প্রযুক্তি ডেস্ক: সবজি চাষ থেকে শুরু করে গবেষণা ও নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ ছাপিয়ে এবার মহাকাশে বারবিকিউ করার পদ্ধতি বের করলেন চীনের তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনের নভোচারীরা।
প্রথমবারের মতো মাইক্রোগ্রাভিটি পরিবেশে মুরগির ডানা ও স্টেক সাফল্যের সঙ্গে গ্রিল করেছেন তারা। মহাকাশে বারবিকিউ সম্ভব হয়েছে নতুন ধরনের এক ওভেনের কারণে, যা কক্ষপথে ধোঁয়াহীন ও কোনো অবশিষ্টাংশ ছাড়াই তাদের রান্না করতে সাহায্য করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
এ সংশ্লিষ্ট এক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, নভোচারীরা মুরগির ডানাগুলো খাঁচার মতো আটকে তা একটি হ্যাচে বসিয়েছেন। এই হ্যাচের আকার প্রায় একটি এয়ার ফ্রায়ারের সমান।
চীনের নভোচারী গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপ প্রধান ডিজাইনার লিউ ওয়েইবো বলেছেন, এটি বিশ্বের প্রথম এমন ওভেন, যা বাস্তবিক অর্থেই মহাকাশ স্টেশনে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাপমাত্রা ১৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়িয়ে এখন সত্যিই কক্ষপথে রান্না করতে পারেন নভোচারীরা। আগের খাবার কেবলই গরম করার উপযোগী ছিল। তবে এটি আসল রান্না, যেখানে রসায়নিক বিক্রিয়াও ঘটেছে। এখন খাবারটি সোনালি রঙের ও মুচমুচে হয়ে বেরিয়ে এসেছে। রান্না করা মুরগির এসব ডানাকে ‘রং, সুগন্ধি ও স্বাদে একেবারেই নিখুঁত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন নভোচারী উ ফেই।
দীর্ঘমেয়াদী মহাকাশ অভিযানে নভোচারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার এক বিস্তৃত প্রচেষ্টারই অংশ এই রান্নার যন্ত্রটি। কারণ বর্তমানে কেবল ফ্রিজ-ড্রাই ও পুনরায় গরম করা খাবার খেয়ে জীবনধারণ করছেন নভোচারীরা। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএসে সব খাবার আগেই রান্না বা প্রক্রিয়াজাত থাকে। ফলে পানি দিয়ে এসব খাবারকে কেবল গরম করলেই তা খাবারের উপযোগী হয়ে ওঠে। পুনরায় সরবরাহ মিশনের সময় নভোচারীদের কাছে তাজা ফল ও সবজি পৌঁছে দেয় বিভিন্ন মহাকাশ সংস্থা। তবে সেগুলো যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য তা কয়েক দিনের মধ্যে খেতে হয়। চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলছে, লেটুস, টমেটো ও আলু চাষেরও উপযোগী চীনের মহাকাশ স্টেশন। এখন এগুলো সবই নতুন মহাকাশ ওভেনে রান্নার জন্য ব্যবহার করা যাবে।
চীনা নভোচারী গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের গবেষক শুয়ান ইয়ং বলেছেন, “আমরা ধোঁয়াহীন বেকিং সম্ভবের জন্য উচ্চ তাপমাত্রার ক্যাটালাইসিস ও বহু-স্তরের ফিল্ট্রেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছি। কক্ষপথের বিশেষ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আমরা নিশ্চিত করেছি, হট এয়ার ওভেন সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ। ওভেনের প্রতিটি অংশ নভোচারীরা ছুঁতে পারেন। কারণ তা ঠাণ্ডা থাকে ও পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
সানা/ওআ/আপ্র/০৭/১১/২০২৫


























