ক্রীড়া ডেস্ক : চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নবাগত শেরিফ তিরাসপুলের বিপক্ষে তৈরি হওয়া ক্ষত এখনও তরতাজা। চার দিন বাদে আরেকটি হারের হতাশা যোগ হলো রিয়াল মাদ্রিদ শিবিরে। উজ্জীবিত ফুটবলে শিরোপাপ্রত্যাশীদের হারিয়ে দিল এস্পানিওল। প্রতিপক্ষের আরসিডিই স্টেডিয়ামে রোববার স্থানীয় সময় বিকেলে ২-১ গোলে হেরে গেছে রিয়াল। রাউল দে তমাসের গোলে স্বাগতিকরা এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আলেইশ ভিদাল। করিম বেনজেমা একটি গোল শোধ করে আশা জাগালেও বাকি সময়ে আর তেমন কিছু করতে পারেনি তারা। স্পেনের সফলতম দলটির বিপক্ষে এর আগে ঘরের মাঠে ২০১৮ সালে জিতেছিল এস্পানিওল, ১-০ গোলে। বল দখলে পুরোটা সময় আধিপত্য করলেও আক্রমণে প্রথমার্ধে তেমন আশা জাগানিয়া কিছু করতে পারেনি রিয়াল। দ্বিতীয় গোল হজমের পর মরিয়া হয়ে ওঠে তারা। কিন্তু তা যথেষ্ট হয়নি। গোলের উদ্দেশ্যে তাদের ১৮ শটের চারটি ছিল লক্ষ্যে আর ভিয়ারিয়ালের আট শটের চারটিই লক্ষ্যে।
লিগে প্রথম ছয় রাউন্ডে পাঁচ জয় ও এক ড্রয়ে শীর্ষে ওঠা রিয়াল চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও শুভসূচনা করেছিল। কিন্তু এরপরই যেন পথ হারিয়ে ফেলেছে তারা। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়ের তিন দিন পর ঘরের মাঠেই শেরিফের বিপক্ষে হারে আনচেলত্তির দল। শেরিফের বিপক্ষে পরাজয় ছিল রিয়ালের এ মৌসুমে প্রথম। চার দিন পর লিগেও তেতো স্বাদ পেল তারা। হতাশাময় এক সপ্তাহ শেষে মাঠে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় রিয়াল। গোল খেয়ে বসে সপ্তদশ মিনিটে। প্রথম ১৫ মিনিটে দুটি সুযোগ অবশ্য পায় রিয়াল। প্রথমবার গোলরক্ষক বরাবর শট নেন বেনজেমা। পরেরবার ভিনিসিউস জুনিয়রের ব্যাকহিলে বল পেয়ে ফরাসি এই ফরোয়ার্ডের শট একজনের পায়ে লেগে আবারও চলে যায় গোলরক্ষকের হাতে। এরপরই দারুণ পাল্টা আক্রমণে এগিয়ে যায় এস্পানিওল। ডান দিক দিয়ে আদ্রি এমবার্বা আক্রমণে উঠে বাইলাইনের কাছ থেকে ছয় গজ বক্সে ক্রস বাড়ান আর ছুটে গিয়ে প্রথম ছোঁয়ায় বল জালে পাঠান স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড রাউল দে তমাস। গোল পেয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে প্রথম সাত রাউন্ডে মাত্র একটিতে জয়ী দলটি। প্রতিপক্ষের আক্রমণের জবাবে তারাও উঠতে থাকে পাল্টা আক্রমণে। তবে বিরতির আগে নিশ্চিত আর সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কেউ। দ্বিতীয়ার্ধেও একইভাবে অধিকাংশ সময় বল দখলে নিয়ে আক্রমণের চেষ্টা করতে থাকে রিয়াল; কিন্তু সুবিধা করতে পারছিল না তারা। ৫০তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের ক্রসে এদের মিলিতাওয়ের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৬০তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল হজম করলে হারের শঙ্কা জেগে ওঠে রিয়াল শিবিরে। সতীর্থের পাস ধরে দারুণ গতিতে এগিয়ে ডিফেন্ডার নাচো ফের্নান্দেসকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে জোরালো শটে কাছের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন আলেইশ ভিদাল। ১১ মিনিট পর দারুণ নৈপুণ্যে ব্যবধান কমান বেনজেমা। লুকা ইয়োভিচের পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সের লাইন ধরে আড়াআড়ি এগিয়ে প্রতিপক্ষের দুজনকে এড়িয়ে আরও দুজনের মধ্যে দিয়ে জোরালো শটে গোলটি করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। মৌসুমে এটি তার নবম গোল। ৮৬তম মিনিটে তার দারুণ পাস ধরে চমৎকার শটে বল জালে পাঠান এদেন আজার। কিন্তু বেনজেমা অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। দুর্দান্ত জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসে এস্পানিওল। হারলেও শীর্ষেই আছে রিয়াল। আট ম্যাচে পাঁচ জয় ও ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ১৭। আগের দিন বার্সেলোনাকে ২-০ গোলে হারানো আতলেতিকো মাদ্রিদ সমান পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। সাত ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে বার্সেলোনা। আর আট ম্যাচে মাত্র দ্বিতীয় জয় পাওয়া এস্পানিওল ৯ পয়েন্ট নিয়ে উঠে এসেছে ১২ নম্বরে।
পথহারা রিয়ালকে হারিয়ে দিল এস্পানিওল
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ