আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবমকে জনসম্মুখে অশালীনভাবে স্পর্শ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনায় আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। বুধবার (৫ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট শেইনবম নিজে এ কথা বলেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
তিনি বলেন, আমি পদক্ষেপ না নিলে অন্য মেক্সিকান নারীদের ওপর তার কি প্রভাব হবে? তারা যদি দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেই এমনটা করার সাহস দেখাতে পারে, সাধারণ নারীদের সঙ্গে তারা কী করতে পারে?
আলোচ্য ঘটনাটি মঙ্গলবারের এক জনসভার। মুঠোফোনে ধারণকৃত এক ভিডিওতে দেখা যায়, মেক্সিকো সিটির ন্যাশনাল প্যালেসের কাছে সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন শেইনবম। ঠিক সেই সময় এক ব্যক্তি পেছন থেকে এগিয়ে এসে তার ঘাড়ে চুমু এবং বুকে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে। শেইনবাউম সঙ্গে সঙ্গে সরে যান এবং তার নিরাপত্তা দলের এক সদস্য এগিয়ে এসে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন।
ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানিয়ে শেইনবম বলেন, এটি কেবল আমার নয়, প্রতিটি সাধারণ মেক্সিকান নারীর এমন জঘন্য অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ছাত্রজীবনেও আমি এমন অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছি।
তিনি জানান, ওই ব্যক্তি ভিড়ের মধ্যে আরো কয়েকজন নারীকে হয়রানি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই একটি বার্তা দিতে আইনি পদক্ষেপ নিতেই হবে।
মেক্সিকোর নারী অধিকার সংগঠন ও নারীবাদী বিশ্লেষকেরা বলছেন, একজন প্রেসিডেন্টকে যৌন নির্যাতনচেষ্টার মধ্য দিয়ে দেশটির সমাজব্যবস্থায় গেঁথে যাওয়া পুরুষতন্ত্রের নগ্নতা প্রকাশ পেয়েছে। এবার এটা বিশ্ববাসীর কাছে প্রমাণিত হলো, পুরুষতান্ত্রিকতায় নাম না জানা এক গুরুত্বহীন ব্যক্তিও কেবল পুরুষ হয়ে জন্ম নেওয়ার কারণে একজন প্রেসিডেন্টকেও হেনস্থা করার দুঃসাহস দেখাতে পারে।
মেক্সিকোতে পুরুষতান্ত্রিকতার অন্যতম জঘন্যতম রূপ ফেমিসাইড (কেবল নারী হওয়ার কারণে হত্যা) এখনও এক ভয়াবহ সমস্যা। আনুমানিক ৯৮ শতাংশ ফেমিসাইডের অপরাধী সাজার আওতার বাইরে থেকে যায়।
নির্বাচনি প্রচারণার সময় নারী নিপীড়ন মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শেইনবম। কিন্তু তার প্রশাসনে এ ক্ষেত্রে তেমন উন্নতি দেখা যায়নি।
এসি/আপ্র/০৬/১১/২০২৫




















