ঢাকা ০৮:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫

পাসপোর্ট নিয়ে ইতালি গেলো মুন্সিগঞ্জের পোষা বিড়াল

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৮:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫
  • ৪৭ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা: মুন্সীগঞ্জ থেকে প্রথমবারের মতো এক পোষা বিড়াল যাচ্ছে ইতালিতে। চার বছর ধরে পরিবারের সদস্যের মতো লালন করা ‘ক্যান্ডি’ নামের বিড়ালটিকে সঙ্গে নিতে খরচ প্রায় এক লাখ টাকা।

বিশেষ খাঁচা, বিমানের টিকিট, সরকারি অনুমতি, পাসপোর্ট, এমনকি ট্রানজিট বিমানবন্দরের অনুমতিও নিতে হয়েছে আলাদা করে। নানা ঝক্কি-ঝামেলা শেষে বিদেশযাত্রার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পরিবারটি।

বুধবার (৫ নভেম্বর) রাত সোয়া ৩টায় কাতার এয়ারলাইনসে বিড়ালটি উড়াল দিয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ শহরের মানিকপুরের রিক্তা বেগম ২০২১ সাল থেকে ক্যান্ডিকে লালন-পালন করছেন। তখন তার ছেলে শিথিল স্কুলে পড়ত। অনলাইনে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কেনা এই বিড়াল ছানাটিই এখন পরিবারের একজন সদস্যের মতো।

শিথিল এখন এইচএসসি পাস করেছেন। স্বামী আব্দুল হাইয়ের কর্মস্থল ইতালির রোমে পাড়ি জমাতে যাচ্ছেন তারা সবাই—তাই প্রিয় ক্যান্ডিকে ফেলে যাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হয়নি।

রিক্তা বেগম বলেন, আমরা যেভাবে ক্যান্ডিকে লালন করেছি, ও এখন আমাদের পরিবারের মতোই। বাইরে গেলে ও খাওয়া বন্ধ করে দেয়। তাই ওকে ছাড়া যাওয়া আমাদের জন্য অসম্ভব।

শিথিলও বেশ আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, ক্যান্ডি আমাদের পরিবারের আনন্দের উৎস। ও ছাড়া ঘরটা ফাঁকা মনে হয়। তাই ওকে সঙ্গেই নিচ্ছি।’

স্বামী আব্দুল হাই কয়েক মাস আগে ছুটি কাটাতে দেশে এসেও ক্যান্ডির মায়ায় মুগ্ধ হন। পরিবারের আবেগের কথা ভেবে তিনিও বিড়ালটিকে সঙ্গে নেওয়ার অনুমতি দেন।

সব নিয়ম মেনে প্রাণীটিকে বিমানে বহনের জন্য বিশেষ খাঁচায় নেওয়া হচ্ছে। বিমানভাড়া ৩৫০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। সঙ্গে পোষা প্রাণীর পাসপোর্ট, সরকারি ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি)’ এবং ট্রানজিট বিমানবন্দরের ক্লিয়ারেন্সসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় মোট খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা।

মুন্সীগঞ্জ টিটলার্ক পেটওয়েল সেন্টারের ভেটেরিনারি কনসালট্যান্ট অ্যান্ড সার্জন ডা. শিবেন চন্দ্র লিটন বলেন, বিদেশে প্রাণী নেওয়ার প্রক্রিয়ায় টিকা, স্বাস্থ্য সার্টিফিকেট, মাইক্রোচিপ স্থাপন—সব কিছু আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে হয়। ক্যান্ডির দেহে ইনজেকশনের মাধ্যমে একটি মাইক্রোচিপ বসানো হয়েছে, যাতে স্ক্যান করলেই তার ইউনিক নম্বর দেখা যায়।’

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এম এ জলিল বলেন, ‘আমাদের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মুন্সীগঞ্জ থেকে এবারই প্রথম কোনো পোষা বিড়াল বিদেশে যাচ্ছে। এটি প্রাণীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও মমত্ববোধের এক বিশেষ উদাহরণ।’

পেট পাসপোর্টে ক্যান্ডির ছবি, বয়স, জাত, ওজন, টিকা ও চিকিৎসা ইতিহাস সংযুক্ত করা হয়েছে। ডমেস্টিক মিক্সড জাতের ক্যান্ডির ওজন প্রায় ৬ কেজি। নিয়ম অনুযায়ী বিমানে হাতব্যাগের মতোই কেবিনে নেওয়া হয়েছে বিড়ালটিকে।

ওআ/আপ্র/০৬/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

পাসপোর্ট নিয়ে ইতালি গেলো মুন্সিগঞ্জের পোষা বিড়াল

আপডেট সময় : ০৮:৫৮:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫

মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা: মুন্সীগঞ্জ থেকে প্রথমবারের মতো এক পোষা বিড়াল যাচ্ছে ইতালিতে। চার বছর ধরে পরিবারের সদস্যের মতো লালন করা ‘ক্যান্ডি’ নামের বিড়ালটিকে সঙ্গে নিতে খরচ প্রায় এক লাখ টাকা।

বিশেষ খাঁচা, বিমানের টিকিট, সরকারি অনুমতি, পাসপোর্ট, এমনকি ট্রানজিট বিমানবন্দরের অনুমতিও নিতে হয়েছে আলাদা করে। নানা ঝক্কি-ঝামেলা শেষে বিদেশযাত্রার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পরিবারটি।

বুধবার (৫ নভেম্বর) রাত সোয়া ৩টায় কাতার এয়ারলাইনসে বিড়ালটি উড়াল দিয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ শহরের মানিকপুরের রিক্তা বেগম ২০২১ সাল থেকে ক্যান্ডিকে লালন-পালন করছেন। তখন তার ছেলে শিথিল স্কুলে পড়ত। অনলাইনে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কেনা এই বিড়াল ছানাটিই এখন পরিবারের একজন সদস্যের মতো।

শিথিল এখন এইচএসসি পাস করেছেন। স্বামী আব্দুল হাইয়ের কর্মস্থল ইতালির রোমে পাড়ি জমাতে যাচ্ছেন তারা সবাই—তাই প্রিয় ক্যান্ডিকে ফেলে যাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হয়নি।

রিক্তা বেগম বলেন, আমরা যেভাবে ক্যান্ডিকে লালন করেছি, ও এখন আমাদের পরিবারের মতোই। বাইরে গেলে ও খাওয়া বন্ধ করে দেয়। তাই ওকে ছাড়া যাওয়া আমাদের জন্য অসম্ভব।

শিথিলও বেশ আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, ক্যান্ডি আমাদের পরিবারের আনন্দের উৎস। ও ছাড়া ঘরটা ফাঁকা মনে হয়। তাই ওকে সঙ্গেই নিচ্ছি।’

স্বামী আব্দুল হাই কয়েক মাস আগে ছুটি কাটাতে দেশে এসেও ক্যান্ডির মায়ায় মুগ্ধ হন। পরিবারের আবেগের কথা ভেবে তিনিও বিড়ালটিকে সঙ্গে নেওয়ার অনুমতি দেন।

সব নিয়ম মেনে প্রাণীটিকে বিমানে বহনের জন্য বিশেষ খাঁচায় নেওয়া হচ্ছে। বিমানভাড়া ৩৫০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। সঙ্গে পোষা প্রাণীর পাসপোর্ট, সরকারি ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি)’ এবং ট্রানজিট বিমানবন্দরের ক্লিয়ারেন্সসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় মোট খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা।

মুন্সীগঞ্জ টিটলার্ক পেটওয়েল সেন্টারের ভেটেরিনারি কনসালট্যান্ট অ্যান্ড সার্জন ডা. শিবেন চন্দ্র লিটন বলেন, বিদেশে প্রাণী নেওয়ার প্রক্রিয়ায় টিকা, স্বাস্থ্য সার্টিফিকেট, মাইক্রোচিপ স্থাপন—সব কিছু আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে হয়। ক্যান্ডির দেহে ইনজেকশনের মাধ্যমে একটি মাইক্রোচিপ বসানো হয়েছে, যাতে স্ক্যান করলেই তার ইউনিক নম্বর দেখা যায়।’

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এম এ জলিল বলেন, ‘আমাদের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মুন্সীগঞ্জ থেকে এবারই প্রথম কোনো পোষা বিড়াল বিদেশে যাচ্ছে। এটি প্রাণীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও মমত্ববোধের এক বিশেষ উদাহরণ।’

পেট পাসপোর্টে ক্যান্ডির ছবি, বয়স, জাত, ওজন, টিকা ও চিকিৎসা ইতিহাস সংযুক্ত করা হয়েছে। ডমেস্টিক মিক্সড জাতের ক্যান্ডির ওজন প্রায় ৬ কেজি। নিয়ম অনুযায়ী বিমানে হাতব্যাগের মতোই কেবিনে নেওয়া হয়েছে বিড়ালটিকে।

ওআ/আপ্র/০৬/১১/২০২৫