দিনাজপুর সংবাদাতা: দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে এক নবজাতককে রেখে গেছেন তার নানা-নানি। ভর্তি করার পর ওয়ার্ডে রেখে নবজাতকের মাকে আনতে যাচ্ছি বলে পালিয়ে যান তারা। শিশুটির বিছানার পাশে তার মায়ের লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।
অবিভাবকহীন এই শিশুকে দত্তক নিতে ডাক্তার ইঞ্জনিয়ার, নার্স, ব্যবসায়ী ও বিসিএস ক্যাডারসহ সন্তানহীন ২০০ জন হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন বলে জানা গেছে।
অপরদিকে শিশুটিকে দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন হাসাপাতালের শিশু ওয়ার্ডের নবজাতক ইউনিটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিশুটিকে ওয়ার্ডের বেড থেকে নেওয়া হয়েছে ডাক্তারদের রুমে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের নবজাতক ইউনিটে।
হানাপাতাল সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিশু ওয়ার্ডে এক নবজাতককে ভর্তি করেন নানা-নানি।
চিকিৎসক শিশুটিকে দেখতে গিয়ে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চান। ওই সময় শিশুর সঙ্গে থাকা এক দম্পতি জানায় তারা নানা-নানি, মা নিচে রয়েছেন। চিকিৎসক তাদেরকে শিশুটির মাকে নিয়ে আসতে বললে তারা শিশুটিকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। পরে আর ফিরে আসেননি।
বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগীর স্বজনরা শিশুটিকে দেখতে ভিড় জমায়। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করে শিশুটিকে ওয়ার্ডের ৫১৭ নম্বর ডাক্তার রুমে নেওয়া হয়। এ সময় শিশুটির পাশে রেখে যাওয়া একটি ব্যাগে চিরকুট ও কিছু ওষুধ পাওয়া যায়। এতে লেখা রয়েছে,‘আমি মুসলিম। আমি একজন হতভাগি পরিস্থিতির শিকার।
বাচ্চা রেখে গেলাম, দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন। বাচ্চার জন্ম তারিখ ০৪-১১-২০২৫, রোজ মঙ্গলবার, এগুলো সব বাচ্চার ওষুধ, আমি মুসলমান জাতির মেয়ে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. সানাউল্লাহ বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার সময় একটি নবজাতককে পঞ্চম তলায় শিশু ওয়ার্ডের নবজাতক ইউনিটের অতিরিক্ত ৩ নং বেডে ভর্তি করা হয়। এ সময় নবজাতক শিশুটির সঙ্গে দুইজন ছিলেন। পরিচয় জানতে চাইলে তারা জানায় তারা শিশুটির নানা-নানি। শিশুটির মা কথায় জানতে চাইলে তারা বলেন নিচে আছে। শিশুটির মাকে নিয়ে আসতে বললে তারা আনতে যাচ্ছি বলে আর আসেননি। বিষয়টি হাসাপাতালের পরিচালককে জানালে তিনি আমাদেরকে শিশুটির দেখাশোনা করার জন্য বলেন। পরে আমরা শিশুটির স্বাস্থ্যে কথা বিবেচনায় নিয়ে উৎসুক মানুষের ভিড় এড়াতে ডক্টরস্ রুমে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করি। শিশুটি সুস্থ আছে।
তিনি জানান, শিশুটির মা ও স্বজনদের অনুসন্ধান চলছে। অপরদিকে এই শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য কমপক্ষে ২০০ জন যোগাযোগ করেছেন। স্বজন পাওয়া না গেলে শিশুটিকে কার কাছে দত্তক দেওয়া হবে সে বিষয়ে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে যারা দত্তক নিতে চাইছেন, তাদের মধ্যে চিকিৎসক, নার্স, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন।
ওআ/আপ্র/০৭/১১/২০২৫






















