বিনোদন ডেস্ক: সিনেমার খাতায় নাম লিখিয়ে যে সময়টা তানজিন তিশার সবচেয়ে ভালো যাওয়ার কথা, সে সময়ে তিনি মুখোমুখি হচ্ছেন নানান জটিলতার। জটিলতা বলাও হালকা হবে, কারণ তার বিরুদ্ধে উঠেছে শাড়ি প্রতারণার অভিযোগ!
বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১৮নম্বর কোর্টে ৪২০/৪০৬ ধারায় তানজিন তিশার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন এ্যাপোনিয়ার ফ্যাশনের এক্সিকিউটিভ মো: আমিনুল ইসলাম। সি. আর মামলা নম্বর ৯৬২/২০২৫।
মামলায় দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৬ ধারায় অপরাধ আমলে নিয়ে আসামীর প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ চাওয়া হলে ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালত তিশার বিরুদ্ধে মামলাটি আমলে নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি)কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ সম্পর্কে বাদী পক্ষের আইনজীবী বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট সলিমুল্লাহ সরকার গণমাধ্যমে বলেন, ‘তানজিন তিশার মতো তারকা একজন নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে যে ধরনের প্রতারণা করেছেন তা কাম্য নয়। উনি চাইলেই বিষয়টি সমাধান করতে পারতেন, কিন্তু সেটা না করে তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে মানহানিকর স্ট্যাটাস দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করেছেন। একজন নারী উদ্যোক্তাকে যেখানে ওনার পেট্রোনাইজ করার কথা, সেখানে তিনি করলেন প্রতারণা। এ জন্য তাকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আইনি নোটিশের কোনও জবাব তিনি দেননি। তাই আমার ময়াক্কেল তিশার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছেন।’
অনেকেই জানান, ‘এ্যাপোনিয়া’ নামের একটি অনলাইন ফ্যাশন পেজ থেকে ২৮ হাজার ৮শ টাকা মূল্যের একটি শাড়ি নিয়েছিলেন। কথা ছিলো শাড়িটির টাকা না দিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রমোশন করবেন নিজের ফেসবুক পেজে। কিন্তু সেটি তিশা করেননি, টাকাও দেননি। একপর্যায়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্যই প্রতারণার অভিযোগ এনেছিলেন ফ্যাশন পেজটির কর্ণধার এক নারী উদ্যোক্তা। ওই নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে তিশার ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও ভয়েস মেসেজে কথোপকথন পর্যালোচনা করে প্রতারণার সত্যতা পাওয়া গেছে। যা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে সম্প্রতি তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন তিশা।
বিষয়টি নিয়ে তিশা তার ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে দাবি করেছিলেন, ওই শাড়িটি নাকি উপহার দিয়েছেন নারী উদ্যোক্তা।
এরপর প্রতারণা, মানহানিকর কথা ও ছলচাতুরীর অভিযোগ এনে এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে তানজিন তিশা (তানজিন নাহার তিশা)কে আইনি নোটিশ দিয়েছিলেন ‘এ্যাপোনিয়া’ অনলাইন ফ্যাশন পেজ-এর কর্ণধার ঝিনুকের হয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সলিমুল্লাহ সরকার। গত ২২ অক্টোবর তানজিন তিশার বাসায় ঠিকানায় ডাকযোগে এবং তিশার হোয়াটসঅ্যাপে আইনি নোটিশটি পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছিলেন এ্যাপোনিয়া কর্তৃপক্ষ।
আইনি নোটিসে এক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি ওই নারী উদ্যোক্তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যাচার করার জন্য ক্ষমা চাইতে বলা হয় তিশাকে। কিন্তু আইনি নোটিসে বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও বিষয়টি নিয়ে কোনও সমাধানে যাননি তিশা। উল্টো বলেছেন, ‘গিফট নিয়ে হয়ে গেলাম প্রতারক।’
এ্যাপোনিয়া অনলাইন ফ্যাশনের কর্ণধার ঝিনুক গণমাধ্যমে বলেন, ‘যে কোনও পেশাতেই একটা অ্যাথিক্স থাকে। সেই অনুযায়ী কাজ না করলে পেশার সম্মান থাকে না। শিল্পীরা তো পানির মতো সহজ সরল হওয়ার কথা। তারা মানুষের জন্যই কাজ করেন। তাদেরকে মানুষ ফলো করেন। কিন্তু শিল্পী যদি এভাবে প্রতারণা করেন, মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ করেন সেটা আসলে দুঃখজনক। যেহেতু বিষয়টি মামলায় গড়িয়েছে। আমি আইনের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। আমার বিশ্বাস ন্যায় বিচার পাবো।’
মূলত সেই সূত্র ধরেই এবার প্রতারণার মামলার আসামী হলেন তিশা। যিনি এখন দুরন্ত সময় পার করছিলেন শাকিব খানের ‘সোলজার’ ইউনিটে। এটি মুক্তি দিয়েই তার সিনেমার খাতায় নাম লেখানোর কথা, যদিও তার আগেই লেখালেন আসামীর খাতায়!
ওআ/আপ্র/০৫/১১/২০২৫

























