ঢাকা ১১:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

এআই শিল্পে ‘নৈতিক বিচক্ষণতা’ গড়ে তোলার বার্তা পোপের

  • আপডেট সময় : ০৫:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
  • ৪৯ বার পড়া হয়েছে

গত মে মাসে ক্যাথলিক চার্চের প্রধান হওয়ার পর থেকে এআই নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন পোপ চতুর্দশ লিও -ছবি রয়টার্স

প্রযুক্তি ডেস্ক: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ও সমাজের ওপর এর প্রভাব এখন অনেক মানুষের ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। আর এ নিয়ে ভাবছেন পোপ চতুর্দশ লিও নিজেও। তিনি বলেছেন, এআই শিল্প বা এআই তৈরি ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘নৈতিক বিচক্ষণতা গড়ে তোলা উচিত’।

গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে এআই নেতা ও উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন আমেরিকান বংশদ্ভুত প্রথম পোপ। প্রায় এক সপ্তাহ আগে ‘বিল্ডার্স এআই ফোরাম ২০২৫’-এ অংশগ্রহণকারীদেরও একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন তিনি। এ ফোরামের মূল উদ্দেশ্য এমন এক সম্প্রদায় গড়ে তোলা, যা ক্যাথলিক চার্চের নীতি ও লক্ষ্যের সঙ্গে মিল রেখে এআই পণ্য তৈরি ও উন্নয়নকে সমর্থন করবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে আমেরিকান সংবাদ মাধ্যম বিজনেস ইনসাইডার।

পোপ লিও বলেছেন, ঈশ্বরের সৃষ্টির কাজের অংশ হতে পারে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন। এর সঙ্গে নৈতিক ও আত্মিক দায়িত্বও জড়িয়ে রয়েছে। কারণ প্রতিটি ডিজাইনের সিদ্ধান্ত মানবতারই এক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ। ফলে সব ধরনের এআই নির্মাতাকে আহ্বান জানাচ্ছে চার্চ, যেন নিজেদের কাজের মৌলিক অংশ হিসেবে নৈতিক বিচক্ষণতা গড়ে তোলে এসব কোম্পানি, যাতে করে তৈরি হওয়া বিভিন্ন সিস্টেম ন্যায়, সংহতি ও মানুষের জীবনের প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।

‘বিল্ডার্স এআই ফোরাম ২০২৫’-এর অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে পোপ লিও বলেছিলেন, তাদের কাজকে ‘কেবল গবেষণা ল্যাব বা বিনিয়োগের হিসাবের মধ্যে আটকে রাখা যাবে না’। এই কাজ অবশ্যই চার্চকেন্দ্রিক উদ্যোগ হতে হবে। সেটি হতে পারে ক্যাথলিক শিক্ষার জন্য অ্যালগরিদম, স্বাস্থ্যসেবার জন্য টুল বা সত্য ও সৌন্দর্যের সঙ্গে খ্রিস্টীয় কাহিনী বলার সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম তৈরির মতো বিষয়। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীই এখানে এক মিলিত লক্ষ্য পূরণে কাজ করছে। আর তা হচ্ছে প্রযুক্তিকে খ্রিস্টধর্ম প্রচার ও প্রতিটি মানুষের পূর্ণাঙ্গ উন্নয়নের সেবায় ব্যবহার করা।

পোপ লিওর এ মন্তব্য এমন সময়ে এল যখন গোটা বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি ‘যুগান্তকারী’ এআই প্রযুক্তি বিকাশের জন্য রীতিমতো ছুটছে। মার্কিন সার্চ জায়ান্ট গুগল, সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট মেটার মতো বড় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এআই খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে।

এদিকে, ক্লড ও চ্যাটজিপিটির মতো পণ্য তৈরিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে অ্যানথ্রপিক ও ওপেনএআইয়ের মতো বিভিন্ন এআই স্টার্টআপ। এরইমধ্যে শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে অনেকটাই পরিবর্তনের ঢেউ তুলেছে এই প্রযুক্তি। তবে এআইয়ের ব্যবহার নিয়ে কিছু মানুষ উদ্বিগ্ন। কারণ, তারা বলছেন, বিশ্বকে বদলানোর প্রতিযোগিতায় নিরাপত্তার নানা নিয়মকে উপেক্ষা করছে বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি, যা চাকরি, অর্থনীতি ও পুরো মানবজাতির জন্য বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে।

গত মে মাসে ক্যাথলিক চার্চের প্রধান হওয়ার পর থেকে এআই নিয়ে আলোচনা করতে পিছপা হননি পোপ লিও চতুর্দশ। একই মাসে কার্ডিনাল কলেজে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, ‘মানবিক মর্যাদা’ ও ‘ন্যায়বিচার’ নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে এআই।

সানা/আপ্র/১০/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

এআই শিল্পে ‘নৈতিক বিচক্ষণতা’ গড়ে তোলার বার্তা পোপের

আপডেট সময় : ০৫:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ও সমাজের ওপর এর প্রভাব এখন অনেক মানুষের ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। আর এ নিয়ে ভাবছেন পোপ চতুর্দশ লিও নিজেও। তিনি বলেছেন, এআই শিল্প বা এআই তৈরি ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘নৈতিক বিচক্ষণতা গড়ে তোলা উচিত’।

গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে এআই নেতা ও উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন আমেরিকান বংশদ্ভুত প্রথম পোপ। প্রায় এক সপ্তাহ আগে ‘বিল্ডার্স এআই ফোরাম ২০২৫’-এ অংশগ্রহণকারীদেরও একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন তিনি। এ ফোরামের মূল উদ্দেশ্য এমন এক সম্প্রদায় গড়ে তোলা, যা ক্যাথলিক চার্চের নীতি ও লক্ষ্যের সঙ্গে মিল রেখে এআই পণ্য তৈরি ও উন্নয়নকে সমর্থন করবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে আমেরিকান সংবাদ মাধ্যম বিজনেস ইনসাইডার।

পোপ লিও বলেছেন, ঈশ্বরের সৃষ্টির কাজের অংশ হতে পারে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন। এর সঙ্গে নৈতিক ও আত্মিক দায়িত্বও জড়িয়ে রয়েছে। কারণ প্রতিটি ডিজাইনের সিদ্ধান্ত মানবতারই এক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ। ফলে সব ধরনের এআই নির্মাতাকে আহ্বান জানাচ্ছে চার্চ, যেন নিজেদের কাজের মৌলিক অংশ হিসেবে নৈতিক বিচক্ষণতা গড়ে তোলে এসব কোম্পানি, যাতে করে তৈরি হওয়া বিভিন্ন সিস্টেম ন্যায়, সংহতি ও মানুষের জীবনের প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।

‘বিল্ডার্স এআই ফোরাম ২০২৫’-এর অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে পোপ লিও বলেছিলেন, তাদের কাজকে ‘কেবল গবেষণা ল্যাব বা বিনিয়োগের হিসাবের মধ্যে আটকে রাখা যাবে না’। এই কাজ অবশ্যই চার্চকেন্দ্রিক উদ্যোগ হতে হবে। সেটি হতে পারে ক্যাথলিক শিক্ষার জন্য অ্যালগরিদম, স্বাস্থ্যসেবার জন্য টুল বা সত্য ও সৌন্দর্যের সঙ্গে খ্রিস্টীয় কাহিনী বলার সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম তৈরির মতো বিষয়। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীই এখানে এক মিলিত লক্ষ্য পূরণে কাজ করছে। আর তা হচ্ছে প্রযুক্তিকে খ্রিস্টধর্ম প্রচার ও প্রতিটি মানুষের পূর্ণাঙ্গ উন্নয়নের সেবায় ব্যবহার করা।

পোপ লিওর এ মন্তব্য এমন সময়ে এল যখন গোটা বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি ‘যুগান্তকারী’ এআই প্রযুক্তি বিকাশের জন্য রীতিমতো ছুটছে। মার্কিন সার্চ জায়ান্ট গুগল, সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট মেটার মতো বড় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এআই খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে।

এদিকে, ক্লড ও চ্যাটজিপিটির মতো পণ্য তৈরিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে অ্যানথ্রপিক ও ওপেনএআইয়ের মতো বিভিন্ন এআই স্টার্টআপ। এরইমধ্যে শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে অনেকটাই পরিবর্তনের ঢেউ তুলেছে এই প্রযুক্তি। তবে এআইয়ের ব্যবহার নিয়ে কিছু মানুষ উদ্বিগ্ন। কারণ, তারা বলছেন, বিশ্বকে বদলানোর প্রতিযোগিতায় নিরাপত্তার নানা নিয়মকে উপেক্ষা করছে বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি, যা চাকরি, অর্থনীতি ও পুরো মানবজাতির জন্য বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে।

গত মে মাসে ক্যাথলিক চার্চের প্রধান হওয়ার পর থেকে এআই নিয়ে আলোচনা করতে পিছপা হননি পোপ লিও চতুর্দশ। একই মাসে কার্ডিনাল কলেজে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, ‘মানবিক মর্যাদা’ ও ‘ন্যায়বিচার’ নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে এআই।

সানা/আপ্র/১০/১১/২০২৫