেখি স্যাররা বসে আছেন, তাই আমরা খেলাধুলা করছি। প্রান্তর নামে আরেক শিক্ষার্থী বলে, স্যারদের দাবি না মানলে স্যাররা ক্লাস নেবেন না। আমরা চাই তাদের দাবি পূরণ হোক, তাহলে স্যাররাও খুশি হয়ে ক্লাস নেবেন।

অভিভাবকরা হঠাৎ শিক্ষকদের এই কর্মবিরতিতে চিন্তিত। এ সময় রহিম মিয়া নামে এক অভিভাবক বলেন, হঠাৎ শিক্ষকরা কর্মবিরতি করায় ছাত্ররা স্কুলে গিয়ে ফিরে আসছে। সামনে পরীক্ষা, এখন ক্লাস না হলে ওদের অনেক ক্ষতি হবে। মো. শরিফুল ইসলাম নামের একজন সচেতন অভিভাবক বলেন, শিক্ষকদের এই দাবি সরকার মেনে নিলেই তো হয়। তাতে প্রত্যেক শিক্ষক তাদের কর্মজীবনে ফিরে আসতে পারে এবং শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে পড়ালেখা করতে পারে।

এ বিষয়ে কর্মবিরতি পালনকারী গাইবান্ধা পৌরসভার কলেজিয়েট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আরেফিন আকতার জানান, আমাদের তিন দফা দাবি বিশেষ করে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য এই কর্মসূচি চলছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আন্দোলনে অনেক শিক্ষক পুলিশি লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন। সরকারের উচিত দ্রুত বিষয়টি দেখা। যত তাড়াতাড়ি দাবি মানবে, তত দ্রুত আমরা ক্লাসে ফিরবো।

রহমান নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিল্লাত মিয়া বলেন,পাঠদান সাময়িকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, এটা সত্যি। কিন্তু আমাদের বেতন-ভাতা খুবই কম। দাবি মেনে নিলে শিক্ষার্থীদের এই সাময়িক ক্ষতি আমরা পরবর্তীতে পুষিয়ে দিব। শিক্ষকদের চলমান এই কর্মসূচির কারণে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। তবে শিক্ষকরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ময়নুর রহমান মিলন জানান, প্রাথমিকের কেন্দ্রীয় শিক্ষক সংগঠনগুলো ঘোষিত কর্মসূচি সফল করার জন্য সদর উপজেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি চলছে।

রিয়াজ/সানা/আপ্র/১১/১১/২০২৫